Mamata Banerjee Book on Prime Ministers

কার কী বিশেষত্ব? প্রধানমন্ত্রীদের সঙ্গে তাঁর কাজের অভিজ্ঞতাই বা কেমন? আগামী বইয়ে লিখে জানাবেন মমতা! প্রকাশ কবে?

প্রতি বছর বইমেলার উদ্বোধন করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। মেলায় নিজের বইও প্রকাশ করে থাকেন তিনি। এখনও পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী ১৫৩টি বই লিখেছেন। প্রধানমন্ত্রীদের সঙ্গে তাঁর কাজ করার অভিজ্ঞতা নিয়ে বইটি প্রকাশিত হলে সেটি হবে ১৫৪তম বই।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০২৫ ১৮:২৫
CM Mamta Banerjee to publish a book on the Indian prime ministers

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

ভারতের বিভিন্ন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা কেমন ছিল? সেই বিষয়টি নিয়ে বই লিখবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার ধর্মতলার মেয়ো রোডে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচিতে এ কথা জানান তিনি। নিজের বক্তৃতায় মমতা বলেন, ‘‘আমি সাত বার এমপি হয়েছি। আমি রেল মিনিস্টার দু’বার হয়েছি, আমি কোল মাইন মিনিস্টার ছিলাম। আমি ইউথ ফোর্স মিনিস্টার ছিলাম। আমি উইমেন চাইল্ড মিনিস্টার ছিলাম। ন্যাশনাল উইমেন কমিশন আমার সময় তৈরি হয়েছিল। স্পোর্টস একাডেমি আমার সময় তৈরি হয়েছিল। তাই তো এখন ছেলেমেয়েরা এত ভাল ফলাফল করছে কারণ এত দিন ধরে প্ল্যান করে করা হয়েছিল।’’ এর পরেই তিনি আরও বলেন, ‘‘আমাকে শিখিয়ে লাভ নেই আমি অনেক প্রধানমন্ত্রী দেখেছি। আমি একটা বইও লিখব। কে কেমন ছিল। নেক্সট বইমেলাতে বেরোবে।’’

Advertisement

প্রসঙ্গত, ২০২৬ সালের কলকাতার আন্তর্জাতিক বইমেলা শুরু হবে ২২ জানুয়ারি, চলবে ৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। প্রতি বছর বইমেলার উদ্বোধন করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। মেলা সূচনা করার সঙ্গে সঙ্গে নিজের বইয়েরও প্রকাশ করে থাকেন তিনি। এ বছর জানুয়ারি মাসে বইমেলার উদ্বোধনে মমতার লেখা তিনটি বই প্রকাশিত হয়েছিল। এখনও পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী ১৫৩টি বই লিখেছেন। প্রধানমন্ত্রীদের সঙ্গে তাঁর কাজ করার অভিজ্ঞতা নিয়ে বইটি প্রকাশিত হলে সেটি হবে ১৫৪তম বই। দলের ছাত্র সমাবেশে নিজের ছাত্র রাজনীতির দিনগুলির কথা স্মরণ করেন মমতা। কিন্তু ১৯৮৪ সালে যুব কংগ্রেস নেত্রী হিসেবে যাদবপুর লোকসভায় প্রথম বার ভোটে দাঁড়িয়ে সিপিএমের ওজনদার প্রার্থী সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়কে হারিয়ে নিজের সংসদীয় জীবন শুরু করেন মমতা।

১৯৮৪ সালে প্রথম বার সংসদে যাওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে রাজীব গান্ধীর সতীর্থ ছিলেন তিনি। ১৯৮৯ সালে যাদবপুর লোকসভায় তিনি পরাজিত হলে, বিশ্বনাথ প্রতাপ সিংহ ও চন্দ্রশেখরের মতো প্রধানমন্ত্রীদের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ভাবে কাজ করার সুযোগ হয়নি মমতার। ১৯৯১ সালে যখন কেন্দ্রীয় সরকার গঠন করে কংগ্রেস, সেই সময় দেশের প্রধানমন্ত্রী হন পিভি নরসিংহ রাও। সেই সময় ভারত সরকারের ক্রীড়া ও যুব কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী হন তিনি। তবে সে বার বছরখানেকের মধ্যেই সেই মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দেন তিনি। ১৯৯৬ সালের লোকসভা নির্বাচনের পর এইচডি দেবগৌড়া এবং ইন্দ্রকুমার গুজরাল প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীনও সংসদে দক্ষিণ কলকাতার কংগ্রেসের প্রতিনিধি হিসেবে সক্রিয় ছিলেন।

১৯৯৮ সালের ১ জানুয়ারি কংগ্রেস ছেড়ে নিজের দল তৃণমূল গঠন করেন মমতা। সে বছর লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির সঙ্গে জোটে লড়াই করে সাতটি আসনে জয়ী হয় তৃণমূল। কেন্দ্রে অটলবিহারী বাজপেয়ী প্রধানমন্ত্রী পদে শপথ নিলে বিজেপির সেই সরকারকে সমর্থন দেন মমতা। কিন্তু ১৯৯৯ সালের ফের লোকসভা নির্বাচন হলে বিজেপির সঙ্গে জোটে আসনসংখ্যা বাড়াতে সফল হন মমতা। নয়টি আসনের সমর্থনের বিনিময়ে মমতাকে রেলমন্ত্রী করেন বাজপেয়ী। কিন্তু ২০০১ সালে বিজেপি সভাপতি বঙ্গারু লক্ষ্মণের বিরুদ্ধে তেহলকা ডট কমের স্টিং অপারেশনে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠলে রেলমন্ত্রীর পদ ত্যাগ করে বাজপেয়ীর সরকার ছেড়ে বেরিয়ে আসেন তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেত্রী। ২০০১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের সঙ্গে মহাজোট করে লড়াই করেও ভরাডুবি হয় তাঁর। পরে আবার দফতরবিহীন মন্ত্রী হিসাবে এনডিএ-তে ফেরেন তিনি। পরে অবশ্য তাঁকে কয়লা মন্ত্রকের দায়িত্ব দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী বাজপেয়ী। ২০০৪ সালে বাজপেয়ী সরকারের পতন হলে, আর মন্ত্রী হওয়া হয়নি তাঁর। ২০০৯ সালে বিজেপির সঙ্গ ছেড়ে ফের কংগ্রেসের হাত ধরেন তিনি।

দ্বিতীয় ইউপিএ সরকারের আমলে কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন সরকারে যোগদান করে রেলমন্ত্রী হন মমতা। সে বারও প্রধানমন্ত্রী মনমোহনের সঙ্গেও নিজের পুরো মেয়াদ কাজ করেননি তিনি। ২০১১ সালে সিপিএম নেতৃত্বাধীন বামফ্রন্ট সরকারকে ৩৪ বছর পর উৎখাত করে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন। আর ২০১৪ সাল থেকে পরপর তিনটি নির্বাচন জিতে দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন বিজেপি নেতা নরেন্দ্র মোদী। দেশের কোনও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রত্যক্ষ ভাবে এবং কারও সঙ্গে পরোক্ষ ভাবে কাজ করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর সেই সব অভিজ্ঞতার কথাই উঠে আসতে পারে প্রকাশিতব্য বইয়ে।

Advertisement
আরও পড়ুন