শিলংয়ে বিধানচন্দ্র রায়ের সেই বাড়ি। —ফাইল চিত্র।
শিলংয়ে বিধানচন্দ্র রায়ের বাড়ি ভাঙার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া জনস্বার্থ মামলার জেরে মেঘালয় হাই কোর্ট রাজ্যের ঐতিহ্যশালী বিভিন্ন ভবন, নিদর্শন, স্থাপত্য এবং মেঘালয় হেরিটেজ আইনের ৩ নম্বর ধারার অধীনে থাকা সব ঐতিহ্যক্ষেত্রের বিষয়ে বিশদ রিপোর্ট দাখিল করার নির্দেশ দিয়েছে। পাশাপাশি এগুলি সংরক্ষণ ও পুনরুদ্ধারের জন্য করা পদক্ষেপের বিবরণও জমা দিতে বলা হয়েছে।
বিধানচন্দ্র রায়ের বাড়ি বর্তমানে সার্কিট হাউস। সেটি ভেঙে নতুন বহুতল সার্কিট হাউস তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সরকার। তার বিরুদ্ধেই প্রধান বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি এইচ এস থাংখিউয়ের বেঞ্চে মালবিকা বিশারদের দায়ের করা আবেদনের শুনানি চলছে। আদালত মন্তব্য করে, “প্রতিটি সভ্যতা তার সংস্কৃতির জন্য পরিচিত- যা সবচেয়ে ভালোভাবে বোঝা যায় তাদের সৃষ্টি, ভবন, স্থাপত্য, নিদর্শন ইত্যাদির মাধ্যমে। তাই সেগুলি সংরক্ষণ করা অপরিহার্য।”
তাই এমন সব স্থাপত্যের পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণ বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিধানচন্দ্র রায়ের বাড়ি নিয়ে বেঞ্চের মত, সংশ্লিষ্ট ভবনটি প্রথম দর্শনেই ঐতিহাসিক গুরুত্বসম্পন্ন বলে মনে হয়। তাই রাজ্য হেরিটেজ কমিটিকে ওই বাড়ির ঐতিহ্যগত গুরুত্ব যাচাই করার নির্দেশ দেন বিচারপতিরা। অ্যাডভোকেট জেনারেল অমিত কুমার জানান, বাড়িটির ইতিহাস, কী ভাবে তা সার্কিট হাউস হল এবং বাড়ির বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করে হলফনামা দিতে সময় প্রয়োজন। আদালত রাজ্যকে হলফনামা দাখিলের জন্য আগামী বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় দিয়েছে। ততদিন বজায় থাকবে স্থিতাবস্থা।
মালবিকা বিচারপতিদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “আধুনিক শিলংয়ের অন্যতম রূপকার বিধান রায়ের তৈরি ওই বাড়ির পরতে পরতে ইতিহাস। এমনকি রবীন্দ্রনাথের জন্মদিনও পালন হয়েছিল সেখানে। ওই বাড়িতে ছিলেন নেতাজি। তাই বিধান ভবন বাঁচাতে রাজ্যপালকে স্মারকপত্র দেওয়ার পাশাপাশি, বিচারপতি সৌমেন সেনের হাতে অভিযোগপত্র তুলে দিয়েছিলাম।”