ভাইফোঁটা মানে শুধু ফোঁটা দিয়ে ভাইয়ের কপালে ফোঁটা দিয়ে দীর্ঘায়ু কামনা নয়, বরং তার চেয়েও বেশি কিছু। বর্তমান ব্যস্ত সময় ভাই-বোনের মিলন উৎসবে পরিণত হয়েছে তা।
এ এক এমন দিন যখন রীতি মেনে ফোঁটা দেওয়া হয় ঠিকই, তবে আনন্দ, আড্ডা, গল্পের টানও থাকে যথেষ্ট। মিষ্টি খাওয়া, ভূরিভোজে সকাল থেকে বিকাল কেটে যায় নিমেষে। তার পর খানিক ফাঁকা সময় পাওয়া যায়।
এই সময়টা পারিবারিক আড্ডায় কাটতেই পারে। তবে তা আরও উপভোগ্য হয়ে উঠবে যদি সকলে মিলে মজার খেলা, খেলা যায়। এই খেলার নিয়মকানুন নিজেরাই বানাতে পারেন। উপহারের তালিকাও সাজাতে পারেন একেবারে নিজেদের মতো করে।ছোট থেকে বড়— পরিবারের সকলে মিলে খেলতে পারেন এমন কয়েকটি খেলার ধারণা রইল।
খেলা নম্বর ১: একটি বড় পিজবোর্ডের বাক্স নিন। এবার রকমারি নরম পানীয়, যা সকলেই খান বা খেয়েছেন কোনও না কোনও সময়, সেগুলি বাক্সের ভিতরে ভরে দিন। বাক্সের একটি দিক খালি থাকবে, যেখান দিয়ে পর্যবেক্ষণ সম্ভব। বাক্সে নির্দিষ্ট দূরত্ব অন্তর ঠান্ডা পানীয়ের বোতল রেখে ছিপিগুলি খুলে দিন। এবার বাক্সের উপরিতলে নির্দিষ্ট স্থানে ছিদ্র করুন যাতে একটি স্ট্র পানীয়ের বোতল পর্যন্ত পৌঁছে যায়। সেই স্ট্র মুখে দিয়ে টানলে পানীয় পৌঁছবে কিন্তু কোনও ভাবেই বোতলটি দেখতে পাবেন না যিনি সেটি খাবেন।প্রতিটি বোতলের নীচে বিভিন্ন অঙ্কের টাকা রাখুন পুরস্কার বাবদ। যিনি স্ট্র দিয়ে পানীয় খেয়ে সঠিক নাম বলতে পারবেন তিনি পুরস্কার জিতবেন। তবে দু- তিন রাউন্ডের পর বোতলগুলির স্থান পরিবর্তন জরুরি, না হলে কেউ ভাল ভাবে খেলা লক্ষ করলেই বুঝে যেতে পারেন কোথায় কোন বোতল রয়েছে। চেষ্টা করতে হবে মোটামুটি একই স্বাদের পানীয় রাখার, যাতে সহজে কেউ স্বাদ বুঝতে না পারেন।পিজবোর্ডের বাক্সের খোলা দিকে থাকবেন বিচারক যিনি বিষয়টি লক্ষ করবেন।
খেলা নম্বর ২: একটি বড় খাবার টেবিলে ৩-৪ ইঞ্চি দূরে দূরে উল্লম্ব ভাবে মোমবাতি সাজিয়ে নিন ৪-৫টি। প্রতিটি মোমবাতির পাশে আড়াআড়ি ভাবে রাখা থাকবে বিভিন্ন জিনিস। তবে মজা করার জন্য শুধু উপহার রাখলে চলবে না, রাখতে পারেন কাঁচালঙ্কা, কেক এবং ক্রিমও। তবে তা খাওয়ার জন্য নয়। মুখে মাখানোর জন্য।
খেলায় ফুঁ এর জোর পরীক্ষা হবে। ধরা যাক কেউ এক ফুঁয়ে তিনটি মোমবাতি নেভালেন। তিন নম্বর মোমবাতির পাশে সুন্দর কোনও উপহার থাকল তিনি সেটা পাবেন। আবার কেউ দু’টি মোমবাতি নেভালেন। তার পাশে কেক এবং ক্রিম দুই রাখা। সেখানে রাখুন চিরকুট। তাতে লেখা থাকবে নিজের মুখে ক্রিম মাখার কথা। কোনও চিরকুটে থাকতে পারে বিশেষ কাউকে ক্রিম মাখানোর কথা। কোনওটিতে থাকতে পারে কেক খাওয়ার কথা। যিনি যে চিরকুট তুলবেন, সেই অনুযায়ী কাজ করতে হবে।
খেলা নম্বর ৩: স্নানঘরের ব্যবহারের জন্য যে কাগজের রোল পাওয়া যায় সেগুলি কিনে রাখুন। বড় টেবিল ৬ ইঞ্চি অন্তর লম্বালম্বি ভাবে সেগুলি খুলে বিছিয়ে দিন। কাগজের রোলের প্রান্তে থাকবে জল ভর্তি কাগজের কাপ। আর টেবিলে আড়াআড়ি ভাবে ৩ ইঞ্চি অন্তর থাকবে রকমারি উপহার। টাকা থেকে লজেন্স, কানের দুল, বিস্কুট এমনকী কাঁচালঙ্কাও রাখতে পারেন সেখানে। খেলা হল টেবিলের নির্দিষ্ট প্রান্তে দাঁড়িয়ে খুব সন্তর্পনে কাগজের রোলে টান দিয়ে জলভর্তি কাগজের কাপটি টেনে আনতে হবে। জল চলকে পরলেই পাতলা রোলের অংশের কাগজ ছিঁড়ে যাবে। যেখানে সেটি ছিঁড়বে সেখানে যে উপহার আছে সেটি বরাদ্দ হবে। মজার জন্য রাখতে পারেন কাঁচালঙ্কাও। সেই স্থানে এসে কাগজ ছিঁড়ে গেলে খেতে হবে সেটি।