Goa Nightclub Fire

আগুনে আটকে পড়েন বোন, বাঁচাতে গিয়ে ঝলসে গেলেন দুই দিদিও! প্রথম বার গোয়ায় গিয়ে মৃত পরিবারের চার জন

দিল্লির করওয়াল নগর এলাকার বাসিন্দা চার বোন অনিতা, কমলা, সরোজ এবং ভাবনা। প্রত্যেকেই বিবাহিত। পরিবারের সঙ্গে হইহই করতে করতে তাঁরা গোয়া গিয়েছিলেন। তিন বোনের ফেরা হল না।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫ ১০:৪০
গোয়ার নৈশক্লাবে আগুন নেবানোর চেষ্টায় এক দমকলকর্মী।

গোয়ার নৈশক্লাবে আগুন নেবানোর চেষ্টায় এক দমকলকর্মী। ছবি: পিটিআই।

প্রথম বার গোয়ায় বেড়াতে গিয়েছিলেন তাঁরা। সমুদ্রসৈকতের সৌন্দর্য উপভোগ করে রাতে ঢুকেছিলেন নৈশক্লাবে। সেখান থেকে রাতের খাওয়াদাওয়া সেরে হোটেলে ফেরার কথা ছিল। কিন্তু ফেরা হল না। নৈশক্লাবের আগুনে আটকে পড়া বোনকে বাঁচাতে গিয়ে মৃত্যু হল দুই দিদিরও। গোয়ার অগ্নিকাণ্ডে চার জনকে হারিয়ে দিশাহারা দিল্লির পরিবার।

Advertisement

দিল্লির করওয়াল নগর এলাকার বাসিন্দা চার বোন অনিতা, কমলা, সরোজ এবং ভাবনা। প্রত্যেকেই বিবাহিত। পরিবারের সঙ্গে হইহই করতে করতে তাঁরা গোয়া গিয়েছিলেন কিছু দিন আগেই। এটাই ছিল তাঁদের প্রথম গোয়া সফর। ঘটনার দিন রাতে নৈশক্লাবে তাঁরা পাঁচ জন ছিলেন। চার বোনের সঙ্গে ছিলেন ভাবনার স্বামী বিনোদ কুমারও। অগ্নিকাণ্ডে তাঁরও মৃত্যু হয়েছে।

পরিবার সূত্রে খবর, গোয়ার নৈশক্লাবে যে সময়ে আগুন লাগে, তখন তাঁদের খাওয়াদাওয়া হয়ে গিয়েছিল। তাঁরা বেরোনোর তোড়জোড় করছিলেন। আগুন লেগেছে শুনে সকলেই বেকিয়ে আসেন কিন্তু ভিতরে আটকে পড়়েন এক বোন। তাঁকে বাঁচাতে দিদিরাও ছুটে যান। একমাত্র ভাবনা বেরিয়ে আসতে পেরেছিলেন আবার। বাকি চার জনের কেউ আর বেরোতে পারেননি। অনিতা এবং কমলার দেহ শনাক্ত করা গিয়েছে। ময়নাতদন্তের পর তা পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে। কিন্তু বিনোদ এবং সরোজের দেহ এতটাই ঝলসে যায় যে, তা শনাক্ত করাও কঠিন হয়ে পড়ে।

অনিতাদের এক প্রতিবেশী বলেন, ‘‘প্রথম বার গোয়া যাচ্ছে, ওরা সকলে খুব উত্তেজিত ছিল। খুব আনন্দ করছিল একসঙ্গে। গত সপ্তাহে মনে হয় রওনা দিয়েছিল। তখন কে জানত, এমন একটা ঘটনা ঘটবে!’’ চার বোনের মা রয়েছেন দিল্লির বাড়িতে। তিনি বৃদ্ধা এবং অসুস্থ। তাঁকে এই খবর দেওয়া হয়নি। ঘটনায় গোটা পরিবার বিধ্বস্ত। প্রতিবেশীর সঙ্গে কথা হয়েছে একমাত্র জীবিত বোন ভাবনার। তিনি ঘটনাস্থলের বর্ণনাও দিয়েছেন। ওই প্রতিবেশীর কথায়, ‘‘ভাবনা বলছিল, ক্লাবের ভিতরে দমবন্ধকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। সকলে হুড়োহুড়ি, ধাক্কাধাক্কি করছিলেন। অনেকে রান্নাঘরে আটকে পড়েছিলেন। ভাবনাকে কেউ পিছন থেকে জোরে ধাক্কা দেয়, তাই ও বেরিয়ে আসতে পেরেছিল। আর কেউ বেরোতে পারেনি।’’

গোয়ার নৈশক্লাবে সিলিন্ডার ফেটে আগুন লেগেছিল শনিবার মধ্যরাতের পরে। মোট ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ২০ জনই ছিলেন ক্লাবের কর্মী। মৃতদের অধিকাংশ রান্নাঘরে আটকে পড়েছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। রবিবারই এই ঘটনায় চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। সোমবার ক্লাবের এক ম্যানেজারকেও গ্রেফতার করেছে গোয়ার পুলিশ।

Advertisement
আরও পড়ুন