Maha Singh

৮০ বছর বয়সে জাতীয় শুটিংয়ে! প্রাক্তন সেনাকর্মী মহা সিংহকে নিয়ে আশায় ২৫ বছরের কোচও

মধ্যপ্রদেশের সোনিপত জেলার খুবরু গ্রামের বাসিন্দা মহা সিংহ সেনাবাহিনীর প্রাক্তন সেপাই। সময় কাটাতে শুরু করেছিলেন শুটিং। কিছু দিনের মধ্যেই নাতির বয়সি শুটারদের চ্যালেঞ্জ জানাতে শুরু করেন।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০২৫ ১৫:২৬
Picture of Shooting

—প্রতীকী চিত্র।

বয়স যে শুধুই সংখ্যা, তা আরও এক বার প্রমাণ করলেন মহা সিংহ। ৮০ বছরের প্রাক্তন সেনাকর্মী জাতীয় শুটিংয়ের যোগ্যতা অর্জন করলেন। বছরখানেকের চেষ্টাতেই জেলা থেকে একেবারে জাতীয় পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছেন তিনি।

Advertisement

মধ্যপ্রদেশের সোনিপত জেলার খুবরু গ্রামের বাসিন্দা মহা সেনাবাহিনীর প্রাক্তন সেপাই। নেহাতই সময় কাটাতে শুরু করেছিলেন শুটিং। কিছু দিনের মধ্যেই নাতির বয়সি শুটারদের চ্যালেঞ্জ জানাতে শুরু করেন। তাঁর দক্ষতা চমকে দেয় মধ্যপ্রদেশের অভিজ্ঞ শুটারদেরও। এক বছরে নেমেছেন তিনটি প্রতিযোগিতা— নর্থ জ়োন, জিভি মাভলঙ্কার মিট এবং ইন্ডিয়া ওপেনে। প্রতি ক্ষেত্রেই নজরকাড়া পারফরম্যান্স করেছেন। ধারাবাহিক ভাবে উন্নতিও করেছেন।

মহার নিজের বন্দুক নেই। কোচ হিমাংশী মালিকের বন্দুক ধার করে প্রতিযোগিতায় নামেন। জাতীয় শুটিংয়েও যাবেন কোচের বন্দুক নিয়েই। ১০ মিটার এয়ার রাইফেল এবং ৫০ মিটার রাইফেল প্রোন ইভেন্টে চ্যালেঞ্জ জানাবেন নাতির বয়সি প্রতিযোগীদের। দুই নাতির দাদু প্রতি দিন ৩ ঘণ্টা অনুশীলন করেন। প্রায় নয় কিলোগ্রাম ওজনের শুটিং জ্যাকেট এবং ছয় কিলোগ্রাম ওজনের রাইফেলও দমিয়ে রাখতে পারে না ৮০ বছরের মহাকে।

জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপের যোগ্যতা অর্জন করে উচ্ছ্বসিত মহা। একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেছেন, ‘‘খেলার জন্য শারীরিক ভাবে একদম ঠিকঠাক জায়গায় রয়েছি। সেনাবাহিনীতে থাকার সময় যেমন শারীরিক কসরত করতাম, এখনও তেমনই করি। ফিটনেসের কোনও সমস্যা নেই। সব সময় স্বাস্থ্যকর খাবার খাই। জীবনে কখনও পিৎজ়া, বার্গার খাইনি। ঠান্ডা পানীয়, মদ্যপান থেকেও দূরে থাকি।’’ তিনি আরও বলেছেন, ‘‘সেনাবাহিনীতে কাজ করার সুবাদে বন্দুক আমার পরিচিত জিনিস। কিন্তু সে সময় জানতাম না, এমন একটা খেলাও রয়েছে। পরে জানার পর শুটিং নিয়ে পড়তে শুরু করি। তা থেকেই আগ্রহ তৈরি হয়। এক বছর আগে শুটিং শিখতে শুরু করি। সেনাবাহিনীতে কাজের অভিজ্ঞতা সাহায্য করেছে।’’ উল্লেখ্য, ১৯৬৩ থেকে ১৯৭৮ পর্যন্ত জাট রেজিমেন্টের সদস্য ছিলেন মহা।

সোনিপতের ইয়ং স্টার শুটিং অ্যাকাডেমিতে এখন জাতীয় প্রতিযোগিতার প্রস্তুতিতে ব্যস্ত মহা। এই অ্যাকাডেমিতেই শুটিং শেখা শুরু তাঁর। কোচ ২৫ বছরের হিমাংশী বলেছেন, ‘‘উনি প্রতি দিন ৮০ কিলোমিটার রাস্তা যাতায়াত করেন। অনুশীলনে কখনও কামাই করেন না। কখনও দেরিতেও আসেন না। এই বয়সে এত পরিশ্রম ভাবাই যায় না। আমাদের অ্যাকাডেমিতে ওনাকে বাদ দিলে সবচেয়ে বয়স্ক শুটারের বয়স ৩০ বছর। স্বভাবতই প্রথম যখন এসেছিলেন, আমরা খুব অবাক হয়েছিলাম। আমরা ভেবেছিলাম ভারী জ্যাকেট, প্যান্ট পরে দাঁড়াতেই পারবেন না। বন্দুক ধরতেও পারবেন না। সকলকে ভুল প্রমাণ করে দিয়েছেন।’’

ভোপালের জাতীয় শুটিংয়ে পদক জিততে চান মহা। কোচ হিমাংশী প্রথম বছরেই বেশি আশা করছেন না। আবার একদমই যে করছেন না, তা-ও নয়। ৮০ বছর বয়সে এতটা এগোতে পারলে, বাকিটা আর কঠিন কী?

Advertisement
আরও পড়ুন