Grand Canyon Mystery

গ্র্যান্ড ক্যানিয়নে রয়েছে রহস্যময় মিশরীয় গুহা? খোঁজ মেলে মমি, অদ্ভুত যন্ত্রেরও? কী বলছে ১১৬ বছরের পুরনো ষড়যন্ত্র তত্ত্ব?

১৯০৯ সালে একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, হাজার হাজার বছর আগে মিশর থেকে নাকি মানুষ আমেরিকায় এসেছিলেন। আমেরিকার অ্যারিজ়োনা প্রদেশে গ্র্যান্ড ক্যানিয়নের ভিতর এক গুহার মধ্যে বসতি গড়েছিলেন তাঁরা। গুহার ভিতরে মিশরীয় ধাঁচের বিভিন্ন মূর্তি, মমি-সহ আরও অনেক কিছুই দেখতে পেয়েছিলেন জিই কিনকেড নামক এক অভিযাত্রী।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৯:৫৮
০১ ১৯
Grand Canyon

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে জনপ্রিয় জাতীয় পার্কগুলির মধ্যে একটি। বিশাল আয়তনের খাদ, যা মূলত কলোরাডো নদীর ক্ষয়প্রক্রিয়ায় তৈরি। ৪৪৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এত বড় খাদ একনজরে দেখে ফেলাটা মুশকিল বললেই চলে। জায়গাটি আমেরিকার গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন।

০২ ১৯
Grand Canyon

আজকের গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন একটি পর্যটনকেন্দ্র হলেও এই জায়গাকে ঘিরে রয়েছে বেশ কিছু রহস্য। কখনও কেউ বলেন, এখানে সাড়ে দশ হাজার বছর আগে মানুষের বসবাস ছিল। কখনও আবার গবেষকদের তরফে দাবি করা হয়, প্রায় ২১ হাজার বছর আগে আমেরিকার আদি বাসিন্দারা সেখানে বসতি গড়েছিলেন।

০৩ ১৯
Grand Canyon

এই সবের মধ্যে আরও একটি বিষয় নজর এড়ানো যায় না। তা হল গ্র্যান্ড ক্যানিয়নের রহস্যময় মিশরীয় গুহার কথা। এটি একটি ষড়যন্ত্র তত্ত্ব হলেও এই নিয়ে নানা গুজব রয়েছে।

Advertisement
০৪ ১৯
Grand Canyon

১৯০৯ সালে ‘দ্য অ্যারিজ়োনা গেজেট’ নামক এক পত্রিকায় দাবি করা হয়, হাজার হাজার বছর আগে মিশর থেকে মানুষ আমেরিকায় এসেছিলেন। গ্র্যান্ড ক্যানিয়নের ভিতর এক গুহা তৈরি করে বসতি গড়েছিলেন তাঁরা।

০৫ ১৯
Grand Canyon

প্রতিবেদন অনুযায়ী, জিই কিনকেড নামক এক অভিযাত্রী নৌকো নিয়ে গ্র্যান্ড ক্যানিয়নে ঘুরছিলেন। কলোরাডো নদী ধরে নৌকো সফরের সময় তিনি গ্র্যান্ড ক্যানিয়নের খাড়া দেওয়ালে একটি গোপন গুহার প্রবেশপথ খুঁজে পান।

Advertisement
০৬ ১৯
Grand Canyon

সেই গুহাই এখন গ্র্যান্ড ক্যানিয়নের রহস্যময় মিশরীয় গুহা নামে পরিচিত। ওই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, গুহার মধ্যে মিশরীয় ধাঁচের বিভিন্ন মূর্তি দেখতে পেয়েছিলেন কিনকেড। অচেনা লিপি এবং মিশরীয় ভাষায় অনেক কিছু খোদাই করেও রাখা ছিল গুহার দেওয়ালে। একাধিক মমিও সেখানে রাখা আছে বলে দাবি করা হয় প্রতিবেদনে।

০৭ ১৯
Grand Canyon

এখানেই শেষ নয়। গুহার মধ্যে নানা রকম প্রাচীন সরঞ্জাম ও ধাতব বস্তুও নাকি দেখতে পেয়েছিলেন কিনকেড। এরই পাশাপাশি উঠে আসে আর একটি নাম, স্মিথসোনিয়ান ইনস্টিটিউশন। বলা হয়, এই প্রতিষ্ঠান নাকি গবেষণা করছে গ্র্যান্ড ক্যানিয়নের ওই রহস্যময় গুহা নিয়ে।

Advertisement
০৮ ১৯
Grand Canyon

এই সব তথ্য প্রকাশ করার পরই হইচই পড়ে গিয়েছিল গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন নিয়ে। তা হলে কি সত্যিই আমেরিকায় আদি বাসিন্দাদের বসবাসের আগে সে দেশে মিশরীয়দের বসবাস ছিল?

০৯ ১৯
Grand Canyon

যদিও পরে সে সব তথ্যের কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এমনকি স্মিথসোনিয়ান ইনস্টিটিউশনও সাফ জানিয়ে দিয়েছিল, তারা এই নিয়ে কোনও গবেষণা করছে না!

১০ ১৯
Grand Canyon

সেই সময়কার আর কোনও বড় সংবাদপত্রেও এই বিষয়ে কিছু প্রকাশ করা হয়নি। এমনকি কোনও প্রত্নতাত্ত্বিক রিপোর্ট বা প্রমাণ কিছুই পাওয়া যায়নি। কিনকেড নামের ওই অভিযাত্রীর কোনও অস্তিত্ব ছিল কি না, তা-ও জানা যায়নি। তাই গবেষকেরা মনে করেন, এটি হয়তো শুধুমাত্র একটি কাল্পনিক গল্প বা গুজবই ছিল। তবে এই প্রতিবেদন আজও ষড়যন্ত্র তত্ত্ব হিসেবে ঘুরে বেড়ায়।

১১ ১৯
Grand Canyon

এখন গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন একটি জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র হয়ে উঠেছে। এটি খাড়া দেওয়াল, গভীর খাদ আর বহুস্তর শিলা নিয়ে তৈরি। এর ২৯ কিলোমিটার পরিসর, ১.৬ কিলোমিটার গভীরতা। আর দৈর্ঘ্যের মাপকাঠি তো আগেই উল্লেখ রয়েছে।

১২ ১৯
Grand Canyon

খাদের চারপাশ মোড়ানো লাল, কমলা, হলুদ আর বাদামি রঙের বহুস্তর শিলা দিয়ে। মাঝবরাবর ধীরে ধীরে বয়ে চলেছে কলোরাডো নদী। সূর্যের আলো পড়লে শিলার রঙের মিলন জলের ওপর উজ্জ্বল ছায়া ফেলে। একনজরে দেখলে মনে হবে যেন কলোরাডো নদীর ওপর একটি রামধনু ভেসে গিয়েছে।

১৩ ১৯
Grand Canyon

এমন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ মানুষ সেখানে যান। হিসাব বলছে, প্রায় ৫০ লক্ষ পর্যটকের আনাগোনা থাকে প্রতি বছর। শুধু প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করতেই নয়, পর্যটকদের ভিড় জমানোর আরও এক কারণ সেখানকার ইতিহাস।

১৪ ১৯
Grand Canyon

গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন নিয়ে অনেক গবেষণা হয়েছে। প্রত্নতাত্ত্বিকেরা এখানে ছোট ছোট গুহা বা আশ্রয়স্থল খুঁজে পেয়েছেন। পাথরের শিলা দিয়ে তৈরি ছোট ছোট ঘর, ছোট যন্ত্রপাতি এবং ভাঙা পাত্রেরও খোঁজ পাওয়া গিয়েছে এখানে।

১৫ ১৯
Grand Canyon

যদিও কোনও গবেষণা থেকেই মিশরীয় বসবাসের কোনও নিদর্শন পাওয়া যায়নি। তবে পড়ে থাকা সামগ্রী, ভাঙাচোরা বাসস্থান এটা প্রমাণ করেছে যে, সেখানে হাজার হাজার বছর আগে মানুষের বসতি ছিল।

১৬ ১৯
Grand Canyon

অনেকেই বলেন, সেখানে প্রথমে আমেরিকার আদি বাসিন্দারা থাকতেন। মূলত আমেরিকার আদি বাসিন্দাদের মধ্যে অ্যানসেস্ট্রাল পুয়েব্লোয়ান, হোপি, নাভাহো, হাভাসুপাই, হুয়ালাপাই শ্রেণির মানুষরাই বসতি গড়েছিলেন অ্যারিজ়োনায়। বহু গবেষণা উপযুক্ত তথ্য দিয়ে এ কথা প্রমাণও করেছে।

১৭ ১৯
Grand Canyon

তা হলে আজও কেন গ্র্যান্ড ক্যানিয়নে মিশরীয় গুহার ষড়যন্ত্র তত্ত্ব আলোচিত? গ্র্যান্ড ক্যানিয়নের কিছু জায়গা রয়েছে ‘আইসিস টেম্পল’ এবং ‘হোরাস টেম্পল’ নামে। সেগুলি মূলত মিশরীয় দেবতা বা স্থান থেকে নেওয়া।

১৮ ১৯
Grand Canyon

অনেকেই এই নাম দেখে বিশ্বাস করেন, সেখানে মিশরীয় সভ্যতার কোনও প্রমাণ রয়েছে বলেই এই নাম। ১৯ শতকের শেষ ভাগে ভূতত্ত্ববিদেরা বিভিন্ন জায়গার পাহাড়, শীর্ষভূমির নাম রাখতে শুরু করেন। তারা মূলত বিশ্বের বিভিন্ন পৌরাণিক কাহিনি, দেবতা ও ইতিহাস থেকে বাছাই করে নাম দিতেন।

১৯ ১৯
Grand Canyon

পরে প্রমাণিত হয় এই নামগুলি রাখা হয় শুধুমাত্র নামকরণের উদ্দেশ্যেই। কোনও বাস্তব মিশরীয় সভ্যতার উপস্থিতি বোঝাতে নয়। তবে আজও অনেকেই অ্যারিজ়োনায় প্রকাশিত হওয়া ওই প্রতিবেদনের কথা বিশ্বাস করেই রহস্যময় গুহার খোঁজে পাড়ি দেন গ্র্যান্ড ক্যানিয়নে।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও গ্যালারি