রবিবার ক্যানিং স্টেডিয়ামে বিশৃঙ্খলার ছবি। সামাল দেওয়ার চেষ্টা পুলিশের। ছবি: সংগৃহীত।
লিয়োনেল মেসির কলকাতা সফর ঘিরে যুবভারতীতে বিশৃঙ্খলা, বিষ্ণুপুর মেলায় শনিবার রাতে অভিনেতা জিতের অনুষ্ঠানে জনজোয়ার এবং তা সামাল দিতে না পারায় ভাঙচুরের ঘটনার পর এ বার আরও একটি অশান্তির পরিস্থিতি তৈরি হল ক্যানিং স্টেডিয়ামে। অভিনেতাকে দেখতে রবিবার স্টেডিয়ামে ঘটল পদপিষ্টের ঘটনাও। ঘটনায় এক শিশু-সহ সাত জন জখম হয়েছেন। তাঁরা এখনও চিকিৎসাধীন।
রবিবার ক্যানিং স্টেডিয়ামে এমএলএ কাপের ফাইনাল ছিল। গড়িয়া ও নিউটাউনের দলের মধ্যে ছিল সেই খেলা। কিন্তু অভিযোগ, ফাইনাল উপলক্ষে আসনসংখ্যার চেয়েও অনেক বেশি টিকিট বিক্রি করা হয়। ক্যানিং স্টেডিয়ামে ৭,৫০০ আসন রয়েছে। অথচ টিকিট বিক্রি হয় তার চেয়েও বেশি। তার উপর ফাইনাল উপলক্ষে স্টেডিয়ামে আসার কথা ছিল অভিনেতা অঙ্কুশের। তাই ম্যাচ বিকেল ৩টে থেকে শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সকাল ৮টা থেকেই হাজার হাজার দর্শক স্টেডিয়ামে আসতে শুরু করেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভিড়ও বাড়তে থাকে। সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ স্টেডিয়ামের গেটের সামনে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় পরিস্থিতি। পুলিশ প্রশাসনের সামনেই ব্যারিকেড, গেট ভেঙে ভিতরে ঢোকার জন্য হুড়োহুড়ি শুরু করে দেন দর্শকেরা। ভিড়ের চাপে এক শিশু-সহ সাত জন পড়ে গিয়ে পদপিষ্ট হন। সব মিলিয়ে চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলার পরিস্থিতি তৈরি হয়।
ক্যানিং থানার পুলিশের তৎপরতায় দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়। তড়িঘড়ি আহতদের উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে। পরে আহতদের মধ্যে একজনের অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে কলকাতার চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। অন্য দিকে, ঘটনার পর থেকেই স্টেডিয়ামে দর্শকদের নিরাপত্তা ও ভিড় নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তদন্ত শুরু করেছে ক্যানিং থানার পুলিশ। আসনসংখ্যার থেকে বেশি টিকিট বিক্রির অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
১৩ ডিসেম্বর কলকাতার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গণে মেসির সফর ঘিরেও সৃষ্টি হয়েছিল বিশৃঙ্খলার পরিস্থিতি। মেসিকে দেখতে না পেয়ে চেয়ার ভেঙে, বোতল ছুড়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন দর্শকদের একাংশ। ভাঙচুর করা হয়েছিল স্টেডিয়াম। শনিবার রাতে বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর মেলাতেও অভিনেতা জিৎকে দেখতে উপচে পড়েছিল ভিড়। বাঁকুড়ার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কাতারে কাতারে মানুষ জড়ো হয়েছিলেন মেলায়। জিৎকে দেখতে না পেয়ে ভাঙা হয় চেয়ার। আশপাশের দোকানেও ভাঙচুর চালানো হয়। সে সব ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এ বার একই ধাঁচের ঘটনা ঘটল ক্যানিংয়ে।