Madhyamgram Blast

প্রেমিকার স্বামীকে খুনের ছক? কী ছিল ব্যাগের ভিতরে? মধ্যমগ্রামে বিস্ফোরণের ঘটনায় আটক মহিলা

পুলিশ সূত্রে খবর, সমাজমাধ্যম থেকে ওই মহিলার সঙ্গে আলাপ হয়েছিল সচ্চিদানন্দের। তাঁদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। তা নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বেশ কয়েক বার ঝগড়াও হয়।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০২৫ ১০:৫১
মধ্যমগ্রামে বিস্ফোরণের ঘটনায় আটক এক মহিলা।

মধ্যমগ্রামে বিস্ফোরণের ঘটনায় আটক এক মহিলা। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

উত্তর ২৪ পরগনার মধ্যমগ্রামে বিস্ফোরণের ঘটনায় এক মহিলাকে আটক করল পুলিশ। বিস্ফোরণে নিহত সচ্চিদানন্দ মিশ্রের সঙ্গে মধ্যমগ্রামের বাসিন্দা ওই মহিলার বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। ওই মহিলার স্বামীকে খুনের উদ্দেশ্যেই সচ্চিদানন্দ কোনও বিস্ফোরক তৈরি করেছিলেন কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে মহিলার স্বামীকেও।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে খবর, সমাজমাধ্যম থেকে ওই মহিলার সঙ্গে আলাপ হয়েছিল সচ্চিদানন্দের। তাঁদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। তা নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বেশ কয়েক বার ঝগড়াও হয়। প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীদের অনুমান, প্রেমিকার অপমান এবং অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে মহিলার স্বামীকে হত্যার ছক কষেছিলেন সচ্চিদানন্দ। কিন্তু বিস্ফোরণে নিজেই মারা যান। কী থেকে বিস্ফোরণ ঘটল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে পুলিশ সূত্রে খবর, উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা ওই যুবক আইটিআই ছাত্র। তিনি নিজেই পেনের মতো একটি বৈদ্যুতিন যন্ত্রের মাধ্যমে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছেন বলে অনুমান করা হচ্ছে। ভুলবশত ওই যন্ত্রের ভুল বোতামে চাপ পড়তেই দুর্ঘটনা ঘটে।

রবিবার রাত ১টা নাগাদ মধ্যমগ্রাম হাই স্কুলের সামনে দিয়ে ব্যাগ হাতে হেঁটে যাচ্ছিলেন সচ্চিদানন্দ। এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গিয়েছে, ওই ব্যাগ থেকেই বিস্ফোরণ হয়। তাতেই গুরুতর জখম হন যুবক। তাঁকে তড়িঘড়ি নিয়ে যাওয়া হয় বারাসত মে়ডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। পরে সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর।

পুলিশ সূত্রে খবর, আটক হওয়া মহিলার বাড়ি ঘটনাস্থলেই কাছেই। এর আগেও বেশ কয়েক বার উত্তরপ্রদেশ থেকে মধ্যমগ্রামে এসেছিলেন সচ্চিদানন্দ। গত এপ্রিলেও মধ্যমগ্রামে গিয়ে বেশ কয়েক দিন থেকে গিয়েছেন তিনি। পুলিশের অনুমান, মহিলার স্বামী কর্মসূত্রে বাইরে গেলেই সচ্চিদানন্দ মধ্যমগ্রামে এসে থাকতেন। গত তিন দিন ধরে মধ্যমগ্রামেই থাকছিলেন তিনি।

তদন্ত নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, সচ্চিদানন্দ উত্তরপ্রদেশের বস্তী জেলার বাসিন্দা। তিনি হরিয়ানায় একটি গ্লাস ফ্যাক্টরিতে কাজ করতেন। বারাসত পুলিশ জেলার সুপার প্রতীক্ষা ঝারখারিয়া সোমবার বলেন, ‘‘আমরা নিহতের ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইল থেকে জানতে পেরেছি, ব্যক্তিগত সম্পর্ক নিয়ে টানাপড়েনের মধ্যে ছিলেন উনি। সেই দিকটা এখন তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’’ নিহতের ব্যাগে কোনও বোমা মেলেনি বলেই জানিয়েছেন পুলিশ সুপার। তিনি জানান, ব্যাগে কিছু ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস মিলেছে। প্রাথমিক ভাবে অনুমান, সেগুলি থেকেই বিস্ফোরণ হয়েছে।

মঙ্গলবার সকালে মধ্যমগ্রাম থানায় পৌঁছেছেন নিহত সচ্চিদানন্দের বাবা অশ্বিনীকুমার মিশ্র। মৃতের বাবার বক্তব্য, ছেলে কলকাতায় কবে এসেছিল, তা তাঁর জানা নেই। ছেলের কারও সঙ্গে সম্পর্ক ছিল কি না, সেটিও তিনি জানেন না। মোবাইলের তথ্য খতিয়ে দেখতেই তা স্পষ্ট হবে বলে মনে করছেন নিহতের বাবা।

Advertisement
আরও পড়ুন