প্রতীকী চিত্র। ছবি: ফ্রিপিক।
সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বড় শহরে বহুতল এবং ফ্ল্যাট বাড়ির সংখ্যা বাড়ছে। জলাশয় এবং সবুজের হার কমছে। একই ভাবে নাগরিক সমাজও বাড়ি এবং জীবনযাত্রাকে কেন্দ্র করে তার সিদ্ধান্তে বদল আনতে শুরু করেছে। ফলে চর্চায় চলে এসেছে ‘সার্কুলার লিভিং’।
সার্কুলার লিভিং কী?
এই ধারণার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে পরিবেশবান্ধব দর্শন। অর্থাৎ যেখানে অপচয় কম এবং পুনর্ব্যবহার বেশি। খরচের তুলনায় সেখানে সাশ্রয়ের পাল্লা ভারী থাকে। বাড়ির গঠন থেকে শুরু করে আসবাবপত্র— সর্বত্রই থাকে তার ছোঁয়া।
প্রয়োগ কী ভাবে?
১) ‘সার্কুলার লিভিং’-এর ক্ষেত্রে প্রথমেই অপচয় না করার উপরে জোর দেওয়া হয়। যেমন অতিরিক্ত আসবাব না কিনে মাল্টি ইউটিলিটি আসবাব কেনা যায়। জলের অপচয় কমাতে বাড়ির কলগুলিতে সেন্সর ব্যবহার করা যেতে পারে। একই ভাবে স্মার্ট লাইট এবং ফ্যান ব্যবহার করা যেতে পারে।
২) কোনও জিনিস ব্যবহারের পর তা বাতিল না করে, মেরামতির দিকে নজর দেওয়া যেতে পারে। এর ফলে অপচয় কমবে। স্বল্প পরিসরের অর্থনীতির পক্ষেও এই প্রবণতা ভাল।
৩) ব্যবহারিক জীবনে খাওয়াদাওয়া, কেনাকাটা এবং বিনোদনের ক্ষেত্রেও ‘সার্কুলার লিভিং’-এর দর্শনকে কাজে লাগানো যেতে পারে। যেমন, একটি পোশাক কিনতে গিয়ে অধিক কিনে ফেলা উচিত নয়। আবার এক বারে সারা মাসের মুদিখানার জিনিস না কিনে সাপ্তাহিক প্রয়োজন মতো কেনাকাটা করা যেতে পারে।
৪) বাড়িতে ব্যবহৃত জিনিস যেন পরিবেশবান্ধব হয়, তা কেনার আগে দেখে নেওয়া যেতে পারে।
৫) ‘ইউজ় অ্যান্ড থ্রো’ গোত্রের কোনও জিনিস ব্যবহার না করার মাধ্যমেও জীবনে ‘সার্কুলার লিভিং’কে প্রাধান্য দেওয়া যেতে পারে।
সুবিধা কোথায়
‘সার্কুলার লিভিং’ অভ্যাসের ফলে এক দিকে যেমন প্রকৃতির উপকার হয়, তেমনই ব্যক্তির নিজস্ব চিন্তাধারাতেও বদল আসতে শুরু করে। দীর্ঘমেয়াদি পরিস্থিতিতিতে দেখা গিয়েছে, এই ধরনের জীবনধারা ব্যক্তির সঞ্চয়ের পরিমাণও বৃদ্ধি করেছে। এই ধরনের চিন্তাভাবনা বড় বড় সংস্থাকেও এখন নতুন করে ভাবতে বাধ্য করছে। তারাও এখন পরিবেশবান্ধব হওয়ার দিকে ঝুঁকেছে। সব মিলিয়ে যা সমাজ এবং প্রকৃতির জন্য মঙ্গলজনক। সমীক্ষা বলছে, আগামী দিনে প্রকৃতি এবং বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য রক্ষা করতে ‘সার্কুলার লিভিং’-এর ধারণা আরও জনপ্রিয় হবে।