introvert communication tips

লোকে বলে মুখচোরা? কারও সঙ্গে কথা বলতেই বিরক্ত লাগে? অন্তর্মুখীরা ৫ পরামর্শে উপকার পেতে পারেন

মেলামেশার ক্ষেত্রে অনেকেই অসুবিধার সম্মুখীন হন। সম্পর্ক ভাল রাখতে এবং নিজেকে পরিবর্তন করতে কয়েকটি বিষয় বিচার করা উচিত।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০২৫ ১১:১১
Introverts can check and follow these 5 conditions and tips to socialise better

প্রতীকী চিত্র। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।

বন্ধুরা পার্টিতে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। কিন্তু আপনার ইচ্ছে নেই। কখনও যেতে হলেও দর্শন দিয়েই বেরিয়ে আসেন। রেস্তরাঁয় স্টার্টারের তুলনায় ডেজ়ার্টের অপেক্ষায় থাকেন বেশি। কেনাকাটা করতে গিয়ে ঘড়িতে চোখ থাকে বেশি। তা হলে আর না ভেবে বলা যায়, আপনি অন্তর্মুখী। মেলামেশা বা সামাজিকতা থেকে দূরে থাকতে পছন্দ করেন। অন্দরমহলেই হয়তো নিজের আলাদা জগৎ তৈরি করে নিয়েছেন। যাঁরা অন্তর্মুখী, তাঁদের ক্ষেত্রে অনেক সময়েই বাড়ির বাইরে বেরোতে বা অন্য ব্যক্তির সঙ্গে মেলামেশা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।

Advertisement

সমাজমাধ্যম, অতিমারি পর্ব, মোবাইল ফোন এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের জন্য বর্ধিত অ্যাপ নির্ভরতার সঙ্গেই মানুষের মধ্যে সামাজিকতা বা মেলামেশার প্রবণতা যে অনেকটা কমেছে, তা নিয়ে সমাজতাত্ত্বিকেরা একমত। তাঁরা জানাচ্ছেন, সময়ের সঙ্গে মেলামেশার ক্ষেত্রে অনেকেই অনীহা প্রকাশ করছেন।

কী ঘটছে? কী পদক্ষেপ করা যেতে পারে?

১) গবেষকেরা জানিয়েছেন, দৃষ্টিশক্তির মাধ্যমে কোনও বস্তুর সঙ্গে ৩ সেকেন্ডের বেশি যোগসূত্র তৈরি হলে, তা ভাল। তাই মুখোমুখি সাক্ষাতের ক্ষেত্রে দৃষ্টি বিনিময় সম্পর্ক স্থাপনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ, যা মোবাইলে সম্ভব নয়।

কী করণীয়: বাড়ির বাইরে পা রাখার ক্ষেত্রে ছোট ছোট পদক্ষেপ করা যেতে পারে। যেমন প্রতিবেশীদের সঙ্গে দেখা। যাঁরা একা থাকতে পছন্দ করেন, তাঁরা কোনও প্রদর্শনী, সিনেমা দেখা বা হাঁটার অভ্যাস তৈরি করতে পারেন।

২) কোনও অনুষ্ঠান বা ভ্রমণের ক্ষেত্রে সদস্যসংখ্যা বেশি হলে সমস্যা হতে পারে। মনের মধ্যে তখন ‘কে কী বলবে’— এই ধরনের চিন্তা বাসা বাধে। হতেও পারে সেই উদ্যোগে শেষ পর্যন্ত আপনি শামিল হলেন না।

কী করণীয়: এ রকম ক্ষেত্রে কারা কারা আসছেন, তা আগে থেকে জেনে নেওয়া যেতে পারে। তার পর, তালিকা থেকে প্রত্যেকের সঙ্গে শেষ কবে দেখা হয়েছে বা কী কথা হয়েছে, তা স্মরণ করা যেতে পারে। ফলে মুখোমুখি দেখা হলে এড়িয়ে যাওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হবে না। অপরিচিত কারও সঙ্গে আলাপ করতে হলে, সেই ব্যক্তির পরিচিত কাউকেও সঙ্গে রাখা যায়। কথোপকথন সহজ হবে।

৩) যাঁরা অন্তর্মুখী হন, পারিপার্শ্বিক শব্দের ক্ষেত্রে তাঁরা সচেতন থাকেন। কোনও ক্যাফের শোরগোল বা জন্মদিনের অনুষ্ঠানে বেলুন ফাটানোর শব্দ তাঁর পছন্দ না-ও হতে পারে। মস্তিষ্ক তখন শব্দের প্রেক্ষাপটে মনের মধ্যে বিরক্তির উদ্রেক ঘটায়।

কী করণীয়: আপনার সঙ্গে যিনি রয়েছেন, তাঁকে স্থান পরিবর্তনের জন্য অনুরোধ করা যেতে পারে। বলা যেতেই পারে কোলাহলের মধ্যে কথোপকথনে আপনার সমস্যা হচ্ছে। উপস্থিতি অতিথিদের সংখ্যা বেশি হলে ইয়ারপ্লাগ বা ইয়ারফোন অনেক সময় কাজে দেয়।

৪) অনেক সময়েই মেলামেশার ক্ষেত্রে সময় বাধা হয়ে দাঁড়ায়। ভাল গ্রুপ ছবি থেকেও হয়তো আপনি বাদ পড়ে যান। স্বল্প উপস্থিতির জন্য কেউ কেউ আপনাকে নিয়ে অভিযোগও করতে পারেন। তাই আগে থেকে একটু ভেবে নেওয়া উচিত।

কী করণীয়: অনুষ্ঠান বা কোনও বৈঠকের ঠিক কোন সময়ে আপনি উপস্থিত থাকতে চাইছেন, তা আগে থেকে ঠিক করে নিন। প্রয়োজনে উদ্যোক্তাদের তা আগে থেকে জানিয়ে রাখুন। ফলে নির্দিষ্ট সময়ে তাঁরাও আপনাকে সময় দেবেন।

৫) মেলামেশা এড়িয়ে চলতে চলতে এক সময়ে তা অভ্যাসে পরিণত হয়। দীর্ঘকালীন অনুপস্থিতি আত্মীয় বা বন্ধুবান্ধবের মধ্যে তখন আপনাকে নিয়ে নতুন করে প্রত্যাশা তৈরি করে না। ফলে সম্পর্কেও দূরত্ব তৈরি হয়।

কী করণীয়: নিজেকে প্রশ্ন করা যেতে পারে যে, যাঁকে এড়িয়ে গেলেন, পরে কি তাঁর কাছে ক্ষমা চেয়ে আপনি মেসেজ করবেন। যদি উত্তর হ্যাঁ হয়, তা হলে নিজের মনের পরিবর্তন করা উচিত। নিজের পরিবর্তে অন্য মানুষটির চাহিদাকে গুরুত্ব দেওয়া শুরু করলে, সমস্যাগুলি সহজ হতে শুরু করবে।

Advertisement
আরও পড়ুন