কাতারকাণ্ডের পর আতঙ্কে আরব দুনিয়া! প্রমাদ গুনছে ‘ইউরোপের রুগ্ন মানুষ’ হিসাবে পরিচিত তুরস্কও। আঙ্কারার আশঙ্কা, দোহার পর এ বার তাদের নিশানা করবে ইজ়রায়েল। আর তাই এই ইস্যুতে ইহুদিদের সতর্ক করে ইতিমধ্যেই হুঙ্কার ছেড়েছেন সাবেক অটোমান সাম্রাজ্যের কর্তাব্যক্তিরা। অন্য দিকে প্যালেস্টাইনপন্থী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসকে আশ্রয় দিলে তেল আভিভ যে রেয়াত করবে না, পাল্টা হুমকিতে তা স্পষ্ট করেছেন ইজ়রায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। ফলে পশ্চিম এশিয়ার সংঘাতকে নিয়ে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকেরা।
ইজ়রায়েল-তুরস্ক বিবাদের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। ১৯৪৮ সালে আরব দুনিয়ায় ইহুদি রাষ্ট্রের জন্ম হওয়া ইস্তক এর অস্তিত্ব মানতে অস্বীকার করে আঙ্কারা। শুধু তা-ই নয়, ‘ইউরোপের রুগ্ন মানুষ’টিকে প্যালেস্টাইনের কট্টর সমর্থক বললে অত্যুক্তি হবে না। তেল আভিভের অভিযোগ, সেই কারণেই দেশের ভিতরে হামাস নেতৃত্বকে আশ্রয় দেওয়া, তহবিল সংগ্রহ এবং সংগঠনের বিস্তার ঘটানোর অবাধ অনুমতি দিয়ে রেখেছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিচেপ তায়িপ এর্ডোয়ান। তাঁদের শেষ করতে কাতার মডেলে সামরিক অভিযানের পরিকল্পনা রয়েছে ইজ়রায়েলের, বলছে আতঙ্কিত আঙ্কারা।
বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই গণমাধ্যমে মুখ খুলেছেন তুরস্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল জেকি আকতুর্ক। তিনি বলেছেন, ‘‘কাতারের কায়দায় আমাদের উপরে বেপরোয়া আক্রমণ শানালে, ইজ়রায়েলকে তার ফল ভুগতে হবে। এতে নিজেদের দেশ তো বটেই গোটা এলাকায় বিপর্যয় ডেকে আনবে ইহুদিরা।’’ তবে তাঁর ওই হুমকি নেতানিয়াহু সরকার যে খুব একটা পাত্তা দিচ্ছে, এমনটা নয়। সূত্রের খবর, হামাসের শীর্ষনেতাদের খুঁজে খুঁজে শেষ করতে অতি সক্রিয় হয়েছে তেল আভিভের গুপ্তচর সংস্থা মোসাদ।
প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকদের অবশ্য দাবি, কাতার মডেলে তুরস্ককে নিশানা করা ইজ়রায়েলের পক্ষে মোটেই সহজ নয়। কারণ, সামরিক শক্তির নিরিখে দোহার চেয়ে অনেকটাই এগিয়ে আছে আঙ্কারা। আরব দেশটির মতো নিজেদের নিরাপত্তার দায়িত্ব পুরোপুরি ভাবে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে দেননি প্রেসিডেন্ট এর্ডোয়ান। উল্টে ক্রমাগত সেনাবাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। পাশাপাশি, কূটনৈতিক চালে ইসলামিক রাষ্ট্রগুলির উপরে প্রভাব খাটিয়ে পুরনো অটোমান সাম্রাজ্যকে নতুন করে তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর।
দ্বিতীয়ত, ভারতের মতোই তুর্কি সেনার হাতে রয়েছে রাশিয়ার ‘এস-৪০০ ট্রায়াম্ফ’ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা (এয়ার ডিফেন্স)। হালফিলের ‘অপারেশন সিঁদুর’ এবং তাকে কেন্দ্র করে চলা পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধে নিজের জাত চিনিয়েছে মস্কোর ওই হাতিয়ার। ‘এস-৪০০’কে ব্যবহার করে অনায়াসেই ইসলামাবাদের ক্ষেপণাস্ত্র এবং লড়াকু জেটকে মাঝ-আকাশে ধ্বংস করেছে এ দেশের ফৌজ। আঙ্কারার আকাশসীমা লঙ্ঘন করলে ইহুদিদের যুদ্ধবিমানেরও একই পরিণতি হতে পরে, বলছেন সাবেক সেনাকর্তাদের একাংশ।
তৃতীয়ত, মার্কিন নেতৃত্বাধীন ইউরোপীয় সামরিক জোট ‘উত্তর আটলান্টিক চুক্তি সংস্থা’ বা নেটোর (নর্থ আটলান্টিক ট্রিটি অর্গানাইজ়েশন) অন্যতম সদস্য হল তুর্কি। ফলে ইহুদিদের হাতে আক্রান্ত হলেই সংশ্লিষ্ট সমঝোতাটির পাঁচ নম্বর ধারাকে সক্রিয় করার দাবি তুলতে পারে আঙ্কারা। সেখানে বলা আছে, অন্য কোনও শক্তি নেটো-ভুক্ত কোনও দেশে আক্রমণ শানালে তাঁর পাশে এসে দাঁড়াবে সংগঠনের সমস্ত দেশ। একসঙ্গে আক্রমণকারীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করবে তারা। উল্লেখ্য, বর্তমানে আমেরিকা-সহ নেটোতে রয়েছে ৩২টি দেশ।
চতুর্থত, নেটো-ভুক্ত দেশগুলির মধ্যে দ্বিতীয় বৃহত্তম সেনাবাহিনী রয়েছে তুরস্কের হাতে। গত কয়েক বছর ধরেই পঞ্চম প্রজন্মের ‘স্টেল্থ’ শ্রেণির লড়াকু জেট তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে আঙ্কারা। সংশ্লিষ্ট যুদ্ধবিমানটির নাম ‘কান’ রেখেছেন তুর্কি প্রতিরক্ষা গবেষকেরা। এ ছাড়া শক্তিশালী ড্রোনবাহিনী রয়েছে তাদের। তারা বের্যাক্টার টিবি-২ নামের একটি মানববাহিনী উড়ুক্কু যান ব্যবহার করে। সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ থেকে শুরু করে আর্মেনিয়া-আজ়ারবাইজানের লড়াই, বিভিন্ন রণাঙ্গনে ‘গেম চেঞ্জার’ হিসাবে নিজেকে প্রমাণ করেছে ওই ড্রোন।
চলতি বছরের জুলাইয়ে দেশের অন্যতম বড় শহর ইস্তানবুলে চলা ‘আন্তর্জাতিক প্রতিরক্ষা শিল্প মেলা ২০২৫’-এ প্রথম বার হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রকাশ্যে আনে তুরস্ক। নাম, ‘টাইফুন ব্লক ৪’। সাড়ে ছ’মিটার লম্বা সংশ্লিষ্ট ক্ষেপণাস্ত্রটি শব্দের আট গুণ বেগে ছুটতে পারে বলে দাবি করেছে আঙ্কারার একাধিক গণমাধ্যম। বিস্ফোরকবোঝাই অবস্থায় এর ওজন ২,৩০০ কিলোগ্রাম। হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রটির পাল্লা প্রায় ৮০০ কিলোমিটার বলে জানা গিয়েছে। হাতিয়ারটির নকশা তৈরি করেছে তুরস্কের জনপ্রিয় প্রতিরক্ষা সংস্থা ‘রকেটসান’।
এ বছরের জুনে ইরান-ইজ়রায়েল যুদ্ধের সময় হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের ধ্বংসক্ষমতা প্রত্যক্ষ করে বিশ্ব। সাবেক পারস্য দেশের ছোড়া ওই মারণাস্ত্রগুলিকে ঠেকাতে পুরোপুরি ব্যর্থ হয় ইহুদিদের অত্যাধুনিক এয়ার ডিফেন্স। ফলে তেল আভিভ-সহ ইজ়রায়েলের একাধিক শহরের ভিত পর্যন্ত নড়ে যায় তেহরানের হাইপারসনিক ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে। চোখের নিমেষে সেখানকার একাধিক অট্টালিকাকে ধুলোয় মিশিয়ে দেয় ওই ‘ব্রহ্মাস্ত্র’। তুরস্ককে নিশানা করতে গিয়ে অবশ্য সেই স্বাদ দ্বিতীয় বার পেতে চাইবেন না প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু।
এগুলিকে বাদ দিলে তুরস্কের ভিতরে ঢুকে হামাস-নিধনে ইজ়রায়েলের অন্যতম বড় কাঁটা হতে পারে প্রতিবেশী সিরিয়া। গত বছরের ডিসেম্বরে দামাস্কাসের ক্ষমতা দখল করে ‘হায়াত তাহরির আল-শাম’ (এইচটিএস) নামের একটি বিদ্রোহী গোষ্ঠী। ফলে দেশ ছেড়ে পালিয়ে রাশিয়ায় আশ্রয় নেন প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ। তাঁর স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন আহমেদ আল-শারা। বিশ্লেষকদের দাবি, সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে পর্দার আড়ালে থেকে এইচটিএসকে সাহায্য জুগিয়ে গিয়েছে তুরস্ক। ফলে প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট বিদ্রোহী গোষ্ঠীটিকে যে আঙ্কারা ব্যবহার করতে পারে, তা বলাই বাহুল্য।
গত শতাব্দীর ৬০ এবং ৭০-এর দশকে আরব-ইজ়রায়েল যুদ্ধের সময় বরাবরই ইহুদিদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরে এসেছে সিরিয়া। বর্তমানে তেল আভিভের দখলে থাকা গোলান মালভূমি (গোলান হাইট্স) একসময়ে ছিল দামাস্কাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ। গত বছর সেখানে ক্ষমতার পালাবদল হতেই সংশ্লিষ্ট মালভূমিটির বাফার জ়োন টপকে সিরিয়ার দিকে সীমান্ত বিস্তারে সেনাবাহিনীকে নির্দেশ দেন ইহুদি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু। শুধু তা-ই নয়, দ্রুজ় উপজাতিদের উপর নির্যাতনের অভিযোগ তুলে শেষ ১০ মাসে বহু বার উত্তরের প্রতিবেশী দেশটির বিভিন্ন এলাকায় বোমাবর্ষণ করেছে তেল আভিভ।
চলতি বছরের অগস্টে দামাস্কাসের শারা সরকারের সঙ্গে একটি চুক্তি করে আঙ্কারা। সেই সমঝোতা অনুযায়ী সিরিয়ার ভিতরে বিমানঘাঁটি তৈরি এবং ব্যবহারের অনুমতি পেয়েছে তুরস্ক। এই ঘটনাকে নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বড় চ্যালেঞ্জ হিসাবে দেখছে নেতানিয়াহুর সরকার। বিশ্লেষকদের দাবি, তখন থেকেই ইহুদিদের গুপ্তচর সংস্থা মোসাদের রেডারে চলে আসে এর্ডোয়ান সরকার। পাশাপাশি, তুরস্কের ঘোর শত্রু গ্রিস এবং সাইপ্রাস সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধির দিকে নজর দিয়েছে তারা।
বিশেষজ্ঞদের অনুমান, হামাস-নিধনে ইহুদি ফৌজ শেষ পর্যন্ত তুরস্ককে নিশানা করলে ভূমধ্যসাগরীয় এলাকায় ছড়িয়ে পড়বে যুদ্ধ। তবে সেটা এড়াতে অন্য কৌশল অবলম্বন করতে পারে ইজ়রায়েল। গুপ্ত ঘাতকদের ব্যবহার করে প্যালেস্টাইনপন্থী সশস্ত্র গোষ্ঠীটির নেতাদের বেছে বেছে খুন করার রাস্তা নিতে পারে মোসাদ। অতীতে এই কায়দায় বহু বার সাফল্যের সঙ্গে শত্রুদের নিকেশ করেছে তারা। গত বছর প্যালেস্টাইনপন্থী হিজ়বুল্লাকে শিক্ষা দিতে পেজার বিস্ফোরণের মাধ্যমে আক্রমণ শানায় ইহুদি গুপ্তচরেরা। তুরস্কতেও সেই ছবির পুনরাবৃত্তি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
তা ছাড়া নেটো-ভুক্ত আঙ্কারা আক্রান্ত হলে সংশ্লিষ্ট সামরিক জোটটির সাহায্য তারা কতটা পাবে, তা নিয়ে যথেষ্ট ধোঁয়াশা রয়েছে। কারণ, যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন পুরোপুরি ভাবে রয়েছে তেল আভিভের দিকে। নেটোর অন্য সদস্যগুলির মধ্যে তুরস্কের সবচেয়ে বড় শত্রু হল গ্রিস। অন্য দিকে ব্রিটেন ও জার্মানির পাল্লা আবার ঝুঁকে আছে ইহুদিদের দিকে। সাম্প্রতিক সময়ে প্যালেস্টাইনকে মান্যতা দেওয়ার কথা বলেছে ফ্রান্স। তবে তুরস্কের জন্য ইজ়রায়েলের সঙ্গে তারা সংঘাতে জড়াবে, এই ধারণা কষ্টকল্পিত।
গত ৯ সেপ্টেম্বর কাতারের রাজধানী দোহায় বোমাবর্ষণ করে ইজ়রায়েলি বিমানবাহিনী। ইহুদিদের নিশানায় ছিল সেখানে জড়ো হওয়া হামাসের শীর্ষ নেতৃত্ব। আরব দুনিয়ার এই উপসাগরীয় দেশটির আল-উদেইদ বিমানঘাঁটিতে রয়েছে পশ্চিম এশিয়ার বৃহত্তম মার্কিন সামরিক ছাউনি। ইজ়রায়েলি হামলার সময় সেখানকার সৈনিকেরা যে ‘শীতঘুমে’ ছিলেন, তা বলাই বাহুল্য। সক্রিয় হয়নি সংশ্লিষ্ট ঘাঁটিতে মোতায়েন থাকা আমেরিকার ‘প্যাট্রিয়ট আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা’।
দোহাকাণ্ডের পর ইসলামীয় দেশগুলির সঙ্গে যোগাযোগ করে কাতার। সেই বৈঠকে ছিলেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট এর্ডোয়ান। সংশ্লিষ্ট সম্মেলনে নেটোর কায়দায় সামরিক জোট এবং বাহিনী তৈরির উঠেছে প্রস্তাব। তবে সেটা কতটা ফলপ্রসূ হবে, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। কারণ পশ্চিম এশিয়ার আরব মরুর একাধিক এলাকায় ছড়িয়ে আছে আমেরিকার সেনাছাউনি। ইজ়রায়েলের বিরুদ্ধে এই ধরনের কোনও জোটকে যে ওয়াশিংটন দানা বাঁধতে দেবে না, তাতে কোনও সন্দেহ নেই।
কাতারে বোমাবর্ষণের পর ‘ড্যামেজ কন্ট্রোল’-এ অবশ্য প্রকাশ্যে ইজ়রায়েলের সমালোচনা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুধু তা-ই নয়, তড়িঘড়ি বিদেশসচিব মার্কো রুবিয়োকে তেল আভিভে পাঠান তিনি। তাঁর সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করেন ইহুদি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু। পরে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমেরিকার সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্ব অত্যন্ত গভীর। আগামী দিনে এই সম্পর্ককে আরও মজবুত করতে ইজ়রায়েল প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’’
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর প্যালেস্টাইনের গাজ়া থেকে ইজ়রায়েলের উপরে মারাত্মক হামলা চালায় হামাস। প্রায় ১,২০০ ইহুদিকে নির্বিচারে খুন করে তারা। অপহরণ করে নিয়ে যায় ২৫০ জনকে। তাঁদের বেশ কয়েক জনকে এখনও পণবন্দি রেখেছে হামাস। ওই ঘটনার পর সংশ্লিষ্ট বিদ্রোহী গোষ্ঠীটির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে নেতানিয়াহুর সরকার।
গত দু’বছর ধরে চলা সংঘর্ষে লাগাতার বোমাবর্ষণ করে গাজ়াকে একরকম শ্মশানে পরিণত করেছে ইজ়রায়েলি বায়ুসেনা। বর্তমানে সেখানে গ্রাউন্ড অপারেশন চালাচ্ছে ইহুদি ফৌজ। ফলে প্রতি দিনই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। তেল আভিভের বাহিনী ঘিরে রাখায় একরকম দুর্ভিক্ষের মুখে পড়েছে গাজ়া। এই নিয়ে ইহুদিদের কড়া সমালোচনা করতে ছাড়েননি এর্ডোয়ান।
গাজ়ায় ইজ়রায়েলি অভিযানকে ‘গণহত্যা’র সঙ্গে তুলনা করেছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট। পাশাপাশি নেতানিয়াহুকে জার্মান ‘ফুয়েরার’ আডল্ফ হিটলারের সঙ্গে তুলনা করেন তিনি। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় আঙ্কারাকে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের (১৯১৪-১৯১৮) কথা মনে করিয়েছে ইজ়রায়েল। ইতিহাসবিদদের একাংশের দাবি, ইহুদিদের জন্যেই সে বার পরাজয়ের মুখ দেখেছিল সাবেক অটোমানদের ফৌজ, যার পরিণতিতে বিপুল এলাকা হাতছাড়া হওয়ায় ভেঙে যায় ওই সাম্রাজ্য।
ইজ়রায়েল এবং তুরস্কের সংঘাতের দিকে অবশ্য কড়া নজর রেখেছে রাশিয়া। এর জন্য নেটোয় ভাঙন ধরার প্রবল আশঙ্কা রয়েছে। পাশাপাশি আরব দেশগুলির মধ্যে নতুন করে প্রভাব বিস্তারের সুযোগ পাবে মস্কো। দীর্ঘ দিন ধরে ওই এলাকা থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে ক্রেমলিন। আর তাই সরাসরি ইহুদিদের বিরুদ্ধে কোনও কথা বলতে দেখা যাচ্ছে না রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে।
সব ছবি: সংগৃহীত।