তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। — ফাইল চিত্র।
বিধানসভা ভোটকে লক্ষ্য রেখে নতুন বছরের শুরু থেকেই রাজ্য জুড়ে পথে নামছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। গোটা জানুয়ারি মাস জুড়ে চলবে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের কর্মসূচি। ১ জানুয়ারি দলের প্রতিষ্ঠা দিবস। তার পরের দিন থেকেই শুরু হচ্ছে অভিষেকের রাজ্যজোড়া কর্মসূচি। শুরু হবে দক্ষিণ ২৪ পরগনা থেকে। তার পর থেকে কখনও উত্তরবঙ্গে, কখনও দক্ষিণবঙ্গে থাকবেন তিনি। কলকাতায় তাঁর কর্মসূচি রয়েছে জানুয়ারির মাঝের দিকে। জানুয়ারি মাস জুড়ে এই কর্মসূচিতে রাজ্যের সিংহ ভাগ জেলাকেই স্পর্শ করবেন তিনি।
গত লোকসভা ভোটের আগে ২০২৩ সালে রাজ্য জুড়ে ‘নবজোয়ার’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলেন অভিষেক। দু’মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা ওই কর্মসূচি শুরু হয়েছিল উত্তরবঙ্গ থেকে, শেষ হয় দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। এ বার দক্ষিণ ২৪ পরগনা থেকেই কর্মসূচি শুরু করছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। তবে সফরসূচিতে উত্তরবঙ্গ এবং দক্ষিণবঙ্গ মিলেমিশে রয়েছে। এ বিষয়ে অভিষেকের ঘনিষ্ঠ সূত্রের দাবি, এ বারের কর্মসূচি আগের বারের মতো হচ্ছে না। এটি একটি ভিন্ন কর্মসূচি। তাই ‘নবজোয়ার’ কর্মসূচির মতো একই ধারা এ বার দেখা যাচ্ছে না।
বিজেপিকে আক্রমণ শানিয়ে শনিবারই তৃণমূল নতুন স্লোগান প্রকাশ করেছে, ‘যতই করো হামলা, আবার জিতবে বাংলা’। প্রকাশ্যে এনেছে নতুন লোগো-ও। এ বার সেই স্লোগানের সঙ্গেই সামঞ্জস্য রেখে গোটা জানুয়ারি মাস জুড়ে কর্মসূচি ঘোষণা করে দিলেন অভিষেক। অভিষেকের কথায়, ‘‘আগামী ২ তারিখ থেকে রাস্তায় থাকব। এসআইআরের সময় আমরা কোনও কর্মসূচি নিইনি। আমাদের দায়িত্ব এবং কর্তব্য, এই ১৫ বছরে আমাদের সরকার কী কাজ করেছে, তা রাজ্যের মানুষের দোড়গোড়ায় পৌঁছে দেব। আমাদের যদি মাথা নত করতে হয় তবে এ রাজ্যের মানুষের কাছে করব। বিজেপির কাছে করব না।’’
দক্ষিণ ২৪ পরগনার কর্মসূচির পরই তিনি চলে যাবেন উত্তরবঙ্গে। ৩ জানুয়ারি আলিপুরদুয়ার এবং জলপাইগুড়িতে কর্মসূচি রয়েছে তাঁর। এর পরে আবার চলে আসবেন দক্ষিণবঙ্গে, বীরভূমে। ৬ জানুয়ারি সেখানে দলীয় কর্মসূচি রয়েছে তাঁর। বীরভূমের কর্মসূচি শেষে পর পর দু’দিন উত্তর দিনাজপুর এবং মালদহে থাকবেন অভিষেক।
৯ জানুয়ারি তিনটি জায়গায় কর্মসূচি রয়েছে তাঁর। নদিয়ার রানাঘাট এবং কৃষ্ণনগরে, তার পরে উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁয়। বস্তুত, এই এলাকাগুলিতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় মতুয়া ভোটার রয়েছেন। ভোটার তালিকার বিশেষ এবং নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) নিয়ে উদ্বেগে রয়েছেন মতুয়াদের একাংশও। এ অবস্থায় একই দিনে কৃষ্ণনগর, রানাঘাট এবং বনগাঁয় অভিষেকের কর্মসূচি বেশ তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। ১৮ জানুয়ারি ফের কৃষ্ণনগরে যাবেন অভিষেক। এর পরে ১০ জানুয়ারিও তিনটি জায়গায় কর্মসূচি রয়েছে অভিষেকের। ওই দিন পুরুলিয়া, বাঁকুড়া এবং বিষ্ণুপুরে থাকবেন তিনি। পরে ২১ জানুয়ারি ফের বাঁকুড়া এবং বিষ্ণুপুরে যাবেন তিনি।
কলকাতায় অভিষেকের কর্মসূচি রয়েছে ১২ জানুয়ারি। কলকাতার কর্মসূচি সেরে তিনি ফের চলে যাবেন উত্তরবঙ্গে। ১৩ জানুয়ারি কোচবিহারে কর্মসূচি রয়েছে তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদকের। তার পরে ১৫ জানুয়ারি অভিষেক থাকবেন পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুকের কর্মসূচিতে। কয়েক দিন পরেই, ২৪ জানুয়ারি কাঁথিতে একটি কর্মসূচি রয়েছে অভিষেকের।
তমলুকের কর্মসূচির পরে ১৬ জানুয়ারি অভিষেক থাকবেন মেদিনীপুরে। পরের দিন মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর এবং বহরমপুরে জোড়া কর্মসূচি রয়েছে তাঁর। আগামী ১৯ জানুয়ারি উত্তর ২৪ পরগনার বারাসতে রয়েছে তৃণমূল নেতার কর্মসূচি। এর পরে ২২ জানুয়ারি হুগলিতে, ২৫ জানুয়ারি পূর্ব এবং পশ্চিম বর্ধমানে থাকবেন অভিষেক। ২৭ জানুয়ারি হাওড়ার গ্রামীণ এবং সদর— দুই সাংগঠনিক জেলায় থাকবেন তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক।