কোলাজেন বৃদ্ধিতে কোন গাছ সহায়ক হবে? ছবি: সংগৃহীত।
ত্বকের বার্ধক্যরোধে প্রধান ভূমিকা পালন করে যে প্রোটিন, সেটিই হল কোলাজেন। চামড়া শিথিলতার গতি ধীর করা, ত্বক টানটান রাখা, কোমলতা বজায় রাখা, তারুণ্য ধরে রাখার কাজ করে কোলাজেন। সেই কোলাজেনের উৎপাদন বাড়ানোর প্রবণতা দেখা যাচ্ছে তারকা থেকে সাধারণের মধ্যে। কেউ খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে, কেউ বা প্রসাধনী মেখে। হায়ালুরোনিকের মতো নানাবিধ অ্যাসিডের উপর ভরসা রাখছেন এখন অনেকে। তবে জানেন কি, আপনার বারান্দায় যে গাছ নিঃশব্দে বড় হচ্ছে, সেই অ্যালো ভেরার জেলেই কোলাজেন উৎপাদন করার ক্ষমতা লুকিয়ে রয়েছে?
কোলাজেন যদিও মানুষের দেহেই তৈরি হয়, কিন্তু বয়স, সূর্যালোক, ঘুমের ঘাটতি, দূষণের মতো নানা কারণে ধীরে ধীরে এর পরিমাণে কমতে শুরু করে শরীরে। কোলাজেনের ফাইবার নষ্ট হতে শুরু করলে মুখে বলিরেখা পড়তে শুরু করে। তাই এখন ত্বকের যত্ন মানে শুধু বাহ্যিক যত্ন নয়, বরং কোলাজেন উৎপাদন বাড়ানোও। আর এই অ্যালো ভেরা প্রাকৃতিক কোলাজেন উদ্দীপক। অ্যালো ভেরার জেলে থাকে গ্লুকোম্যানান নামের এক প্রাকৃতিক শর্করা, যা ত্বকের ফাইব্রোব্লাস্ট কোষকে সক্রিয় করে। এই কোষগুলিই কোলাজেন তৈরি করে। তাই নিয়মিত অ্যালো ভেরা জেল ব্যবহার করলে ত্বকের কোষে নতুন কোলাজেন উৎপাদন হতে পারে। ফলে ত্বক সময়ের সঙ্গে আরও টানটান ও নমনীয় হয়।
কোলাজেন বৃদ্ধির জন্য কী ভাবে অ্যালো ভেরা জেল ব্যবহার করবেন?
অ্যালো ভেরা জেলের সঙ্গে কয়েকটি উপাদান মিশিয়ে নিলেই কোলাজেন উৎপাদনের কাজ আরও ত্বরান্বিত হবে। তার জন্য আছে নির্দিষ্ট পদ্ধতি।
অ্যালো ভেরা দিয়েই বানিয়ে নিন কোলাজেন জেল। ছবি: সংগৃহীত।
উপকরণ
২টি অ্যালো ভেরার পাতা
১ টেবিল চামচ নারকেল তেল (না-ও দিতে পারেন। কিন্তু নারকেল তেল ব্যবহার করা হয় ত্বককে ময়েশ্চারাইজ় করার জন্য)
১টি ভিটামিন ই-র ক্যাপসুল (অ্যালো ভেরার অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ভিটামিন ই প্রয়োজন)
১ টেবিল চামচ জিলাটিন (কোলাজেনের পরিমাণ বাড়ানোর জন্য দরকার)
২ টেবিল চামচ পরিশোধিত গোলাপজল
পদ্ধতি
পাতাগুলি ভাল করে ধুয়ে খোসা ছাড়িয়ে নিন। তার পর চামচ দিয়ে অ্যালো ভেরা জেল বার করে নিন। জেলটিতে নারকেল তেল, ভিটামিন ই এবং গোলাপজল মিশিয়ে দিন। অন্য দিকে সামান্য গরম জলে মিশিয়ে গুলিয়ে নিন জিলাটিন। তার পর আগের মিশ্রণে জিলাটিন যোগ করুন। বার বার নাড়িয়ে মিহি করে ফেলুন মিশ্রণটি। এ বার একটি বায়ু নিরোধক কাচের পাত্রে সংরক্ষণ করতে পারেন। ফ্রিজে রেখে দিলে প্রায় এক সপ্তাহ টাটকা থাকবে এই মিশ্রণ।
ব্যবহার
রাতের বেলা মুখ ধুয়ে ভাল করে শুকিয়ে নিতে হবে। তার পর জেলটি হাতে নিয়ে সারা মুখে, গলায় মেখে নিন। গালে আলতো চাপ দিয়ে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে মাসাজ করতে হবে। তার পর ২০ মিনিট রেখে দিয়ে হালকা গরম জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। কেউ কেউ এই জেল সারা রাতও মুখে মেখে রাখতে পারেন। পর দিন ঘুম থেকে উঠে মুখ ধুয়ে ফেললেই হবে। সপ্তাহে ২-৩ বার এই পদ্ধতিতে রূপচর্চা করতে পারেন।