মেয়ে ইয়ানার ‘স্ক্রিন টাইম’ কী ভাবে কমিয়েছেন সোহা? ছবি: সংগৃহীত।
আড়াই বছরের খুদেকে খাওয়াতে মায়ের কেটে যায় ঘণ্টা তিনেক সময়। কিছুই মুখে তুলতে চায় না সে। একমাত্র উপায়, মোবাইল ফোনে কার্টুনের ভিডিয়ো চালিয়ে তার হাতে তুলে দেওয়া। তা হলেই তাড়াতাড়ি খেয়ে নেয় ছেলে। অনেক মা-বাবা আবার শিশুর সামনে মোবাইল চালিয়ে নিজেদের টুকিটাকি কাজ সেরে ফেলেন। আর এ ভাবেই মোবাইল কিংবা টিভির নেশায় বুঁদ হয়ে পড়ে ছোটরা। এই অভ্যাসের কারণে কেবল চোখের সমস্যা বাড়ছে এমনটা নয়, খুদেদের মস্তিষ্কেও এর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী সোহা আলি খান খুদেদের স্ক্রিন আসক্তি কমানোর উপায় বলেছেন।
অনেক সময় শিশুর স্ক্রিন আসক্তি দূর করার জন্য অভিভাবকেরা তাদের বকাবকি করেন। এতে আসক্তি তো কমেই না, অনেক ক্ষেত্রেই শিশুর জেদ আরও বেড়ে যায়। বাবা-মায়ের সঙ্গে দূরত্বও তৈরি হয়। সোহা বলেন, ‘‘আজকের শিশুরা এমন একটি ডিজিটাল-কেন্দ্রিক পৃথিবীতে বড় হচ্ছে, যা তাদের অত্যন্ত সচেতন ও কৌতূহলী করে তুলছে। এই কৌতুহলের কারণে তাদের স্ক্রিনের প্রতিও আসক্তি বাড়ছে। এই আসক্তি কমাতে অভিভাবকদের একটু বেশি সতর্ক হতে হবে।’’
সোহার মেয়ে ইনায়াকে কী ভাবে তিনি স্ক্রিনের থেকে দূরে রাখেন, সেই উপায় সকলকে জানিয়েছেন সোহা। অভিনেত্রী বলেন, ‘‘আমাদের একটি পোষ্য রয়েছে, যা ইনায়ার জীবনে একটি সুন্দর প্রভাব ফেলেছে। পোষ্যটিকে ইনায়া ভীষণ ভালবাসে। তার সঙ্গে থেকেই ইনায়া সহানুভূতি, দায়িত্ববোধ শিখছে। পোষ্যকে নিয়েই আমার মেয়ের অনেকটা সময় কেটে যায়। আমাদের ক্ষেত্রে সেই পোষ্যই পর্দার বাইরের বাস্তব জগতের সঙ্গে ইনায়ার সংযোগ স্থাপন করতে সাহায্য করেছে।’’
পোষ্যের সঙ্গে খেলায় ব্যস্ত ইনায়া। ছবি: ইনস্টাগ্রাম।
সোহার মতে, অনেক বাড়িতেই শিশুদের উপর মতামত চাপিয়ে দেওয়া হয়, তাদের কথা শোনা হয় না। সোহার বাড়িতে সেই চল নেই। অভিনেত্রী বলেন,‘‘ ইনায়ার ক্ষেত্রে আমি সত্যিই যোগাযোগের একটি খোলামেলা পরিবেশ তৈরি করতে চেয়েছিলাম। যাতে ও আমাদের প্রশ্ন করতে পারে, নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে পারে। আমাদের পরিবারে ইনায়ার মতামতকেও গুরুত্ব দেওয়া হয়। তবে হ্যাঁ, কোথায় সে কথা বলতে পারবে সেই জ্ঞানও ইনায়ার ভালই আছে, কোথায় সীমা রাখা দরকার সেটা ইনায়া বোঝে।’’
সোহার মতে, বাবা-মা, পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হলেই স্ক্রিনের প্রতি আসক্তি বাড়ে। তাই পরিবারকেও তাদের জন্য সময় দিতে হবে। পরিবারের সঙ্গে খুদেরা যত মন খুলে কথা বলতে পারবে, ততই তাদের সময় কাটানোর জন্য স্ক্রিনের প্রয়োজন পড়বে না।