Digha Jagannath Dham Inauguration

বুধবার জগন্নাথধামে দিলীপও? ‘যেতে আপত্তি নেই’ বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতির, ক্রমশ কি দূরত্ব বাড়ছে শুভেন্দুর সঙ্গে

এর আগে পাকিস্তানের জাতীয় পতাকা পোড়ানো নিয়ে দুই নেতার দু’রকম অবস্থান প্রকাশ্যে এসেছিল। রাজ্য বিজেপির সেই ‘অস্বস্তি’ কাটার আগেই জগন্নাথধামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ফের প্রকাশ্যে এনে দিল দুই নেতার দু’রকম মত।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০২৫ ২২:৩২
(বাঁ দিকে) দিলীপ ঘোষ। শুভন্দু অধিকারী (ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে) দিলীপ ঘোষ। শুভন্দু অধিকারী (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

উপলক্ষ দিঘায় জগন্নাথধামের উদ্বোধন। আয়োজনে সরকার। আর প্রভাব বিরোধী দলের অন্দরে। বিজেপির দুই সামনের সারির নেতার পথ দু’দিকে আরও বেঁকে যাওয়ার ইঙ্গিত মিলল মঙ্গলবার রাতেই। শুভেন্দু অধিকারী যখন দিঘার অনুষ্ঠান বয়কটের পথে, দিলীপ ঘোষ তখন জানাচ্ছেন, সময় পেলে জগন্নাথধামের উদ্বোধনে হাজির থাকতে তাঁর ‘আপত্তি নেই’। এর আগে পাকিস্তানের জাতীয় পতাকা পোড়ানো নিয়ে দুই নেতার দু’রকম অবস্থান প্রকাশ্যে এসেছিল। রাজ্য বিজেপির সেই ‘অস্বস্তি’ কাটার আগেই জগন্নাথধামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ফের প্রকাশ্যে এনে দিল দুই নেতার দু’রকম মত।

Advertisement

মঙ্গলবার দিনভর মুর্শিদাবাদ জেলায় নানা কর্মসূচি ছিল রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি দিলীপের। সন্ধ্যার পর তিনি মুর্শিদাবাদ থেকে কলকাতার উদ্দেশে রওনা দেন। কিন্তু তিনি কলকাতায় পৌঁছোনোর আগেই খবর আসে যে, বুধবার তিনি দিঘায় জগন্নাথধামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পারেন। রাজ্য বিজেপির সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার আগেই ঘোষণা করেছিলেন যে, বুধবার তিনি মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ানে ভাঙা মন্দির পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে যাবেন। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দুও ওই একই দিনে কাঁথিতে সনাতনী সমাবেশের ডাক দিয়েছিলেন আগেই। সে সমাবেশ যে দিঘায় মুখ্যমন্ত্রীর কর্মসূচির পাল্টা, তা-ও শুভেন্দু বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন নানা মন্তব্যে। তিনি বলেছিলেন, অক্ষয়তৃতীয়ার দিন দিঘায় যাঁরা যাবেন তাঁরা ‘জালি হিন্দু’ আর কাঁথিতে যাঁরা উপস্থিত থাকবেন তাঁরা ‘আসলি হিন্দু’। কিন্তু দিঘার কর্মসূচি থেকে সুকান্তের ‘দূরত্ব’ বা শুভেন্দুর ‘বিরোধিতা’ দিলীপের সিদ্ধান্তের উপরে কোনও প্রভাব ফেলেনি।

মুর্শিদাবাদ থেকে কলকাতা ফেরার সময়ে ফোনে আনন্দবাজার ডট কমকে দিলীপ বলেন, ‘‘দিঘার অনুষ্ঠানে আমি যাব কি না, ঠিক নেই। তবে যাব না বলিনি।’’ দিলীপের কথায়, ‘‘মুখ্যসচিব চিঠি দিয়ে আমাকে নিমন্ত্রণ করেছেন। সময় পেলে সেখানে যেতে আমার কোনও আপত্তি নেই। দিঘার অনুষ্ঠান নিয়ে আমার আলাদা করে কোনও আগ্রহ নেই। কিন্তু কোনও বিরোধিতাও নেই।’’ তা হলে কি অক্ষয়তৃতীয়ার দিন দিঘার জগন্নাথধামে দিলীপকে দেখা যাচ্ছে? এই প্রশ্নের কোনও নিশ্চিত উত্তর মেদিনীপুরের প্রাক্তন সাংসদ দেননি। তবে বলেছেন, ‘‘সময় পাওয়ার উপরে নির্ভর করছে। বুধবার হাওড়ার শ্যামপুরে আমার একটি কর্মসূচি আগে থেকেই নির্ধারিত হয়ে রয়েছে। সেখানে আগে যাব। তার পরে যদি সময় পাই, তা হলে দিঘাতেও যাব।’’

অর্থাৎ দিঘাতে বুধবার তাঁকে দেখা যাচ্ছে কি না, তা নিয়ে মঙ্গলবার রাতে নিশ্চিত ভাবে কিছু বললেন না দিলীপ। কিন্তু রাজ্যে এই মুহূর্তে তাঁর দলের অন্যতম শীর্ষনেতা যিনি, সেই শুভেন্দুর সঙ্গে তাঁর অবস্থানের যে বিস্তর ফারাক, তা-ও স্পষ্ট করে দিলেন। দিঘায় মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে এই মন্দির নির্মাণের সমালোচনা একাধিক বার শোনা গিয়েছে শুভেন্দুর মুখে। কিন্তু দিলীপ বুঝিয়ে দিলেন, তাঁর ভাবনা শুভেন্দুর সঙ্গে মিলছে না। এর আগে পাকিস্তানের জাতীয় পতাকা পোড়ানোর ঘটনাতেও শুভেন্দু-দিলীপের দু’রকম অবস্থান প্রকাশ্যে এসেছে। পহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসবাদীদের গুলিতে ২৬ জনের মৃত্যুর পরে শুভেন্দু ২৬টি পাকিস্তানি জাতীয় পতাকা পুড়িয়েছিলেন কলকাতায়। দিলীপ বলেছিলেন, কোনও দেশের জাতীয় পতাকা পোড়ানোকে তিনি সমর্থন করেন না। এ বার জগন্নাথধামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান নিয়েও দু’জন দুই পথে। রাজ্য বিজেপির দুই সামনের সারির নেতার অবস্থানের ফারাক কি ক্রমশ বাড়ছে? প্রশ্ন ঘুরছে বিজেপির অন্দরেও।

Advertisement
আরও পড়ুন