Delhi Blast Red Fort

ধাবায় রাত কাটিয়ে মসজিদের সামনে বিশ্রাম, ‘শান্ত’ দেখাচ্ছিল উমরকে, ৫০টি সিসিটি‌ভি ঘেঁটে ঘাতক গাড়ির যাত্রা পুনর্নির্মাণ

রবিবার রাতে ফরিদাবাদে প্রথম দেখা গিয়েছিল ঘাতক গাড়িটিকে। গাড়ি চালাচ্ছিলেন উমর। মাত্র দু’সপ্তাহ আগে ওই গাড়ি কেনা হয়েছিল। ৫০টি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ঘেঁটে ওই গাড়ির গতিবিধির নকশা আঁকা হয়েছে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০২৫ ২১:৫৫
সোমবার রাতে এই গাড়িটিতেই বিস্ফোরণ হয়। তার আগে একটি সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায় চালককে। ছবি: সংগৃহীত।

সোমবার রাতে এই গাড়িটিতেই বিস্ফোরণ হয়। তার আগে একটি সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায় চালককে। ছবি: সংগৃহীত।

৫০টি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ঘেঁটে লালকেল্লার সামনে বিস্ফোরণে উড়়ে যাওয়া সেই সাদা হুন্ডাই আই২০ গাড়ির যাত্রাপথ পুনর্নির্মাণ করলেন তদন্তকারীরা। আগের দিন রাত থেকে পরের দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত ওই গাড়ি কোথায় কোথায় গিয়েছিল, কী কী করেছিল, খতিয়ে দেখা হয়েছে। সূত্রের খবর, ফুটেজে ‘শান্ত’ দেখাচ্ছিল চালক উমর নবিকে। হরিয়ানার ফরিদাবাদ থেকে তিনি গাড়িটি দিল্লিতে নিয়ে এসেছিলেন। একটি ধাবার সামনে গাড়িতেই রাত কাটান। একাধিক বার মসজিদের সামনে দাঁড়ান এবং প্রার্থনা করেন।

Advertisement

উমর পেশায় চিকিৎসক ছিলেন। ফরিদাবাদের আল ফালাহ্‌ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। দিল্লির বিস্ফোরণকাণ্ডে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম উঠে এসেছে বার বার। ধৃত একাধিক সন্দেহভাজনের সঙ্গে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগ রয়েছে।

রবিবার রাতে ফরিদাবাদে প্রথম দেখা গিয়েছিল ঘাতক গাড়িটিকে। গাড়ি চালাচ্ছিলেন উমর। মাত্র দু’সপ্তাহ আগে ওই গাড়ি কেনা হয়েছিল। এর পর দিল্লি-মুম্বই এক্সপ্রেসওয়ের উপর গাড়িটিকে ফের দেখা গিয়েছে। এখানে পর পর দু’বার দাঁড়িয়েছিলেন উমর। প্রথম বার রাস্তার ধারের একটি ধাবার সামনে গাড়ি দাঁড় করান এবং খাবার খান। তার পর এক বার ফিরোজ়পুর জিরকা মসজিদে যান তিনি। পরে আরও একটি খাবারের দোকানের সামনে ওই গাড়ি দাঁড় করানো হয়েছিল। সেখানেই গাড়ির ভিতর উমর রাত কাটান। ছিলেন চালকের আসনে।

সোমবার সকাল ৮টা ১৩ মিনিটে দিল্লির বদরপুর টোল প্লাজ়া পেরোয় উমরের গাড়ি। এর পর আঁকাবাঁকা পথে শহরময় ঘুরে বেড়ান উমর। একাধিক সিসিটিভি ফুটেজে তাঁকে দেখা গিয়েছে। কখনও কখনও দেখে চিন্তিতও মনে হয়েছে। ওখলা, কনট প্লেস হয়ে পূর্ব দিল্লি থেকে মধ্য দিল্লিতে চলে গিয়েছিলেন তিনি। পরে উত্তর-পশ্চিম দিল্লির অশোক বিহারেও তাঁকে দেখা যায়। বেলার দিকে সেখানেই একটি দোকানে খাবার খান। পিটিআই জানিয়েছে, এই সময় তাঁকে একেবারে শান্ত দেখাচ্ছিল। কোনও তাড়া ছিল না। চোখেমুখে ছিল না কোনও ভয়ের ছাপ।

১টা নাগাদ উমর গাড়ি নিয়ে মধ্য দিল্লির দিকে এগিয়ে যান। আসফ আলি রোডের একটি মসজিদের সামনে আবার কিছু ক্ষণ দাঁড়িয়েছিলেন। এই পার্কিং এলাকায় তিন ঘণ্টা অপেক্ষা করে উমরের গাড়ি। এই সময় তিনি বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। মাঝেমধ্যে ফোন দেখছিলেন। মোবাইলের কল রেকর্ডিং খতিয়ে দেখছে পুলিশ। বিকেল ৩টে ১৯ মিনিটে লালকেল্লার সামনে সুনেহরি মসজিদের পার্কিংয়ে ঢোকে উমরের গাড়ি। এখানে আরও তিন ঘণ্টা গাড়িটি দাঁড়িয়েছিল। গাড়ির কাছাকাছি কাউকে যেতে বা আসতে দেখা যায়নি।

সন্ধ্যা ৬টা ২২ মিনিটে গাড়ি নিয়ে লালকেল্লা মেট্রো স্টেশনের দিকে এগিয়ে যান উমর। আরও আধঘণ্টা পরে ব্যস্ত রাস্তায় গাড়িতে বিস্ফোরণ ঘটে। দিল্লির এই ঘটনায় মোট ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। আরও কয়েক জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এই ঘটনাকে সন্ত্রাসবাদী হামলা বলে উল্লেখ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। অবিলম্বে দোষীদের চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে, আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

Advertisement
আরও পড়ুন