Highrise Booth Election Commission

বহুতলে ভোটকেন্দ্র তৈরি নিয়ে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আর আলোচনা নয়! কিসের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেবে নির্বাচন কমিশন?

রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে, বিশেষত শহরাঞ্চলে আবাসনগুলিতে পৃথক ভোটকেন্দ্র তৈরির পরিকল্পনা করেছে কমিশন। তবে এ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলির অবস্থান ভিন্ন। তাই আর তাদের সঙ্গে কোনও আলোচনা করা হবে না।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০২৫ ২১:৫৮
পশ্চিমবঙ্গের বহুতলগুলিতে পৃথক ভোটকেন্দ্র তৈরির ভাবনা নির্বাচন কমিশনের।

পশ্চিমবঙ্গের বহুতলগুলিতে পৃথক ভোটকেন্দ্র তৈরির ভাবনা নির্বাচন কমিশনের। —ফাইল চিত্র।

পশ্চিমবঙ্গের বহুতলগুলিতে পৃথক ভোটকেন্দ্র তৈরি করতে আগ্রহী নির্বাচন কমিশন। তবে এ বিষয়ে আর কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করা হবে না। কমিশন সূত্রে খবর, জেলা নির্বাচনী আধিকারিকদের রিপোর্টের ভিত্তিতেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করতে গেলে বিষয়টি আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে। কারণ, এ বিষয়ে বিভিন্ন দলের অবস্থান বিভিন্ন রকম। তাই আর আলোচনার পথে না-যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

Advertisement

রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে, বিশেষত শহরাঞ্চলে আবাসনগুলিতে পৃথক ভোটকেন্দ্র তৈরির পরিকল্পনা করেছে কমিশন। বলা হয়েছিল, ২৫০টি পরিবার অথবা ৫০০ জন ভোটার রয়েছেন, এমন বহুতল ভবন, গ্রুপ হাউজ়িং সোসাইটি, কলোনি, বস্তি এলাকায় ভোটকেন্দ্র তৈরির বিষয়ে সমীক্ষা করতে হবে ডিইও-দের। প্রস্তাবিত ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের তালিকা কমিশনের কাছে জমা দিতে হবে। গত সোমবার সেই রিপোর্ট জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ থেকে মাত্র দু’টি রিপোর্ট নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জমা পড়ে। এতে কমিশন অসন্তোষ প্রকাশ করে এবং নতুন করে ডিইও-দের সমীক্ষার নির্দেশ দেওয়া হয়। ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে জেলা নির্বাচনী আধিকারিকদের। সূত্রের খবর, তাঁদের রিপোর্টের উপর ভিত্তি করেই বহুতলে ভোটকেন্দ্র তৈরির সিদ্ধান্ত নেবে কমিশন। যেখানে নতুন ভোটকেন্দ্রের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে, সেখানেই তা তৈরি করা হবে।

বহুতলে ভোটকেন্দ্র নিয়ে ডিইও-দের বিরুদ্ধে উদাসীন মনোভাবের অভিযোগ তুলেছিল কমিশন। প্রত্যাশা অনুযায়ী রিপোর্ট জমা না-পড়ায় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক (সিইও) মনোজকুমার আগরওয়ালকে চিঠি দিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়েছিল। নিয়ম অনুযায়ী, ডিইও-রা কমিশনের নির্দেশ মানতে বাধ্য। দু’বার বলা সত্ত্বেও কেন তাঁরা সমীক্ষার রিপোর্ট জমা দেননি, প্রশ্ন উঠেছিল। বৃহস্পতিবার এ রাজ্যে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধনের (এসআইআর) এনুমারেশন পর্ব শেষ হয়েছে। আগামী ১৬ ডিসেম্বর প্রকাশিত হবে খসড়া ভোটার তালিকা। তার পরে ডিইও-রা নতুন করে বহুতলগুলিতে সমীক্ষা করবেন।

কলকাতা এবং পার্শ্ববর্তী এলাকার বেশ কিছু বিধানসভা কেন্দ্রে অভিজাত বহুতল আবাসনের সংখ্যা গত দু’দশকে চোখে পড়ার মতো বেড়েছে। পরিসংখ্যান বলছে, কলকাতার ক্ষেত্রে এই বহুতলবাসীরা মোট ভোটের ৮-১০ শতাংশ। কিন্তু এখানকার ভোটারেরা অনেকেই নিরাপত্তাজনিত কারণে ভোটকেন্দ্রে যান না। তাঁদের ভোটদানে উৎসাহিত করতে আবাসনের ভিতরেই ভোটকেন্দ্র তৈরির কথা ভেবেছে কমিশন। ওই সমস্ত ভোটকেন্দ্রে বাইরে থেকে কেউ প্রবেশ করতে পারবেন না। পৃথক নিরাপত্তার বন্দোবস্তও থাকবে। কিন্তু প্রথম থেকেই কমিশনের এই পরিকল্পনার বিরুদ্ধে সরব তৃণমূল। কয়েক দিনের ব্যবধানে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমারকে জোড়া চিঠি লিখেছেন। তাঁর প্রশ্ন ছিল, ‘‘বুথ সব সময়েই সরকারি বা আধা-সরকারি জায়গায় হয়ে থাকে। আবাসনে বুথ তৈরি হয় কী ভাবে?’’ বিতর্কের মাঝে বহুতলে ভোটকেন্দ্র নিয়ে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা না-করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল।

Advertisement
আরও পড়ুন