—প্রতীকী চিত্র।
ভোট নেই, সংসদও নেই। অথচ ক্যাম্পাসে ছাত্র-নেতাদের আচরণই বিড়ম্বনার কারণ হচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেসের।
তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবস পালনের প্রস্তুতি বৈঠকে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-নেতাদের কাজকর্ম নিয়ে এ ভাবেই সরব হলেন সংগঠনের প্রাক্তন সভাপতিরা। দক্ষিণ কলকাতা আইন কলেজের সাম্প্রতিক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমান নেতৃত্বকে সতর্ক করেই তাঁরা বলেছেন, দল ক্ষমতায় আসার আগে রাজনৈতিক লড়াই ছিল। ক্ষমতায় আসার পরে রাজনীতির নামে যা চলছে, তাতে প্রতিনিয়ত গোটা দল আর সরকারের ‘ভাবমূর্তি’ই ধাক্কা খাচ্ছে।
প্রত্যেক বছরের মতো ২৮ অগস্ট প্রতিষ্ঠা দিবস পালনের প্রস্তুতি শুরু করেছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। সেই উপলক্ষে বুধবার ডাকা বৈঠকে সংগঠনের তিন প্রাক্তন সভাপতি বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায়, অশোক রুদ্র, জয়া দত্তেরা সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে মুখ খুলেছেন। সূত্রের খবর, এ দিনের বৈঠকে দল তৈরির গোড়ার দিকের ছাত্র সভাপতি বৈশ্বানর নতুন প্রজন্মের প্রতিনিধিদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমরা সিপিএমের আমলে ছাত্র রাজনীতি করেছি। রাজনৈতিক অশান্ত, মারামারি ইত্যাদি হয়েছে। কিন্তু এখন কোথাও সংসদ নেই, রাজনীতিও সে ভাবে কিছু নেই। অথচ যে সব বিষয়ে আমাদের ছাত্র সংগঠনের নাম জড়িয়ে যাচ্ছে, তা দুর্ভাগ্যের।’ কলেজে বাৎসরিক অনুষ্ঠানের আয়োজনও যে সব সময় ছাত্রসুলভ হচ্ছে না, সে কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি।
আইন কলেজে সংগঠনেরই এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল এক ছাত্র-নেতার বিরুদ্ধে। শুধু তা-ই নয়, সেই সূত্রেই রাজ্যের বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যলয়ে শাসক দলের ছাত্র-নেতাদের দাপাদাপি নিয়েও নানা অভিযোগ উঠতে শুরু করে। এই অবস্থায় সংগঠনের প্রতিষ্ঠা দিবসের আগে কার্যত আত্মসমালোচনার সুরই শোনা গিয়েছে এ দিনের বৈঠকে। আর এক প্রাক্তন সভাপতি অশোকও বৈঠকে বলেছেন, ‘ছাত্র রাজনীতিতে সংসদ দখলের লড়াই হয়। বিরোধীদের সঙ্গে অশান্তি বা কখনও কখনও নিজেদের মধ্যেও পদ ইত্যাদি নিয়ে গোলমাল হয়েছে। কিন্তু এ সব কী হচ্ছে! এতে আমাদের লজ্জা হয়’। ঘুরিয়ে ছাত্র সংগঠনের নাম করে ক্যাম্পাসকে অর্থোপার্জনে ব্যবহার করা হচ্ছে বলেও তাঁরা অভিযোগ করেন। একই সুর ছিল জয়ার কথাতেও।
পূর্বসূরিদের সমালোচনার পরে সংশোধনের কথা বলেন সংগঠনের রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য। সূত্রের খবর, তাঁর বক্তব্য ছিল, ‘এটা ঠিকই যে, যে কোনও ইউনিট তৈরি ও পরিচালনার জন্য আমাদের আরও সতর্ক থাকতে হবে। কাকে নিচ্ছি, কেন নিচ্ছি, ইত্যাদি দেখতে হবে’।