ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। — ফাইল চিত্র।
নভেম্বর ভারতের রফতানি এক লাফে প্রায় ১৯.৩৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। গত মাসে দিল্লি থেকে ৩৮১৩ কোটি ডলারের (ভারতীয় মুদ্রায় ৩ লক্ষ ৪৫ হাজার ৯০০ কোটি টাকার) পণ্য বিদেশে রফতানি হয়েছে। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপিয়ে রেখেছেন। তবে ট্রাম্পের ওই শুল্ক কোপের পরেও রফতানি উল্লেখযোগ্য ভাবে বৃদ্ধি করল নয়াদিল্লি।
বৈদেশিক বাণিজ্যের পাশাপাশি আমেরিকাতেও রফতানি বৃদ্ধি করেছে ভারত। অক্টোবরের তুলনায় নভেম্বরে ভারত থেকে আমেরিকায় মার্চেন্ডাইস পণ্যের রফতানি প্রায় ১০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। গত মাসে ভারত থেকে আমেরিকায় ৬৯০ কোটি ডলারের (ভারতীয় মুদ্রায় ৬২ হাজার ৭৯০ কোটি টাকার) পণ্য রফতানি হয়েছে। ট্রাম্পের শুল্ক কোপের প্রেক্ষিতে এই পরিসংখ্যান যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। কেন্দ্রীয় বাণিজ্যসচিব রাজেশ আগরওয়ালের কথায়, “শুল্ক চাপার পরেও আমেরিকায় রফতানির ক্ষেত্রে ভারত নিজের দুর্গ ধরে রেখেছে।”
বস্তুত, ভারত এবং আমেরিকার মধ্যে বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে দফায় দফায় আলোচনা হয়েছে। এখনও চলছে। তবে সমাধানসূত্র এখনও বেরিয়ে আসেনি। এরই মধ্যে ভারতের উপরে প্রথমে ২৫ শতাংশ এবং তার পরে রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্কের জন্য ‘জরিমানা’ বাবদ আরও ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপান ট্রাম্প। সোমবার দিল্লির বৈদেশিক বাণিজ্যের পরিসংখ্যান তুলে ধরার সময়ে দু’দেশের বাণিজ্যচুক্তি নিয়েও মন্তব্য করেন রাজেশ। ভারত এবং আমেরিকার চুক্তির ‘কাঠামো’ চূড়ান্ত করার দোরগোড়ায় পৌঁছে গিয়েছে বলে জানান তিনি। তবে কোনও নির্দিষ্ট সময়সীমার কথা উল্লেখ করেননি বাণিজ্যসচিব। রাজেশ বলেন, “আশা করা যাচ্ছে দু’দেশই পারস্পরিক শুল্ক কমানোর জন্য একটি চুক্তিতে রাজি হবে। আমরা আমেরিকার সঙ্গে ইতিবাচক আলোচনা চালাচ্ছি, যাতে দ্রুত এটি সম্পন্ন করা যায়।”
গত মাসে ভারতের রফতানি যেমন বৃদ্ধি পেয়েছে, একই সঙ্গে কমেছে আমদানিও। ফলে কমেছে দেশের বাণিজ্য ঘাটতিও। কোনও দেশের রফতানির তুলনায় আমদানি বেশি হলে, সেই ব্যবধানকে বাণিজ্য ঘাটতি বলা হয়। কেন্দ্র জানিয়েছে, নভেম্বরে দেশের আমদানি ১.৮৮ শতাংশ কমেছে। এর ফলে দেশের বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ কমে হয়েছে ২৪৫৩ কোটি ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় ২ লক্ষ ২২ হাজার ৫৭৯ কোটি টাকা)। গত পাঁচ মাসের মধ্যে এটিই সর্বনিম্ন বাণিজ্য ঘাটতি।