প্রায় ১৫ বছর একসঙ্গে থাকার পর বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন হিন্দি টেলিপাড়ার অন্যতম ‘পাওয়ার কাপল’ জয় ভানুশালী এবং মাহি ভিজ! তেমনটাই উঠে এসেছে একটি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী।
প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, কয়েক মাস আগেই বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেছিলেন জনপ্রিয় এই জুটি। ২০২৫ সালের জুলাই থেকে অগস্টের মধ্যে বিবাহবিচ্ছেদের কাগজপত্র ‘স্বাক্ষরিত এবং চূড়ান্ত’ হয়েছিল বলেও ওই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে এ-ও দাবি করা হয়েছে, তিন সন্তানের মধ্যে কে কার কাছে থাকবে বা কোথায় থাকবে, তা নিয়েও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ইতিমধ্যেই।
উল্লেখ্য, জয় এবং মাহির বিবাহবিচ্ছেদের গুজব জুলাই মাসেই ছড়িয়ে পড়েছিল। কিন্তু সেই সময় মাহি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন, তিনি এ বিষয়ে কিছু জানানোর প্রয়োজনীয়তা বোধ করেন না।
এখন জানা গিয়েছে, কয়েক মাস আগেই বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করে ফেলেছেন জয়-মাহি। এত দিন তাঁরা আলাদা থাকছিলেন বলেও উঠে এসেছে প্রতিবেদনে।
একটি সূত্র সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্থান টাইমসকে বলেছে, ‘‘অনেক চেষ্টা করা হয়েছিল, কিন্তু কিছুই বদলায়নি। বিচ্ছেদ অনেক দিন আগে হয়েছিল। কয়েক মাস আগে বিচ্ছেদের আবেদন করেছিলেন দম্পতি। জুলাই থেকে অগস্টের মধ্যে কাগজপত্র স্বাক্ষরিত এবং চূড়ান্ত করা হয়েছে। সন্তানদের হেফাজতের সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে।’’
‘পাওয়ার কাপল’ জয়-মাহির বিচ্ছেদ নিয়ে এত জল্পনা-গুজব তৈরি হলেও, তাঁদের প্রেমের শুরুটা কিন্তু ছিল রূপকথার মতো।
বিখ্যাত টেলিভিশন তারকা জয় এবং মাহির প্রথম দেখা হয়েছিল এক বন্ধুর পার্টিতে। তার পর বেশ কিছু দিন যোগাযোগ ছিল না তাঁদের। বছরখানেক পর একটি নাইটক্লাবে আবার দেখা হয়। ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। বয়সে দুই বছরের বড় মাহির প্রেমে পড়েন জয়।
মাহিই ছিলেন জয়ের প্রথম বান্ধবী। জানা যায়, ২০০৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর টেলি অভিনেত্রী মাহিকে বিয়ের প্রস্তাব দেন অভিনেতা-উপস্থাপক জয়। ২০১১ সালের মাঝামাঝি বিয়ে করেন তাঁরা।
বিয়ের দু’বছর পর, জনপ্রিয় একটি নাচের রিয়্যালিটি শোয়ে অংশগ্রহণ করেন জয় এবং মাহি। শুধুমাত্র তারকা দম্পতিরাই ওই রিয়্যালিটি শোয়ে অংশ নিতে পারতেন। জয় এবং মাহি সেই শো জেতেন। তাঁদের জনপ্রিয়তাও বাড়ে।
২০১৭ সালে খুশি এবং রাজবীর নামে দু’টি শিশুকে দত্তক নেন জয়-মাহি। ২০১৯ সালে মাহি কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। নাম রাখেন তারা। ইনস্টাগ্রামে সন্তানদের নিয়ে প্রায়ই ছবি পোস্ট করতেন দম্পতি। একত্রে ভ্লগও করতেন।
দম্পতির মধ্যে সমস্যা নাকি শুরু হয় ২০২৪ সাল থেকে। জানা গিয়েছে, জয়ের সঙ্গে মাহির সমস্যার সূত্রপাত ‘সন্দেহজনিত’ কারণে। জুন মাসের পর থেকে নাকি সেই সমস্যা তীব্র আকার ধারণ করে।
একে অপরের সঙ্গে ছবি পোস্টের ধুম কমতে থাকে যুগলের। খুব কমই একে অপরের ইনস্টাগ্রাম পোস্ট এবং রিলে মুখ দেখাতে শুরু করেন তাঁরা।
শেষ বার কন্যা তারার জন্মদিনে একসঙ্গে দেখা গিয়েছিল জয়-মাহিকে। তবে সেখানেও তাঁদের দূরত্ব বজায় রাখতে দেখা গিয়েছিল বলেই খবর।
এর মধ্যে জল্পনা ছড়িয়ে পড়ে, মাহি নাকি জয়ের বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছেন। সন্তানদের নিয়ে অন্যত্র বাস করছেন তিনি।
সম্প্রতি তারাকে নিয়ে টোকিয়ো ঘুরতে গিয়েছিলেন জয়। সেই ছবি পোস্ট করেছিলেন ইনস্টাগ্রামের পাতায়। মাহিও সেই ছবিতে কমেন্ট করেছিলেন।
এর আগে জুলাই মাসে দম্পতির বিচ্ছেদ নিয়ে কানাঘুষো শোনা গেলে, মাহি পরিষ্কার জানিয়েছিলেন, সে বিষয়ে কাউকে জবাব দিতে তিনি বাধ্য নন। তিনি বলেন, ‘‘যদি বিচ্ছেদের কথা সত্যি হয়, তবুও কেন আমি কাউকে সে কথা বলব? মানুষ কেবল কাউকে দোষারোপ করতে চায়। সেটা এমনিও করবে। কিন্তু সত্যি বদলাবে না।’’
মাহি আরও বলেন, ‘‘মানুষ বিবাহবিচ্ছেদকে খুব আলাদা ভাবে দেখে। সকলে মনে করে বিচ্ছেদ মানেই একে অপরের দিকে কাদা ছোড়াছুড়ি হবে। আমার মনে হয় সকলের উচিত বাঁচা এবং বাঁচতে দেওয়া। সমাজের অনেক চাপ মানুষের উপর।’’
সব ছবি: সংগৃহীত।