Buying Venomous Snakes In China

নীল রঙের তীব্র বিষাক্ত সাপে মজেছেন চিনা তরুণ-তরুণীরা! বিপুল খরচ করে পুষছেন পিট ভাইপার, নেপথ্যে কী কারণ?

ইদানীং এশিয়ার একটি দেশের তরুণদের মধ্যে অদ্ভুত প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। একটি বিশেষ কারণে পোষ্য হিসাবে নির্বিষ নয়, বরং বিষধর সাপকেই বেছে নিচ্ছেন তাঁরা।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৬:২৪
০১ ১৫
Buying Venomous Snakes In China

সাপ দেখলেই আত্মারাম খাঁচাছাড়া হওয়ার জোগাড় হয় না এমন মানুষ বোধহয় হাতেগোনা। গায়ের উপর সাপ উঠলে গা ঘিনঘিন করে ওঠে অনেকেরই। শীতল রক্তের প্রাণীদেহের স্পর্শে এসে শরীর হিম ও অসাড় হয়ে যেতে বাধ্য। সাপের চেহারা নজরে পড়লে বেশির ভাগেরই সকলের আগে যে অনুভূতিটি কাজ করে সেটি হল ভয়।

০২ ১৫
Buying Venomous Snakes In China

আর মেরুদণ্ড দিয়ে নামা হিমশীতল অনুভূতিকে যাঁরা জয় করে নেন তাঁদের পক্ষেই সাপের সঙ্গে ওঠাবসা করা সম্ভব হয়। এ জগতে তাঁদের সংখ্যাও নেহাত কম নেই। ‘বাবুরাম সাপুড়ে’ হয়ে ওঠার জন্য গাঁটের কড়ি খরচ করতেও পিছপা হন না তাঁরা। সমাজমাধ্যমে এমন বহু ভিডিয়োই নজরে আসে যেখানে দেখা গিয়েছে পুঁচকে সাপ থেকে শুরু করে অতিকায় অজগর পর্যন্ত পোষ্য বানিয়ে ফেলেছেন অনেকে।

০৩ ১৫
Buying Venomous Snakes In China

সাপের ছোবল মানেই তা প্রাণঘাতী— এই ধারণা বেশির ভাগ মানুষেরই। অনেকেই জানেন না বেশির ভাগ সাপই নির্বিষ। সেগুলি কামড়ালে প্রাণসংশয় হয় না। তবে ইদানীং এশিয়ার একটি দেশের তরুণদের মধ্যে অদ্ভুত প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। একটি বিশেষ কারণে নির্বিষ নয়, বরং পোষ্য হিসাবে বিষধর সাপকেই বেছে নিচ্ছেন তাঁরা।

Advertisement
০৪ ১৫
Buying Venomous Snakes In China

কাছে গেলেই হিস হিস করে ওঠে। ছোবল মারলেই ভবলীলা সাঙ্গ। মারাত্মক বিষ নিমেষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে শরীরে। মস্তিষ্কের কাজ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাবে। কেউটে, গোখরো, শঙ্খচূড়ের মতো এই সাপ ‘কোবরা’ গোত্রের নয়। ভাইপার গোত্রের।

০৫ ১৫
Buying Venomous Snakes In China

ভাইপারদের বিষ যেমন ভয়ঙ্কর, তেমনই উত্তাপ বোঝার ক্ষমতাও নিখুঁত। এদের চোখ আর নাকের মাঝামাঝি ছোট্ট গর্তের (পিট) মতো সংবেদী স্নায়ু আছে। এর সাহায্যে যে কোনও প্রাণীর দেহে উষ্ণ রক্তের চলাচল বুঝলেই ছোবল বসায়।

Advertisement
০৬ ১৫
Buying Venomous Snakes In China

এই কালান্তক সাপগুলির মধ্যে একটি হল পিট ভাইপার। ডিজ়নির অ্যানিমেটেড সিক্যুয়েল ‘জুটোপিয়া ২’ ২৬ নভেম্বর প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে। এই ছবির একটি চরিত্র চিনের তরুণ দর্শকের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। ছবির নতুন একটি চরিত্র গ্যারি ডি’স্নেক। হঠাৎ করেই এই চরিত্রটি তরুণ-তরুণীদের মনে দারুণ প্রভাব বিস্তার করেছে।

০৭ ১৫
Buying Venomous Snakes In China

চরিত্রটি আদতে একটি নীল রঙের সাপের আদলে তৈরি। এই চরিত্রটি দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে বিষাক্ত সাপ কেনার একটা উন্মাদনা তৈরি হয়েছে চিনের তরুণ প্রজন্মের মধ্যে। একটি বিশেষ ধরনের সাপের প্রতি তাঁদের ভালবাসা বাড়ছে বলে সে দেশের সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হয়েছে।

Advertisement
০৮ ১৫
Buying Venomous Snakes In China

গ্যারি ডি’স্নেক নামের এই চরিত্রটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় পাওয়া পিট ভাইপার বা এশীয় গোখরোর কথা মাথায় রেখে তৈরি করা হয়েছে। সংবাদমাধ্যম প্রতিবেদন অনুসারে, চিনা যুবক কিউ ওয়েইহাও সম্প্রতি ছবিটি মুক্তির পর একটি সুন্দর অথচ অত্যন্ত বিষাক্ত নীল সাপ কিনেছেন। এটিকে তাঁর পোষা প্রাণীর মতো যত্ন করা শুরু করেছেন তিনি।

০৯ ১৫
Buying Venomous Snakes In China

চিনে ‘জুটোপিয়া ২’ প্রিমিয়ার হওয়ার মাত্র দু’দিন পরই কিউ ১ হাজার ৮৫০ ইউয়ান (প্রায় ২৬০ ডলার) দিয়ে একটি ইন্দোনেশিয়ান পিট ভাইপার কিনেছিলেন।

১০ ১৫
Buying Venomous Snakes In China

ছবিটির প্রভাব জনমানসে এতটাই পড়েছে যে, চিনের বাজারে এই বিশেষ ধরনের সাপের অভাব দেখা গিয়েছে। অনলাইনে বিষাক্ত সাপগুলি অর্ডারের হিড়িক পড়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই। চিনা সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, অনলাইনের বেশির ভাগ ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মে ব্লু পিট ভাইপার বিক্রি করা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। সাপের দাম উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়ে গিয়েছে, কয়েকশো থেকে কয়েক হাজার ইউয়ানে বিক্রি হচ্ছে পিট ভাইপারের মতো বিষধর সাপগুলি।

১১ ১৫
Buying Venomous Snakes In China

অ্যানিমেটেড ছবিটিতে সাপের চরিত্র গ্যারি ডি’স্নেককে কণ্ঠ দিয়েছেন হু কোয়ান। দর্শক জানিয়েছেন যে, সাপের চরিত্রটিকে অত্যন্ত ইতিবাচক এবং মনোমুগ্ধকর করে তুলে ধরা হয়েছে সিনেমায়। ৩৫৫ কোটি ডলারেরও বেশি আয় করেছে অ্যানিমেটেড এই চলচ্চিত্রটি। ছবিটি বিদেশি ছবির আয়ের রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। এর আগে, এই রেকর্ডটি ২০১৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘জুটোপিয়া ১’-এর দখলে ছিল।

১২ ১৫
Buying Venomous Snakes In China

তরুণ চিনা প্রজন্মের মধ্যে সরীসৃপ জাতীয় প্রাণী পোষার জনপ্রিয়তা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। চিনা সংবাদ সংস্থা ‘সিনহুয়ার’ একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের শেষ নাগাদ চিনে ১ কোটি ৭০ লক্ষেরও বেশি মানুষের কাছে বিদেশি পোষা প্রাণী ছিল, যার বাজারদর প্রায় ১০০০ কোটি ইউয়ান (প্রায় ১.৪ বিলিয়ন ডলার)।

১৩ ১৫
Buying Venomous Snakes In China

চিনের আইন অনুসারে ‘জীবন্ত প্রাণী’ বা ‘বিষাক্ত বিপজ্জনক জিনিস’ কুরিয়ারে পাঠানো নিষিদ্ধ। তবে সে দেশে ইন্দোনেশিয়ান পিট ভাইপার রাখা অবৈধ নয়। আইনের চোখকে ফাঁকি দিতে গোপনে অনলাইনে এই বিষাক্ত সাপগুলি অর্ডার করছেন চিনারা। অনেকে আবার দোকানে গিয়েও কিনে আনছেন বিষাক্ত সাপ।

১৪ ১৫
Buying Venomous Snakes In China

সরকারও স্বীকার করে নিয়েছে দেশে রঙিন সাপের কেনাকাটা বেড়েছে। সেগুলি সুন্দর হওয়ার পাশাপাশি অত্যন্ত বিষাক্তও। সরকার-অনুমোদিত সংবাদপত্র ‘দ্য বেজিং নিউজ়’-এর একটি প্রতিবেদন অনুসারে, সরকার মনে করছে, যদি কোনও বিষাক্ত সাপ পালিয়ে যায় বা আক্রমণ করে বসে তবে বড়সড় সমস্যার মুখোমুখি হবেন নাগরিকেরা। তা জননিরাপত্তার জন্যও প্রতিকূলতা তৈরি করতে পারে।

১৫ ১৫
Buying Venomous Snakes In China

নীল পিট ভাইপারের বৈজ্ঞানিক নাম ট্রাইমেরেসুরাস ইনসুলারিস। নীল ইনসুলারিস বা সাদা ঠোঁটের পিট ভাইপার নামেও এটি পরিচিত। এটি অত্যন্ত বিষাক্ত। শক্তিশালী হেমোটক্সিক বিষের অধিকারী সাপটির দংশনে তীব্র ব্যথা হয়। সঙ্গে কামড়ের স্থান ফুলে যায় এবং রক্তপাত হয়। অ্যান্টিভেনম প্রয়োগ করলে এর কামড়ে মানুষের মৃত্যু বিরল। তবে কামড়ের ফলে তীব্র টিস্যু ক্ষয় বা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিকল হতে পারে।

সব ছবি:সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও গ্যালারি