Mumbai Rain Update

বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত মুম্বই, বুধেও ভারী বর্ষণের সতর্কতা, ব্যাহত ট্রেন পরিষেবা! মনোরেলে আটকে পড়া ৮০০ যাত্রী উদ্ধার

শুধু মুম্বই নয়, অতিবর্ষণের কারণে মহারাষ্ট্রের অন্যান্য জেলাতেও বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। কোঙ্কন, মরাঠাওয়াড়া এবং পশ্চিম মহারাষ্ট্রের কিছু অংশে ভারী বৃষ্টি চলছে। গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিজনিত দুর্ঘটনার কারণে ছ’জনের মৃত্যু হয়েছে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২০ অগস্ট ২০২৫ ০৮:২০
Mumbai under red alert again, airlines say flights may be affected, university exam cancelled

জলমগ্ন মুম্বই। ছবি: পিটিআই।

টানা বর্ষণে বিপর্যস্ত মুম্বইয়ের বিস্তীর্ণ এলাকা। বড় রাস্তা হোক বা অলিগলি— প্রায় সর্বত্রই জল থইথই। বিপর্যস্ত রেল পরিষেবা। যোগাযোগ ব্যবস্থার অবস্থা তথৈবচ। তার মধ্যে মনোরেল বিপর্যয়। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মুম্বইয়ে অন্তত দু’টি মনোরেল মাঝপথে বিকল হয়ে যায়। সব মিলিয়ে দুই ট্রেন থেকে প্রায় ৮০০ জনকে উদ্ধার করতে হিমশিম খেতে হয়েছে প্রশাসনকে। তবে এখনই আতঙ্ক কাটছে না মুম্বইয়ের। বুধবারও আবহাওয়া পরিবর্তনের সম্ভাবনা কম। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে মঙ্গলবার উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেছেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবীস। তিনি জানিয়েছেন, আগামী ৪৮ ঘণ্টা খুবই উদ্বেগের।

Advertisement

শুধু মুম্বই নয়, অতিবর্ষণের কারণে মহারাষ্ট্রের অন্যান্য জেলাতেও বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। কোঙ্কন, মরাঠাওয়াড়া এবং পশ্চিম মহারাষ্ট্রের কিছু অংশে ভারী বৃষ্টি চলছে। গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিজনিত দুর্ঘটনার কারণে ছ’জনের মৃত্যু হয়েছে। মহারাষ্ট্রের দুর্যোগ মোকাবিলা বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, টানা চার দিনে বৃষ্টির কারণে এখনও পর্যন্ত রাজ্যে ২৪ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। এ ছাড়াও, নান্দেড় জেলায় পাঁচ জন নিখোঁজ। পরিস্থিতি মোকাবিলায় জাতীয় এবং রাজ্য মোকাবিলা বাহিনীর মোট ২৪টি দল কাজ করছে। প্রয়োজনে সেই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানানো হয়েছে।

ভারী বৃষ্টির কারণে রেল এবং বিমান পরিষেবা ব্যাহত। বেশ কিছু ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। কিছু ট্রেনের যাত্রাপথ সংক্ষিপ্ত করেছে রেল। লোকাল হোক বা এক্সপ্রেস— বেশির ভাগ ট্রেনই নির্ধারিত সময়ের থেকে দেরিতে চলছে। ইন্ডিগো, স্পাইসজেটের মতো বিমান সংস্থাগুলি বুধবার সকালে যাত্রীদের জন্য সতর্কতা জারি করেছে। তারা জানিয়েছে, মুম্বইয়ে ভারী বৃষ্টির কারণে বিমান পরিষেবা প্রভাবিত হতে পারেন। এখনও পর্যন্ত কোনও বিমান বাতিলের খবর না-থাকলেও, বিমান সংস্থাগুলির পরামর্শ, সংশ্লিষ্ট বিমানের স্থিতি সম্পর্কে যাত্রীরা যেন নিয়মিত খোঁজ রাখে। মৌসম ভবন সূত্রে খবর, বুধবারও মুম্বইয়ে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। জারি করা হয়েছে লাল সতর্কতাও। বৃহস্পতিবার থেকে বৃষ্টির পরিমাণ কমতে পারে। বৃষ্টি কমলে পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হবে বলে আশাবাদী মহারাষ্ট্র সরকার।

জলের তলায় মুম্বইয়ের বিভিন্ন রাস্তা।

জলের তলায় মুম্বইয়ের বিভিন্ন রাস্তা। ছবি: পিটিআই।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পর পর দু’টি মনোরেল আটকে পড়ায় আতঙ্ক ছড়ায়। সন্ধ্যা সওয়া ৬টা নাগাদ মনোরেল আটকে পড়ে চেম্বুর এবং ভক্তি পার্ক স্টেশনের মাঝে। ওই ট্রেনে যাত্রী ছিলেন ৫৮২ জন। তাঁদের সকলকেই নিরাপদে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছ। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই সাড়ে ৭টা নাগাদ আচার্য আত্রে এবং ওয়াডালা স্টেশনের মাঝে আটকে যায় আরও একটি মনোরেল। সেই ট্রেনের ২০০ জন যাত্রীকে উদ্ধার করা হয়েছে। কেন এই বিভ্রাট? মুম্বইয়ে মনোরেল পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে মেট্রোপলিটন রিজিওন ডেভলপমেন্ট অথারিট (এমএমআরডিএ)। তাদের মতে, সন্ধ্যা সওয়া ৬টা নাগাদ চেম্বুর এবং ভক্তি পার্ক স্টেশনের মধ্যবর্তী এলাকায় যে মনোরেলটি আটকে পড়েছিল, তাতে অতিরিক্ত যাত্রী ছিল। অতিরিক্ত যাত্রীসংখ্যার কারণে মনোরেল এক দিকে কিছুটা হেলে পড়ে। তার উপর বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে পড়ে।

মাঝপথে মনোরেল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আতঙ্কিত হয়ে পড়ে যাত্রীরা। উদ্ধারকারী দলের এক সদস্যের কথায়, অন্ততছ’জন যাত্রী ট্রেন থেকে নীচে ঝাঁপ দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। তবে তাঁদের শান্ত করে নামিয়ে আনা হয়। যাত্রীদের কথায়, ‘‘ট্রেন থেমে যাওয়ার পর কামরার ভেতরে দুর্বিষহ পরিস্থিতি তৈরি হয়। অনেকেরই শ্বাস নিতে অসুবিধা হচ্ছিল।’’ অনেকেই ট্রেনের মধ্যে অসুস্থও হয়ে পড়েন। মঙ্গলবার বিপর্যয়ের পর বুধবার সকাল থেকে আবার মনোরেল পরিষেবা শুরু হয়েছে। তবে অনেক যাত্রীই আতঙ্কে মনোরেল ছেড়ে বিকল্প পথে গন্তব্যে পৌঁছোনোর চেষ্টা করছেন।

স্কুল, কলেজ বন্ধের কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। তবে মুম্বই বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়েছে, পরিস্থিতি বিবেচনা করে বুধবারের কিছু পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। সেই পরীক্ষা কবে হবে, তা পরে জানিয়ে দেওয়া হবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তরফে।

Advertisement
আরও পড়ুন