Vaibhav Suryavanshi

শুভমন, সরফরাজদের মতোই বাবার স্বপ্ন পূরণ করছে বৈভব, সমস্তিপুরে ছ’মাস আগেই দীপাবলি

সোমবার বিকেলে যখন বৈভব সূর্যবংশী জয়পুরে ছক্কার বন্যা বইয়ে দিচ্ছিল, তখন বিহারের সমস্তিপুরের একটি বাড়িতেও চলছিল উৎসব। দেদার ফাটছিল আতশবাজি। সঞ্জীব সূর্যবংশী বলছিলেন, “মনে হচ্ছে ছ’মাস আগেই দীপাবলি এসে গিয়েছে।”

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০২৫ ১৭:৪৮
cricket

নিজের পাওয়া পুরস্কারের সঙ্গে বৈভব। ছবি: সমাজমাধ্যম।

সোমবার বিকেলে যখন বৈভব সূর্যবংশী জয়পুরের সওয়াই মানসিংহ স্টেডিয়ামে ছক্কার বন্যা বইয়ে দিচ্ছিল, তখন ১১৭৭ কিলোমিটার দূরে বিহারের সমস্তিপুর জেলার একটি বাড়িতেও চলছিল উৎসব। দেদার ফাটছিল আতশবাজি। চলছিল মিষ্টি বিতরণ। থেকে থেকে বৈভবের নামে চিৎকার। সব দেখেশুনে সঞ্জীব সূর্যবংশী বলছিলেন, “মনে হচ্ছে ছ’মাস আগেই দীপাবলি এসে গিয়েছে।”

Advertisement

এক রাতে, এক ইনিংসে সমস্তিপুরের আবহই পাল্টে দিয়েছে বৈভব। যে রাজ্য থেকে ক্রিকেটার উঠে আসার সংখ্যা বেশ কম, যে রাজ্যের ক্রিকেট সংস্থাই অন্তর্দ্বন্দ্বে জীর্ণ, সেই রাজ্যের ১৪ বছরের এক খুদে এ ভাবে আইপিএল মাতিয়ে দেবে, কেউ ভাবতেই পারছেন না। শুভমন গিল, সরফরাজ খান, পৃথ্বী শ, অভিষেক শর্মার মতো বৈভবও বাবার অপূর্ণ স্বপ্ন সত্যি করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

সঞ্জীব নিজে ক্রিকেট খুব ভালবাসেন। শুভমনের উত্থানের নেপথ্যে যেমন লখবিন্দর গিল ছিলেন, সরফরাজের জন্য যেমন নৌশাদ খান ছিলেন, অভিষেকের উত্থানে যেমন রাজকুমার শর্মা ছিলেন, তেমনই বৈভবের নেপথ্যে ছিলেন সঞ্জীব।

২০২০-২১ সালে বর্ডার-গাওস্কর ট্রফিতে গাব্বায় শুভমন ৯১ রান যে দিন করেছিলেন, তার পরের দিন একটি খবর মন দিয়ে পড়েছিলেন সঞ্জীব। শুভমনের উত্থানের নেপথ্যে তাঁর বাবা লখবিন্দরের অবদান নিয়ে লেখা ছিল সেই প্রতিবেদন। সেখানে বলা ছিল, কী ভাবে পঞ্জাবের ফাজিলকায় নিজের বাড়িতে শুভমনের জন্য সিমেন্টের একটি পিচ বানিয়ে দিয়েছিলেন তিনি।

বিষয়টি মনে ধরেছিল সঞ্জীবের। তিনিও নিজের বাড়ির উঠোনে একটি পিচ বানিয়ে ফেলেন। সেখানেই অনুশীলন করে বেড়ে উঠেছে বৈভব। সঞ্জীব বলেছেন, “বৈভব ৩৫ বলে শতরান করে কী অসাধারণ একটা ইনিংস খেলল। আমাদের বাড়িতে এখন উৎসবের পরিবেশ।”

ক্রিকেটজীবন ছোট হলেও বৈভব ইতিমধ্যেই ভিভিএস লক্ষ্মণের সঙ্গে জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে সময় কাটিয়েছে। এর পর সান্নিধ্য পেয়েছে রাহুল দ্রাবিড়ের। লক্ষ্মণই বৈভবকে নেওয়ার জন্য রাজস্থানের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছিলেন। সঞ্জীবের কথায়, “লক্ষ্মণ স্যর গত দু’বছর খুব কাছ থেকে বৈভবের উন্নতি লক্ষ করেছেন। এখন দ্রাবিড় স্যর ওকে নিজে থেকে দেখছেন।”

গত বছর মহানিলামে বৈভবকে নেওয়ার জন্য এক কোটি টাকারও বেশি খরচ করতে পিছপা হয়নি রাজস্থান। সঞ্জীব সব কৃতিত্ব দিয়েছেন সেই দলটিকেই। বলেছেন, “এটা ঠিক যে বৈভব প্রচুর পরিশ্রম করেছে। তবে রাজস্থান রয়্যালসের দল পরিচালন সমিতিকে বেশি কৃতিত্ব দেওয়া দরকার। গত তিন-চার মাসে রাহুল দ্রাবিড়, বিক্রম রাঠৌর এবং জুবিন ভারুচা ওকে নিয়ে অনেক পরিশ্রম করেছেন। এখন ও তার ফসল পাচ্ছে।”

ম্যাচের পর বৈভবকে বিশেষ প্রতিভা বলে বর্ণনা করেছেন রাঠৌর। বলেছেন, “দারুণ একটা প্রতিভা। ব্যাট যে ভাবে নীচের দিকে নামায় সেটা অসাধারণ। এই জন্যেই ওর শটে এত জোর। আজ সবাইকে দেখিয়ে দিয়েছে ও কতটা ভাল। ওকে নিয়ে একটানা কথা বলা যায়।”

Advertisement
আরও পড়ুন