Jungle Mahals and North Bengal

জঙ্গলমহল-পাহাড় কি হাসছে, সংশয় রিপোর্টে

অনুন্নয়ন ও বঞ্চনা নিয়ে রাজ্যের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চল দশকের পর দশক জায়গা পেয়েছে রাজনৈতিক তরজায়। বিরোধী থাকাকালীন বিভিন্ন সময়ে বাম সরকারের দিকে আঙুল তুলেছেন মমতা।

রবিশঙ্কর দত্ত
শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০২৩ ০৬:৪২
Mamata Banerjee.

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

পশ্চিমাঞ্চল এবং উত্তরবঙ্গ—মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জোড়া ‘স্বপ্ন’ কি বাধা পড়েছে প্রশাসনের লাল ফিতেয়! অন্তত সেই রকম ইঙ্গিতই মিলছে বিধানসভার সংশ্লিষ্ট দুই স্থায়ী কমিটির সাম্প্রতিকতম রিপোর্টে। রাজ্যের এই দুই অঞ্চলের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে বরাদ্দ ও প্রদত্ত অর্থের ফারাক এবং আধিকারিক স্তরের ত্রুটিই সামনে এসেছে অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক কমিটির জোড়া রিপোর্টে।

অনুন্নয়ন ও বঞ্চনা নিয়ে রাজ্যের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চল দশকের পর দশক জায়গা পেয়েছে রাজনৈতিক তরজায়। বিরোধী থাকাকালীন বিভিন্ন সময়ে বাম সরকারের দিকে আঙুল তুলেছেন মমতা। আর তাঁর আমলে বিরোধীরা এই প্রসঙ্গ তুললে তৃণমূল দাবি করেছে, মমতা-জমানায় এই দুই অঞ্চলই হাসছে। কিন্তু পরিকাঠামো উন্নয়ন এবং প্রয়োজনীয় পরিষেবা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিধায়কদের নিয়ে গঠিত ওই স্থায়ী কমিটির রিপোর্টে। দুই অঞ্চলেই এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে দুই কমিটিই মূলত সরকারি অর্থের অনুমোদন এবং প্রশাসনিক নজরদারি বাড়ানোর সুপারিশ করেছে। বিধানসভার বিধি অনুযায়ী বিরোধী বিধায়কেরা থাকলেও এই দুই কমিটির সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যই শাসক দলের।

বিধানসভার চলতি অধিবেশনে দুই কমিটির চেয়ারম্যান, তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক মলয় মজুমদার আনুষ্ঠানিক ভাবে রিপোর্ট জমা দেন। তাতে পশ্চিমাঞ্চল সম্পর্কে বলা হয়েছে, রাজ্য সরকার বাজেটে যে অর্থ বরাদ্দ করেছে, তার থেকে প্রকৃত প্রদত্ত অর্থের পরিমাণ অনেক কম। পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন বিষয়ক দফতরের জন্য ২০২২-২৩ সালে বরাদ্দ করা হয়েছিল সাড়ে ৫ কোটি টাকা। আর দফতর হাতে পেয়েছে মাত্র দেড় কোটি টাকা। সেই অর্থের মাত্র ৮৪ লক্ষ টাকা খরচ করতে পেরেছে দফতর। দুই অঞ্চলেই বিশুদ্ধ ও পর্যাপ্ত পানীয় জলের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রাথমিক সুবিধার অভাবও ধরা পড়েছে রিপোর্টে। টাকার টানাপড়েন ধরা পড়েছে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরেও। সেখানে বড় সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে নির্দিষ্ট সময়ে প্রস্তাবিত প্রকল্প শেষ না হওয়ার বিষয়টি।

পশ্চিমাঞ্চলের পুরুলিয়া ও ঝাড়গ্রাম ঘুরে দেখে কমিটি কর্মসংস্থানের বিষয়টিতে বিশেষ জোর দিয়েছে। তারা লাক্ষা চাষ, কেন্দুপাতা সংগ্রহ, রেশম ও মাছ চাষের পরামর্শ দিয়েছে। নতুন করে শিল্পায়নের কোনও সম্ভাবনা বা সুযোগের কথা কমিটির রিপোর্টে নেই। তারা অকৃষি ও অনুর্বর জমিকেই চাষযোগ্য করে তোলার পরামর্শ দিয়েছে। উত্তরবঙ্গ সংক্রান্ত ১৬টি নির্দিষ্ট প্রকল্পে প্রয়োজনীয় অর্থের জোগান নেই বলেও উল্লেখ করা হয়েছে সংশ্লিষ্ট কমিটির রিপোর্টে।

আরও পড়ুন