Domestic Violence

কর্নাটকের রাজ্যপালের পরিবারে গার্হস্থ্য হিংসা! পণের জন্য মার, খুনের চেষ্টার অভিযোগ, পুলিশের দ্বারস্থ সাংবিধানিক প্রধানের নাতবৌ

২০১৮ সালে দেবেন্দ্রের সঙ্গে বিয়ে হয় দিব্যার। মুখ্যমন্ত্রীর ‘কন্যাদান যোজনা’য় বিয়ে হয়ছিল তাঁদের। সেই অনুষ্ঠানে ছিলেন তৎকালীন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী থাবরচন্দ, লোকসভার প্রাক্তন স্পিকার সুমিত্রা মহাজন।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৫:৩৮
কর্নাটকের রাজ্যপাল থাবরচন্দ গহলৌতের (ছবির সামনের দিকে) নাতি ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে গার্হস্থ্য হিংসার অভিযোগ নাতবৌয়ের।

কর্নাটকের রাজ্যপাল থাবরচন্দ গহলৌতের (ছবির সামনের দিকে) নাতি ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে গার্হস্থ্য হিংসার অভিযোগ নাতবৌয়ের। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

এ বার খোদ রাজ্যপালের ঘরেই গার্হস্থ্য হিংসার অভিযোগ উঠল। আর অভিযোগ তুললেন রাজ্যপালের নাতবৌ। কর্নাটকের রাজ্যপাল তথা থাবরচন্দ গহলৌতের পরিবারে গার্হস্থ্য হিংসার ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই জোর আলোচনা শুরু হয়েছে। থাবরচন্দের নাতি দেবেন্দ্র গহলৌতের স্ত্রী তথা কর্নাটকের রাজ্যপালের নাতবৌ দিব্যা গহলৌত তাঁর শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে মানসিক, শারীরিক নির্যাতন, হেনস্থা, খুনের চেষ্টা এবং তাঁর শিশুকন্যাকে অপহরণের অভিযোগ তুলে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন।

Advertisement

মধ্যপ্রদেশের উজ্জয়িনী জেলায় থাকেন থাবরচন্দের নাতি দেবেন্দ্র। অশান্তির পরেই রতলামে বাপের বাড়ি চলে গিয়েছেন দিব্যা। সেখানেই রয়েছেন তিনি। রতলামের পুলিশ সুপার অমিত কুমারের কাছে শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে গার্হস্থ্য হিংসার অভিযোগ জানিয়েছেন দিব্যা। পুলিশ সুপারের কাছে দিব্যা আর্জি জানিয়েছেন, তাঁর চার বছরের কন্যাকে জোর করে উজ্জয়িনীতে নিজেদের কাছে রেখে দিয়েছেন শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। সন্তানকে তাঁর কাছে ফিরিয়ে দিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের আর্জি জানিয়েছেন দিব্যা। স্বামী দেবেন্দ্র, শ্বশুর জিতেন্দ্র (প্রাক্তন বিধায়ক), দেওর বিশাল, দেবেন্দ্র ঠাকুরমা অনিতার বিরুদ্ধে পণের জন্য মানসিক এবং শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ তুলেছেন তিনি। ৫০ লক্ষ টাকা পণ চেয়ে নানা ভাবে নির্যাতন করা হচ্ছিল বলে অভিযোগ দিব্যার।

২০১৮ সালে ২৯ এপ্রিল দেবেন্দ্রের সঙ্গে বিয়ে হয় দিব্যার। মুখ্যমন্ত্রীর ‘কন্যাদান যোজনা’য় বিয়ে হয়ছিল তাঁদের। সেই অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন তৎকালীন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা কর্নাটকের রাজ্যপাল থাবরচন্দ এবং লোকসভার প্রাক্তন স্পিকার সুমিত্রা মহাজন। দিব্যার অভিযোগ, তাঁর স্বামী মাদকাসক্ত। নারীর প্রতি আসক্তি রয়েছে। বিয়ের পর এই সমস্ত কিছু তিনি জানতে পারেন। শুধু তা-ই নয়, দেবেন্দ্রের একাধিক নারীর সঙ্গে সম্পর্কেরও অভিযোগ তুলেছেন দিব্যা। বিয়ের পর থেকেই পণের জন্য স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির লোকেরা তাঁর উপর অত্যাচার শুরু করেন বলে দাবি দিব্যার। আরও অভিযোগ, ২০২১ সালে অন্তঃসত্ত্বা থাকাকালীনও তাঁকে ঠিকমতো খেতে দেওয়া হত না। প্রতি দিন মারধর করা হত। সন্তান জন্মানোর পরেও অত্যাচার থামেনি।

অভিযোগপত্রে দিব্যা জানিয়েছেন, গত ২৬ জানুয়ারি মত্ত অবস্থায় বাড়ি ফেরেন দেবেন্দ্র। তার পর শুধু হয় মারধর। দিব্যা বলেন, ‘‘আমাকে মারধর করতে করতে দেবেন্দ্র বলেছিল, টাকা যদি আনতে না পারো, তা হলে তুমি আর বেঁচে থাকবে না।’’ দিব্যার দাবি, তাঁকে ছাদ থেকে ঠেলে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। সেই ঘটনায় তিনি মেরুদণ্ড, কাঁধ, কোমরে গুরুতর চোট পান। তার পরেও তাঁর চিকিৎসার কোনও ব্যবস্থা করা হয়নি। পরে তাঁকে একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ঠিকই, কিন্তু অবস্থার অবনতি হওয়ায় ইনদওরের একটি বড় হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।

দিব্যার অভিযোগ, স্কুল থেকে মেয়েকে তুলে নিয়ে গিয়েছেন শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। গত নভেম্বরে মেয়েকে স্কুলে আনতে গিয়েছিলে তিনি। তখন তাঁর স্বামী বলেন, ‘‘পণের টাকা না আনলে মেয়েকে পাবে না। আমাদের কাছেই থাকবে।’’ রতলাম পুলিশ দিব্যার অভিযোগপত্র গ্রহণ করেছে। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছে। যদিও মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন বিধায়ক তথা দিব্যার শ্বশুর জিতেন্দ্র গহলৌত দাবি করেছেন, ‘‘অভিযোগ তুলতেই পারে। কিন্তু এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। আসল ঘটনা সংবাদমাধ্যমের কাছে তুলে ধরব।’’

প্রসঙ্গত, ২০২১ সালে কর্নাটকের রাজ্যপাল হন থাবরচন্দ। ২০১৪ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত তিনি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ছিলেন। শুধু তা-ই নয়, দ্বিতীয় মোদী সরকারের মন্ত্রিসভার সদস্যও ছিলেন তিনি। ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০৯ পর্যন্ত মধ্যপ্রদেশের শাজাপুর লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ ছিলেন। রাজ্যসভার সাংসদও হন থাবরচন্দ।

Advertisement
আরও পড়ুন