CPI Maoist

নিহত ১৮৬১, ধৃত ১৬৩৩৬, আত্মসমর্পণকারী ৯৫৮৮, এক দশকে মাওবাদী দমনে সাফল্যের খতিয়ান দিল শাহের মন্ত্রক

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তথ্য বলছে, এখন শুধু ছত্তীসগঢ়ের বস্তার ডিভিশনের তিনটি জেলা— সুকমা, বিজাপুর এবং নারায়ণপুরই ‘অতি উপদ্রুত’। মোট মাওবাদী প্রভাবিত জেলার সংখ্যা ১১।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৭:০০
MHA says, 1841 Maoists killed, 16336 arrested and 9588 surrendered in last decade

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

গত ১০ বছরে যৌথবাহিনীর অভিযানে মোট ১৮৬১ জন মাওবাদী নেতা-কর্মী নিহত হয়েছেন। গ্রেফতার করা হয়েছে ১৬৩৩৬-এর বেশি মাওবাদীকে। কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং বিভিন্ন রাজ্যের পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন ৯৫৮৮ জন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে প্রকাশিত পরিসংখ্যানে শুক্রবার এই দাবি করা হয়েছে।

Advertisement

আগামী বছরের ৩১ মার্চের মধ্যে নিষিদ্ধ সংগঠন সিপিআই (মাওবাদী)-কে নির্মূল করার ঘোষণা করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তাঁর পরেও ওড়িশার কন্ধমলে মাওবাদী কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য গণেশ উইকে নিরাপত্তাবাহিনীর অভিযানে নিহত হয়েছেন। ছত্তীসগঢ়, অন্ধ্রপ্রদেশ, ওড়িশায় সংগঠনের সশস্ত্র শাখা পিএলজিএ (পিপলস লিবারেশন গেরিলা আর্মি)-র বেশ কয়েক জন যোদ্ধার মৃত্যু হয়েছে সংঘর্ষে। মাওবাদী দমন অভিযানে গত এক দশকে সাফল্যের শীর্ষে রয়েছে ২০২৫। এ বছর মোট ৩৩৫ জন মাওবাদী নেতা-কর্মী নিহত হয়েছেন। আত্মসমর্পণ করেছেন ২১৬৭ জন। যা সর্বকালীন রেকর্ড।

চলতি মাসের গোড়ায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই সংসদে জানিয়েছিলেন, এখন শুধু ছত্তীসগঢ়ের বস্তার ডিভিশনের তিনটি জেলা— সুকমা, বিজাপুর এবং নারায়ণপুরই ‘অতি উপদ্রুত’। মোট মাওবাদী প্রভাবিত জেলার সংখ্যা ১১। তিনি বলেছিলেন, ‘‘সশস্ত্র নকশালপন্থা উপদ্রুত জেলার সংখ্যা ২০১৮ সালের এপ্রিলে ১২৬টি ছিল, যা ২০২১ সালের জুলাই মাসে ৯০টি, ২০২৪ সালের এপ্রিলে ৭০টি, ২০২৫ সালের এপ্রিলে ৩৮টি এবং ২০২৫ সালের অক্টোবরে আরও ১১টিতে নেমে এসেছে।’’ মোট ২৭টি জেলা নিরাপত্তা নজরদারির তালিকায় রয়েছে জানিয়ে তাঁর ঘোষণা, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সফল নির্দেশনায়, বামপন্থী চরমপন্থা ২০২৬ সালের মার্চের মধ্যে নির্মূল করা হবে।’’

চলতি বছরে মাওবাদী সাধারণ সম্পাদক নাম্বালা কেশব রাও ওরফে বাসবরাজু ওরফে গগন্না, পলিটব্যুরো সদস্য রামচন্দ্র রেড্ডি ওরফে চলপতি, তাঁর স্ত্রী রবি ভেঙ্কাটা লক্ষ্মী চৈতন্য ওরফে অরুণা, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নরসিংহচলম ওরফে সুধাকর, টেক শঙ্কর, মাওবাদী গেরিলা বাহিনী পিএলজিএ-র প্রধান মাধবী হিডমার মতো শীর্ষ নেতা-নেত্রীরা বস্তারের জঙ্গলে নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের একটি সূত্র জানিয়েছে গত এক বছরের ধারাবাহিক অভিযানের জেরে ‘রেড করিডরে’ সক্রিয় মাওবাদীর সংখ্যা শ’দুয়েকে নেমে এসেছে। প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক মুপ্পালা লক্ষ্মণ রাও ওরফে গণপতি ছাড়া কেন্দ্রীয় কমিটির যে সদস্যরা রয়ে গিয়েছেন, তাঁরা হলেন, পি নরহরি ওরফে বিশ্বনাথ, এম দেব ওরফে রামদার, মিসির বেসরা, অনলদা, মাজ্জিদেব। সংগঠনের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক থিপরি তিরুপতি বা দেবজি এবং পিএলজিএ প্রধান বি দেবাও রয়েছেন এই তালিকায়।

২০২৪ সালের পর থেকে মাওবাদী হামলার ঘটনা ৮১ শতাংশ কমেছে দাবি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের রিপোর্ট জানাচ্ছে, ২০০৪ থেকে ২০১৪ (সেই বছরের মে পর্যন্ত) মাওবাদী হামলায় ৬৫০৮ জন নিহত হয়েছিলেন। যাঁদের মধ্যে ৪৬৮৪ জন অসামরিক নাগরিক এবং ১৮২৪ জন নিরাপত্তা কর্মী। পরবর্তী দশকে, ২০১৫ থেকে চলতি বছরের মে পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা ৭১ শতাংশ কমে ১৮৬৮ জনে দাঁড়িয়েছে। যার মধ্যে ১৪০৪ জন সাধারণ নাগরিক এবং ৪৬৪ জন নিরাপত্তা কর্মী। এই বছরের মে থেকে নভেম্বরের মধ্যে ৪৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। ২০১৪-র মে মাস থেকে থেকে ২০২৫-এর ১ ডিসেম্বরের মধ্যে, নিরাপত্তা বাহিনী সারা দেশে বামপন্থী উগ্রপন্থী ক্যাডারদের বিরুদ্ধে মোট ২৭৭৬৫টি অভিযান চালিয়েছে বলেও নর্থ ব্লকের রিপোর্ট জানাচ্ছে।

Advertisement
আরও পড়ুন