Food in Plane

মাঝ আকাশে বিস্বাদ লাগে খাবার? বিমানে কেন বদলে যায় চেনা খাবারের স্বাদও?

ঝাল খাচ্ছেন না নোনতা না কি মিষ্টি, সব গুলিয়ে যায়। খাবার বিস্বাদও লাগে অনেক সময়েই। মাঝ আকাশে থাকার সময়ে এমনটা বেশি হয়। কেন জানেন?

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০২৫ ১৪:৪০
Why does the food served in Airplane taste different

বিমানে কেন খাবারের স্বাদ অন্যরকম লাগে, কারণ জানলে চমকে যাবেন। ছবি: ফ্রিপিক।

বাড়িতে বসে বার্গারে কামড় দিলে তার যে স্বাদ লাগে, বিমানে কি সেই স্বাদই অন্য রকম মনে হয়? অনেকেই বলেন, বিমানে নোনতা বা মিষ্টি খাবারের স্বাদ নাকি বোঝাই যায় না। ঝাল খাচ্ছেন না নোনতা না কি মিষ্টি, সব গুলিয়ে যায়। খাবার বিস্বাদও লাগে অনেক সময়েই। মাঝ আকাশে থাকার সময়ে এমনটা বেশি হয়। তখন যত রাগ গিয়ে পড়ে বিমানসংস্থার উপরে। খাবারের স্বাদের জন্য বিমান সংস্থা কিন্তু একা দায়ী নয়, এর পিছনে বৈজ্ঞানিক কারণও রয়েছে।

Advertisement

আমেরিকা ও জার্মানির কয়েকটি বিমান সংস্থা এই বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘ সময় ধরেই গবেষণা চালাচ্ছে। সম্প্রতি অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির ‘এক্সপেরিমেন্টাল সাইকোলজি’ বিভাগের অধ্যাপক চার্লস স্পেন্স জানিয়েছেন, ৩০ হাজার ফুট উচ্চতায় উঠলেই, স্বাদকোরকের কার্যক্ষমতা কমতে থাকে। কারণ মাধ্যাকর্ষণের টান যত কমবে, ততই জিভের সংবেদনশীলতা কমবে। ৩৫ হাজার ফুট উচ্চতায় গেলে, জিভ তখন নানা ধরনের স্বাদ আলাদা করে বুঝতে পারবে না।

মাঝ আকাশে বিমানের ভিতরে বাতাসের চাপ অনেক কম থাকে, পাশাপাশি আর্দ্রতাও তলানিতে চলে যায়। তেমন বদ্ধ, শুষ্ক পরিবেশের প্রভাব শরীরে উপরেও পড়ে। গবেষকেরা জানাচ্ছেন, ৩০-৩৫ হাজার ফুট উচ্চতায় আর্দ্রতা হঠাৎ করেই ২০ শতাংশের মতো কমে যায়। ওই সময়ে স্বাদকোরকগুলি আরও বেশি সংবেদনশীল হয়ে ওঠে। দেখা গিয়েছে, অতিরিক্ত নোনতা বা খুব বেশি মিষ্টির স্বাদ আলাদা করে বোঝা যায় না। এমনকি অনেক সময়ে ঝাল খেলেও তা ঠিকমতো ঠাহর হয় না। সে কারণেই বিমানের খাবারে অনেক সময়েই বেশি করে নুন বা মশলা মিশিয়ে দেওয়া হয়।

তবে নোনতা বা মিষ্টির স্বাদ বোঝা না গেলেও, টক বা তেতোর স্বাদে কিন্তু কোনও বদল হয় না। স্বাদ কেবল নয়, খাবারের গন্ধও নাকি ঠিকমতো পাওয়া যায় না অধিক উচ্চতায়। অক্সফোর্ডের গবেষক জানিয়েছেন, ৮০ শতাংশ বিমানযাত্রীই নাকি দাবি করেন, খাবারের স্বাদ যেমন ঠিকমতো পাওয়া যায় না, তেমনই গন্ধও বোঝা যায় না। বাতাসের চাপ ও আর্দ্রতা কমে যাওয়ার কারণেই এমনটা হয়।

আরও কিছু কারণ রয়েছে। যেমন, বিমানে যে খাবার পরিবেশন করা হয় তা রান্না করে ঠান্ডা অবস্থায় প্যাকেটে মুড়ে বিমানে তোলা হয়। পরে সেটি বিমানে ভিতর গরম করা হয় কনভেকশন অভেনে। বিমানে মাইক্রোঅয়েভ বা গ্যাস বার্নার থাকে না। কাজেই খাবারের প্যাকেট সে ভাবে গরম করাও যায় না। সে কারণেই খাবারের স্বাদে বদল আসে। তবে এই সমস্যা কী ভাবে কাটিয়ে ওঠা যাবে, সে নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছে সিঙ্গাপুরের কিছু বিমান সংস্থা। কম চাপ ও আর্দ্রতায় কী ভাবে খাবার রান্না করা যাবে এবং স্বাদ একই রকম রাখাও সম্ভব হবে, সে নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা চলছে।

Advertisement
আরও পড়ুন