India Pakistan Conflict

রাশিয়া সফরে যাচ্ছেন না প্রধানমন্ত্রী মোদী! ভারত-পাক উত্তেজনার মাঝে দিল্লিতে ঘন ঘন চলছে মন্ত্রণা-বৈঠক

রাশিয়ার ‘বিজয় দিবস’ উদ্‌যাপনের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তবে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে রুশ সফরে যাচ্ছেন না তিনি। সূত্রের খবর, মোদীর পরিবর্তে ওই অনুষ্ঠানে ভারতের তরফে অন্য কোনও কূটনৈতিক প্রতিনিধিকে পাঠানো হতে পারে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৫ ১৬:০২
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে রাশিয়া সফরে যাচ্ছেন না প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ১৯৪৫ সালের ৯ মে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সাফল্য এসেছিল রাশিয়ার। আগামী ৯ মে সেই যুদ্ধজয় উদ্‌যাপনে ‘বিজয় দিবসের কুচকাওয়াজ’ রয়েছে রাশিয়ার রাজধানী মস্কোয়। সেখানে আমন্ত্রিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদীও। তবে বুধবার রাশিয়া জানিয়েছে, ওই অনুষ্ঠানে যাচ্ছেন না ভারতের প্রধানমন্ত্রী। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভকে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স এই তথ্য জানিয়েছে। সূত্রের খবর, মোদীর বদলে রাশিয়ার ওই অনুষ্ঠানে ভারতের তরফে থাকতে পারেন কোনও কূটনৈতিক প্রতিনিধি।

Advertisement

গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিদের গুলিতে ২৬ জন নিরস্ত্রের মৃত্যুর পর থেকে ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের আরও অবনতি হয়েছে। ওই হামলায় কয়েক জন স্থানীয় জঙ্গি জড়িত থাকলেও বাকিরা পাকিস্তান থেকে এ দেশে এসেছিল বলে সন্দেহ ভারতের। যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে পাকিস্তান। উপত্যকা জুড়ে জঙ্গিদের খোঁজে তল্লাশি অভিযান শুরু হলেও এখনও পর্যন্ত ওই হামলায় জড়িত কোনও জঙ্গি ধরা পড়েনি। জঙ্গিহানার তদন্ত শুরু করেছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)। তদন্তের গতিপ্রকৃতির বিষয়ে এখনও পর্যন্ত এনআইএ-র তরফে সরকারি ভাবে কিছু ঘোষণা করা হয়নি। তবে সূত্রের খবর, হাশিম মুসা নামে এক পাক জঙ্গি পহেলগাঁও হামলার নেতৃত্বে ছিল। সূত্রের দাবি, এই মুসা পাক সেনার প্রাক্তন কমান্ডো ছিল এবং পরে লশকর-এ-ত্যায়বা জঙ্গিগোষ্ঠীতে যোগ দেয়।

গত সপ্তাহের মঙ্গলবার ওই জঙ্গিহানার সময়ে মোদী ছিলেন সৌদি আরব সফরে। বিদেশ সফর কাঁটছাঁট করে বুধবার সকালেই ভারতে ফেরেন মোদী। তার পর থেকে নয়াদিল্লিতে একের পর এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠক চলছে। বুধবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা সংক্রান্ত কমিটিকে নিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন মোদী। ওই বৈঠকের পরই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ পদক্ষেপ করে ভারত, যার মধ্যে অন্যতম সিন্ধু জলচুক্তি স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত। দীর্ঘমেয়াদি এবং কূটনৈতিক ভিসা ছাড়া পাকিস্তানিদের জন্য অন্য সব ভিসা বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। ওই সিদ্ধান্তের পরের দিনই গত বৃহস্পতিবার ভারতের বিরুদ্ধেও বাণিজ্য বন্ধ করা-সহ বেশ কিছু পদক্ষেপ করে পাকিস্তান। পাকিস্তান জানিয়েছে, জলপ্রবাহে বাধা দেওয়া হলে তা ‘যুদ্ধ’ হিসাবে দেখা হবে। ইসলামাবাদের দাবি, শিমলা চুক্তি স্থগিত করারও অধিকার রয়েছে তাদের। বস্তুত, এই চুক্তির মাধ্যমেই নিয়ন্ত্রণরেখা নির্ধারিত হয়েছিল।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গত বৃহস্পতিবার থেকে শুরু করে প্রতি রাতেই কাশ্মীরে নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর সংঘর্ষবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে আসছে পাকিস্তানি সেনা। মঙ্গলবার রাতেও সেই অভিযোগ উঠেছে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। এর মধ্যে গত কয়েক দিন ধরে নয়াদিল্লিতেও একের পর এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হয়েছে। মঙ্গলবারও সেনা সর্বাধিনায়ক এবং তিন বাহিনীর প্রধানকে নিয়ে বৈঠক করেছেন মোদী। বুধবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভাকে নিয়ে বৈঠক হয়েছে নয়াদিল্লিতে। পহেলগাঁও কাণ্ড ঘিরে সংসদে বিশেষ অধিবেশনেরও দাবি উঠতে শুরু করেছে। এই পরিস্থিতিতে বুধবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার রাজনৈতিক বিষয়ক কমিটির একটি পৃথক বৈঠক হয়েছে। অধিবেশন ডাকা সংক্রান্ত বিষয়টি নিয়ে মূলত এই কমিটিই সিদ্ধান্ত নেয়।

এরই মধ্যে বুধবার রাশিয়ার তরফে জানিয়ে দেওয়া হল, প্রধানমন্ত্রী মোদী ৯ মে ‘বিজয় দিবসের কুচকাওয়াজে’ থাকছেন না। ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জায়সওয়াল এর আগে জানিয়েছিলেন, রাশিয়ার ওই অনুষ্ঠানের জন্য প্রধানমন্ত্রী আমন্ত্রণ পেয়েছেন। তবে প্রধানমন্ত্রী ওই অনুষ্ঠানে যাচ্ছেন কি না, সে বিষয়ে নির্দিষ্ট ভাবে কোনও তথ্য বিদেশ মন্ত্রক থেকে ওই সময় প্রকাশ করা হয়নি।

Advertisement
আরও পড়ুন