Pune Porsche Crash

কিডনি পাচার চক্রে যুক্ত ছিলেন, খোয়ান পদও! পোর্শেকাণ্ডে ধৃত ফরেন্সিক প্রধানের অতীত চর্চায়

টাকার বিনিময়ে অভিযুক্তের রক্তপরীক্ষার রিপোর্ট পাল্টে গ্রেফতার হয়েছিলেন ফরেন্সিক বিভাগের প্রধান অজয় টাওয়ার। এই প্রথম নয়, টাকার বিনিময়ে আগেও অজয় অপরাধমূলক কাজ করেছেন বলে অভিযোগ।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০২৪ ১১:৩৮
Pune car crash case arrested doctor in kidney racket probe

ধৃত ফরেন্সিক বিভাগের প্রধান অজয় টাওয়ার। — ফাইল চিত্র।

পুণের পোর্শেকাণ্ডে ধৃত ফরেন্সিক বিভাগের প্রধান অজয় টাওয়ারের বিরুদ্ধে অভিযুক্ত কিশোরের রক্তের নমুনা বদলে ফেলার অভিযোগ উঠেছিল। সেই ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশের সামনে উঠে এল আরও ভয়ঙ্কর তথ্য। এই প্রথম নয়, টাকার বিনিময়ে আগেও অজয় অপরাধমূলক কাজ করেছেন বলে অভিযোগ। যুক্ত ছিলেন এক কিডনি পাচার চক্রের সঙ্গেও!

Advertisement

২০২২ সালে অজয়ের নাম জড়িয়েছিল কিডনি পাচার চক্রের সঙ্গে। অভিযোগ ওঠে, কিডনির বিনিময়ে এক মহিলার থেকে ১৫ লক্ষ টাকা চাওয়া হয়েছিল। সেই ঘটনার তদন্তে প্রকাশ্যে আসে একটি ক্লিনিকের নাম। অবৈধ ভাবে সেই ক্লিনিকে অঙ্গ প্রতিস্থাপন করা হত বলেও অভিযোগ। সেই ঘটনায় অজয়ের নাম জড়ায়। সেই অভিযোগে তাঁকে সসুন হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপারিনটেনডেন্টের পদ থেকে অপসারণ করা হয়েছিল।

তবে ২০২৩ সালের ২৯ ডিসেম্বর একই পদে পুনর্বহাল করা হয় তাঁকে। ন্যাশনাল কংগ্রেস পার্টির (এনসিপি) বিধায়ক সুনীল টিংরের সুপারিশপত্রের জোরেই পুরনো পদে বহাল হন অজয় বলে স্থানীয় সূত্রের দাবি। পোর্শেকাণ্ডে সুনীলের নাম দ্বিতীয় বার এল। এর আগে অভিযুক্ত কিশোরের বিরুদ্ধে পুলিশ যাতে কোনও চরম পদক্ষেপ না করে, তা নিশ্চিত করতে এনসিপি বিধায়ক প্রভাব খাটিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। শরদ পওয়ার গোষ্ঠীর বিধায়ক সুনীলের সুপারিশপত্র সমাজমাধ্যমেও ঘুরছে। যদিও সেই সুপারিশপত্রের সতত্যা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন। এই ঘটনার পর অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, টাকার বিনিময়ে প্রভাব বার বার প্রভাব খাটানোর অভিযোগ ওঠার পরেও কেন সুনীলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না? গত মাসে সসুন হাসপাতালে ইঁদুর কামড়ানোর ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছিল। সেই ঘটনায় অজয়ের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। এমনকি, তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়।

গত ১৯ মে পুণেতে একটি পোর্শের ধাক্কায় দুই তরুণ ইঞ্জিনিয়ারের মৃত্যু হয়। গাড়িটি চালাচ্ছিল ১৭ বছরের কিশোর। সে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ছিল বলে অভিযোগ। সেই ঘটনার পরে অভিযুক্তের শারীরিক পরীক্ষার জন্য সসুন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখানেই তার রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। ফরেন্সিক রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর সন্দেহ হয় পুলিশের। কারণ, রিপোর্টে দেখা যায়, কিশোরের শরীরে মদ খাওয়ার বা নেশা করার কোনও চিহ্ন নেই! দ্বিতীয় বার রক্তপরীক্ষা করানো হয় অভিযুক্তের। সেই রিপোর্টেই ধরা পড়ে, কিশোর মদ খেয়েছিল। এর পরে ডিএনএ পরীক্ষার ব্যবস্থা করে পুলিশ। সেখান থেকে জানা যায়, প্রথম এবং দ্বিতীয় রিপোর্টটিতে আলাদা আলাদা রক্তের নমুনা ব্যবহৃত হয়েছে।

কী ভাবে রিপোর্ট বদলাল, তা তদন্ত করতে গিয়েই পুলিশ অজয়কে গ্রেফতার করে। সসুন হাসপাতালের চিকিৎসক শ্রীহরি হালনরকর এবং অতুল ঘটকম্বলে নামে এক স্বাস্থ্যকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁরা অজয়ের অধীনেই কাজ করতেন বলে জানতে পারেন তদন্তকারী অফিসারেরা। তিন লক্ষ টাকার বিনিময়ে অভিযুক্তের রক্তপরীক্ষার রিপোর্ট পাল্টে ফেলা হয়েছিল।

Advertisement
আরও পড়ুন