Dubai Golden Visa

ভারতীয়দের দুবাইবাসী হওয়ার বিশেষ আমন্ত্রণ! ‘গোল্ডেন ভিসা’ কারা পাবেন? খরচ কত?

সংযুক্ত আরব আমিরশাহির অধীনস্থ সাতটি দেশে বিদেশিদের ৫ থেকে ১০ বছর মেয়াদের বিশেষ ‘গোল্ডেন ভিসা’ দেওয়া হয়। নতুন নিয়মে ভারতীয়দের ক্ষেত্রে এই ভিসার মেয়াদ আজীবন করে দেওয়া হয়েছে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২৫ ১৫:১৪
UAE launches nomination based Golden Visa offering lifetime residency for Indians

প্রতীকী চিত্র। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

ভারতীয় পর্যটক এবং ব্যবসায়ীদের কাছে একাধিক কারণে দুবাই গুরুত্বপূর্ণ গন্তব্য। সংযুক্ত আরব আমিরশাহির রাজধানী শহরটি গত দশ বছরে বিশ্বের প্রথম সারির পর্যটনকেন্দ্রগুলির অন্যতম হয়ে উঠেছে। তাই পর্যটকদের জন্যেও নতুন নতুন সুযোগ দিতে উদ্যোগী হয়েছে সে দেশের সরকার। এ বার ভারতীয়দের ক্ষেত্রে আজীবনের জন্য ‘গোল্ডেন ভিসা’ দেওয়া শুরু করবে দুবাই।

Advertisement

গোল্ডেন ভিসা কী

সংযুক্ত আরব আমিরশাহির অধীনস্থ সাতটি দেশে বসবাস, পড়াশোনা, ব্যবসার জন্য বিদেশিদের ৫ থেকে ১০ বছর মেয়াদ বিশিষ্ট বিশেষ ভিসা দেওয়া হয়। এই ধরনের ভিসাকে ‘গোল্ডেন ভিসা’ বলা হয়। এই ভিসা থাকলে দুবাইয়ে থাকা, পড়াশোনা বা চাকরির ক্ষেত্রে কোনও ‘স্পনশরশিপ’ দেখাতে হয় না। ‘মাল্টিপল এন্ট্রি’র সুবিধাযুক্ত এই ভিসায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি পরিবারের সদস্যদের (সর্বাধিক ২৫ জন) নিয়ে দুবাইয়ে প্রবেশ করতে পারেন। স্বাস্থ্য পরিষেবা-সহ নাগরিকদের মতো অন্যান্য সুবিধাও তিনি পেয়ে থাকেন।

ভারতীয়দের জন্য নতুন নিয়ম

এর আগে দুবাইয়ের গোল্ডেন ভিসা পাওয়ার জন্য সে দেশের রিয়্যাল এস্টেটে কোনও ভারতীয়কে নূন্যতম ২০ লক্ষ দিরহাম (ভারতীয় মুদ্রায় ৪ কোটি ৬৬ লক্ষ টাকা) বিনিয়োগ করতে হত। কিন্তু এখন এই ভিসা পাওয়ার জন্য ১ লক্ষ দিরহাম (ভারতীয় মুদ্রায় ২৩ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা) বা সে দেশের ব্যবসায় আরও বড় বিনিয়োগ করতে হবে। তবে পুরো বিষয়টিই হবে মনোনয়ন নির্ভর। আপাতত প্রথম পর্যায়ের জন্য ‘গোল্ডেন ভিসা’র জন্য ভারতের পাশাপাশি এবং বাংলাদেশ থেকেও আবেদন করা যাবে। খবর, আগামী তিন মাসে প্রায় ৫ হাজার ভারতীয় এই ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন।

UAE launches nomination based Golden Visa offering lifetime residency for Indians

প্রত্যেক বছর অগণিত ভারতীয় পর্যটকেরা দুবাই ভ্রমণ করেন। ছবি: সংগৃহীত।

কী ভাবে আবেদন

দুবাইয়ের গোল্ডেন ভিসার আবেদন প্রক্রিয়ার দায়িত্ব পেয়েছে ‘রায়াদ গ্রুপ’। ভারতে বসেই এই ভিসার আবেদন করা যাবে। প্রথমে আবেদনকারী সম্পর্কে প্রথমে তথ্য যাচাই করা হবে। যার মধ্যে ব্যক্তির অপরাধ সংক্রান্ত ইতিহাস, আর্থিক কেলেঙ্কারি, সমাজমাধ্যমে প্রভাব-সহ বিভিন্ন বিষয় খুঁটিয়ে দেখা হবে। পাশাপাশি, আবেদনকারী ভিসা পাওয়ার পর সংযুক্ত আরব আমিরশাহির উন্নতিতে (সংস্কৃতি, বৈদেশিক বাণিজ্য, বিজ্ঞান, সামাজিক পরিষেবা ইত্যাদি) কী ভাবে সাহায্য করতে পারবেন, সে দিকটিও এই ভিসা পাওয়ার অন্যতম শর্ত বলে জানিয়েছেন ‘রায়াদ গ্রুপ’-এর কর্ণধার রায়াদ কামাল আয়ুব। আবেদনকারীর যাবতীয় তথ্য সংস্থা মারফত জমা পড়লে, শেষ সিদ্ধান্ত নেবে সংযুক্ত আরব আমিরশাহি সরকার।

কী কী সুযোগ আছে

গোল্ডেন ভিসার অধীনে কোনও ব্যক্তি দুবাইয়ে তাঁর পরিবারের সদস্যদের নিয়ে যেতে পারবেন। দুবাইয়ে ওই ব্যক্তির ব্যবসা বা সম্পত্তি বিক্রি বা ভাগ হয়ে গেলেও, ভিসার মেয়াদে তার কোনও প্রভাব পড়বে না।

উল্লেখ্য, আজীবনের ‘গোল্ডেন ভিসা’র উদ্যোগ ভারতের মাধ্যমেই শুরু করল দুবাই সরকার। নেপথ্যে রয়েছে ২০২২ সালে দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্পর্কিত সাক্ষরিত চুক্তি (কমপ্রিহেনসিভ ইকনমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট)। বাংলাদেশের পাশাপাশি ভবিষ্যতে চিনের সঙ্গেও গোল্ডেন ভিসা নিয়ে অগ্রসর হতে পারে বলে জানিয়েছে দুবাই সরকার।

গোল্ডেন ভিসা নিলে বিশেষ কী সুবিধা হবে?

বহু দেশেই এখন আজীবন থাকা ও কাজ করার ভিসা পাওয়ার সুযোগ কমেছে। নেপথ্যে রয়েছে সন্ত্রাসবাদ, জনবিস্ফোরণ, বৈদেশিক নীতি-সহ অজস্র কারণ। তার পরেও এই ধরনের ‘বিশেষ’ ভিসা পাওয়ার যোগ্যতা নির্ধারক মানদণ্ড হয় অত্যন্ত কঠিন। বিপুল অঙ্কের টাকার প্রশ্নও জড়িয়ে থাকে। সেখানে মাত্র ২৩ লক্ষ টাকায় দুবাইয়ে আজীবনের জন্য সপরিবার থাকা ও উপার্জন করার সুযোগ দেখে অনেকেই উৎসাহী হয়েছে। দুবাই উন্নত দেশ। উন্নয়নের জন্য তাদের ‘গোল্ডেন ভিসা’ নীতি নিয়ে তাই চর্চা শুরু হয়েছে। কারও মতে, মধ্যবিত্ত থেকে উচ্চবিত্ত ভারতীয় ‘গোল্ডেন ভিসা’-র জন্য প্রয়োজনীয় খরচ জোগাড় করতে সক্ষম। ফলে উন্নত এবং সুরক্ষিত ভবিষ্যতের জন্য বড় সংখ্যায় ভারতীয়েরা কি আগামী দিনে দুবাইকেই বেছে নেবেন?

Advertisement
আরও পড়ুন