Sex reassignment

আট মাস বয়সে বাদ যায় যৌনাঙ্গ! বড় হন মেয়ের পরিচয়ে, সত্যি জানার পর ভয়ঙ্কর সিদ্ধান্ত নেন ব্রুস

ব্রুসের যখন আট মাস বয়স, তখন তাঁর বিশেষ অঙ্গের অস্ত্রোপচার করতে হয়। সে সময়ই চিকিৎসকের অসতর্কতার কারণে ব্রুসের যৌনাঙ্গ পুড়ে যায়। সম্পূর্ণ বাদ দিতে হয় ওই অঙ্গকে। এর পরই শুরু হয় ব্রুসের জীবনযুদ্ধ।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০২৫ ০৯:৩৭
০১ ১৮
Bruce Reimer

মাত্র আট মাস বয়সে চিকিৎসকের অসতর্কতায় হারিয়ে ফেলেন পুরুষত্ব। বড় হন স্ত্রী হরমোন নিয়ে। শেষমেশ নিজেকে মেনে নিতে না পেরে চরম সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন কানাডার ব্রেন্ডা ওরফে ব্রুস পিটার রেইমার।

০২ ১৮
Bruce Reimer

দিনটা ছিল ১৯৬৫ সালের ২২ অগস্ট। কানাডার রন রেইমার এবং জ্যানেট রেইমারের পরিবারে জন্ম হয় ফুটফুটে যমজ সন্তানের। দুই পুত্রসন্তানের নাম রাখা হয় ব্রায়ান রেইমার এবং ব্রুস পিটার রেইমার।

০৩ ১৮
Bruce Reimer

শুরুতে রন এবং জ্যানেট বেশ খুশিতেই ছিলেন তাঁদের পুত্রসন্তানদের নিয়ে। কিন্তু সে সুখ বেশি দিন তাঁদের ভাগ্যে জোটেনি। দুই সন্তানের মধ্যে এক সন্তানের সঙ্গে ঘটে যায় ভয়াবহ দুর্ঘটনা।

Advertisement
০৪ ১৮
Bruce Reimer

ব্রুসের যখন আট মাস বয়স, তাঁর বিশেষ অঙ্গের অস্ত্রোপচার করতে হয়। সে সময়ই চিকিৎসকের অসতর্কতার কারণে ব্রুসের যৌনাঙ্গ পুড়ে যায়। সম্পূর্ণ বাদ দিতে হয় ওই অঙ্গকে।

০৫ ১৮
Bruce Reimer

পুত্রসন্তান জন্মেছে, অথচ তাঁর পুরুষত্বই থাকবে না! এই চিন্তায় রাতের ঘুম উড়ে যায় রন-জ্যানেটের। কী ভাবে সন্তানকে সুস্থ করে তোলা যায় সেই চিন্তাই কুরে কুরে খেতে থাকে। অবশেষে এক যৌন গবেষকের দ্বারস্থ হন অসহায় বাবা-মা।

Advertisement
০৬ ১৮
Bruce Reimer

চিকিৎসক জন মানি তাঁদের পরামর্শ দেন ব্রুসকে মহিলার মতো করে বড় করার। তাঁর মতামত ছিল, শিশুকে যে ভাবে বড় করা হবে, সে সেই মানসিকতারই হয়ে উঠবে, এর সঙ্গে শিশু কোন লিঙ্গ নিয়ে বড় হচ্ছে তার কোনও সম্পর্ক নেই।

০৭ ১৮
Bruce Reimer

কিছু প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, চিকিৎসক মানি নাকি ব্রুসের উপর গবেষণা করতেই এমন পরামর্শ দিয়েছিলেন রন-জ্যানেটকে। একজন পুরুষকে আদৌ মহিলার রূপ দেওয়া যায় কি না সেটা গবেষণা করাই ছিল মানির মূল উদ্দেশ্য।

Advertisement
০৮ ১৮
Bruce Reimer

মানসিক ভাবে ঠিক-ভুল বিচার করার মতো পরিস্থিতিতে ছিলেন না রন-জ্যানেটের কেউই। তাই চিকিৎসকের এমন পরামর্শকেই সঠিক বলে মেনে নেন। সিদ্ধান্ত নেন তাঁদের পুত্রসন্তানকে বড় করবেন কন্যাসন্তানের মতোই।

০৯ ১৮
Bruce Reimer

ব্রুসের নাম দেওয়া হয় ব্রেন্ডা। এক জন মহিলার শরীরে যা যা অঙ্গ থাকে, ব্রুসের শরীরেও সেই সবের অস্ত্রোপচার করা হয়। মহিলাদের হরমোন যেতে থাকে ব্রুসের মধ্যে। মেয়েরা যেমন জামা পরে, চুল বাঁধে, সেই সবেই ব্রুসকে অভ্যস্ত করে তোলা হয়।

১০ ১৮
Bruce Reimer

ব্রুস জন্মগত ভাবে পুরুষ, সে কথা প্রথমে লুকিয়ে গিয়েছিলেন তাঁর বাবা-মা। এমনকি যমজ ভাইকেও আসল সত্যি জানানো হয়নি। ব্রুস মেয়ের আদলে বড় হলেও ভিতর থেকে কিছুতেই নিজেকে মহিলা হিসাবে মেনে নিতে পারছিলেন না। তাঁর কথাবার্তা, চলন-বলনও ছিল পুরুষের মতোই।

১১ ১৮
Bruce Reimer

কিশোর বয়সে পৌঁছে বার বার ব্রুসের মনে প্রশ্ন তৈরি হত— কেন তিনি অন্যদের মতো নন? ছেলেকে মেয়ে হিসাবে বড় করলেও আদতে কোনও লাভ হচ্ছে না, সেটা খুব ভাল ভাবেই উপলব্ধি করতে পারছিলেন বাবা রন। তাই তিনি ব্রুসের ১৫ বছর বয়সে সত্যিটা জানিয়ে দিয়েছিলেন তাঁকে।

১২ ১৮
Bruce Reimer

ব্রেন্ডা যে তিনি নন, আসলে একজন পুরুষ— সেটা জানতে পেরে একেবারেই ভেঙে পড়েননি ব্রুস। বরং তিনি খুবই খুশি হয়েছিলেন। সত্যি জানার পরই সিদ্ধান্ত নেন, তিনি আর মহিলা হিসাবে বাঁচবেন না।

১৩ ১৮
Bruce Reimer

মেয়ে হিসাবে হরমোন নিতে অস্বীকার করেন ব্রুস। এ বার নিজেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নেন। মহিলা হিসাবে যা যা অস্ত্রোপচার হয়েছিল, ফের অস্ত্রোপচার করে সেই সব কিছুকে বাদ দিয়ে দেন। পুরুষাঙ্গ তৈরির জন্যও চিকিৎসা করাতে থাকেন।

১৪ ১৮
Bruce Reimer

নাম পরিবর্তন করে নিজের নাম রাখেন ডেভিড। পড়াশোনা শেষ করে একটি ছোট সংস্থায় কাজ শুরু করেন ব্রুস। ১৯৯০ সালে বিয়েও করেন এক মহিলাকে। বিবাহের সময় তাঁর হবু স্ত্রী জেন ফন্টেনের তিন সন্তান ছিল। বিয়ের পর তিন সন্তানকে সৎবাবা হিসাবে লালন-পালনের দায়িত্ব নেন ব্রুস।

১৫ ১৮
Bruce Reimer

মহিলা থেকে পুরুষে পরিবর্তন হওয়ায় ব্রুস খুশি হলেও সমাজের কাছে নানা টিপ্পনীর সম্মুখীন হতে হত তাঁকে। ব্রুসের সব বন্ধুরাও ধীরে ধীরে দূরে সরে গিয়েছিলেন। অনেকেই তাঁর মেয়ে থেকে ছেলে হওয়ার রূপান্তর মেনে নিতে পারছিলেন না। এমনকি বিয়ের পর সংসার জীবনও খুব একটা সুখের হয়নি ব্রুসের। প্রায়শই নানা কারণে মতবিরোধ হত স্ত্রীর সঙ্গে।

১৬ ১৮
Bruce Reimer

বার বার অস্ত্রোপচারে বিপুল টাকা খরচ হয়ে গিয়েছিল রনের। আর্থিক দিক থেকে একেবারে ভেঙে পড়েছিল তাঁদের পরিবার। ব্রুসও কখনওই ভাল চাকরির সুযোগ পাননি। অন্য দিকে তাঁর যমজ ভাইও মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন দীর্ঘ দিন ধরে।

১৭ ১৮
Bruce Reimer

২০০২ সালে ব্রুসের ভাই আত্মহত্যা করেন। ভাইয়ের মৃত্যু ব্রুসকে সম্পূর্ণ ভাবে ভেঙে দিয়েছিল। এক দিকে সংসারের অশান্তি, অন্য দিকে সমাজের টিপ্পনী, দুর্বল অর্থনৈতিক পরিস্থিতি— কী ভাবে সব সামলে উঠবেন তার কূলকিনারা খুঁজে পাচ্ছিলেন না। শেষমেশ ভয়ঙ্কর পদক্ষেপ করেন, ভাইয়ের মৃত্যুর দু’বছর পর ব্রুসও আত্মহত্যার পথ বেছে নেন।

১৮ ১৮
Bruce Reimer

৩৮ বছর বয়সে নিজেই নিজেকে গুলি করে হত্যা করেন। ব্রুসের কাহিনি চিকিৎসামহলেও যেমন আলোড়ন ফেলেছিল, তেমন ভাবেই সমাজের মধ্যেও বিশেষ দৃষ্টান্ত তৈরি করেছিল। মাইকেল জ্যাকসন-সহ বহু তারকাই রয়েছেন, যাঁরা নিজের শরীরের নানা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের অস্ত্রোপচার করিয়েছিলেন, কিন্তু ব্রুসের মর্মান্তিক সত্যিকে যে ভাবে তাঁর মা-বাবা এবং চিকিৎসকেরা মিথ্যের আবরণে ঢাকতে চেয়েছিলেন, তা সমাজের কাছে বেশ আলোচিত একটি বিষয় হয়ে গিয়েছিল।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও গ্যালারি