Recreation of woman’s face using DNA

মৃতের রাজ্য থেকে ‘ফিরিয়ে আনা হল’ প্রাগৈতিহাসিক মানবীকে! কী কেরামতি দেখাল ডিএনএ প্রযুক্তি?

প্রায় সাড়ে ১০ হাজার বছর আগে মেসোলিথিক যুগের বাসিন্দা ছিলেন ওই মানবী। সে সময় ব্রিটেনের সমারসট এলাকায় বসবাসকারী চেডারম্যানের সঙ্গে ডিএনএ-গত মিল রয়েছে তাঁর।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০২৫ ২০:২২
Scientists of Belgium reconstruct the face of 10,500 year old woman using DNA

সাড়ে ১০ হাজার বছরের মানবীর মুখ ‘ফিরিয়ে’ আনলেন বেলজিয়ামের ঘেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা। ছবি: সংগৃহীত।

চোখের রং নীলচে-ধূসর। ত্বক হালকা বাদামি। মুখমণ্ডলে বয়সজনিত বলিরেখার আভাস। কপালে গভীর ভ্রূকুটি! বেলজিয়াম থেকে আবিষ্কার এক প্রাগৈতিহাসিক মানবীর দেহাবশেষের মুখ পুনর্গঠনের পরে এমনই ছবি প্রকাশ করেছেন সে দেশের ঘেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা। আর তাতে উঠে এসেছে নানা অভিনব তথ্য।

Advertisement

ঘেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই গবেষকদল জানিয়েছে, ডিএনএ ম্যাপিং এবং ত্রিমাত্রিক প্রযুক্তির সাহায্যে তৈরি করা হয়েছে ওই প্রাগৈতিহাসিক মানবীর ছবি। প্রায় সাড়ে ১০ হাজার বছর আগে মেসোলিথিক (মধ্য-প্রস্তর) যুগের বাসিন্দা ছিলেন তিনি। সে সময় ব্রিটেনের সমারসট এলাকায় বসবাস ছিল চেডারম্যান জনগোষ্ঠীর। তাঁদের সঙ্গে ডিএনএ-গত মিল রয়েছে ওই নারীর। সাধারণ ভাবে, মেসোলিথিক যুগের অধিকাংশ মানুষের তুলনায় ওই নারীর চোখ বেশি নীলচে। ত্বকও কিছুটা ফর্সা। যেমনটা হত চেডারম্যানের।

গবেষকদলের সদস্য ডি গ্রুথ মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন-কে বলেছেন, ‘‘খুলির গঠন দেখে আমাদের অনুমান, ওই মহিলার বয়স ছিল ৬০ বছরের মধ্যে। চেডারম্যানের মতোই তিনিও ছিলেন উন্নতনাসা।’’ ১৯৮৮-৮৯ সালে ডিনান্টের মার্গাক্স গুহায় মেসোলিথিক যুগের একটি সমাধিস্থলের খোঁজ মিলেছিল। তাতে মোট আট জন নারীর দেহাবশেষ পাওয়া যায়। তার মধ্যেই ছিল ওই মহিলার দেহ। গ্রুথের মতে, বিষয়টি অস্বাভাবিক। কারণ সাধারণ ভাবে সে যুগে পুরুষ, মহিলা এবং শিশুদের জন্য একটি সমাধিক্ষেত্র ব্যবহারেরই রীতি ছিল। তা ছাড়া, দেহাবশেষগুলির বয়স পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, কয়েকশো বছর ধরে ওই গুহা-সমাধিক্ষেত্রটি ব্যবহার করা হত।

সে যুগের ধর্মীয় রীতি মেনে দেহগুলিতে গিরিমাটি মাখানো হয়েছিল। গর্ত বোজাতে ব্যবহার করা হয়েছিল পাথর। সাধারণ ভাবে সে সময় ইউরোপে বসবাসকারী শিকারি জনগোষ্ঠীর সঙ্গে ওই মহিলার ডিএনএ-র সিকোয়েন্স মেলাতে গিয়ে গঠনের স্পষ্ট ফারাক ধরা পড়েছে ঘেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের কাছে। যা নৃবিজ্ঞানীদের একাংশের দীর্ঘদিনের ধারণার বিপরীত। গবেষকদলের প্রত্নতত্ত্ববিদ ফিলিপ ক্রোম্বে বলেন, ‘‘এত দিন পর্যন্ত পশ্চিম ইউরোপে পাওয়া প্রাচীন দেহাবশেষগুলির ডিএনএ পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে তাঁরা সকলেই একই জিনগত গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তার ব্যতিক্রম ঘটেছে, যা বেশ আশ্চর্যজনক।’’

Advertisement
আরও পড়ুন