OBC Certificate Case

সোমবার ওবিসি মামলার শুনানি হল না সুপ্রিম কোর্টে! কবে কাটবে প্রবেশিকা সংক্রান্ত জট?

গত বৃহস্পতিবার রাজ্য জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডের ফলপ্রকাশ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ওবিসি সংক্রান্ত জটিলতার জেরে সেই ফলপ্রকাশও আপাতত বিশ বাঁও জলে। যার জেরে অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে লক্ষ লক্ষ ছাত্রছাত্রীর ভবিষ্যৎ।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০২৫ ১৮:২৮

— প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

রাজ্যের অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির (ওবিসি) শংসাপত্রের বিজ্ঞপ্তি সংক্রান্ত মামলার শুনানি হল না সুপ্রিম কোর্টে। সোমবার শীর্ষ আদালতে প্রধান বিচারপতি বিআর গবইয়ের বেঞ্চে ওই মামলার শুনানি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সোমবার শুনানি হয়নি। সুপ্রিম কোর্ট সূত্রে খবর, চলতি সপ্তাহে ওই মামলার শুনানি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

Advertisement

সুপ্রিম কোর্ট সূত্রে খবর, সোমবার রাজ্যের ওবিসি সংক্রান্ত মামলাটি তালিকার ৩৫ নম্বরে ছিল। প্রথমার্ধে, অর্থাৎ সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত পর পর বিভিন্ন মামলার শুনানি চলতে থাকে। শেষে দেখা যায় যে, ওই সময়ের মধ্যে তালিকা সম্পূর্ণ করা সম্ভব হয়নি। অর্থাৎ তালিকায় থাকা সব মামলার শুনানি হয়নি। বিরতির পর দুপুর ২টো থেকে স্পেশ্যাল বেঞ্চ বসে। আগে থেকেই নির্ধারিত ছিল যে, দুপুর ২টো থেকে ওই কক্ষে অন্য মামলার শুনানি হবে। বিকেল পর্যন্ত সেই মামলারই শুনানি চলেছে। ফলে সোমবার ওবিসি শংসাপত্রের বিজ্ঞপ্তি সংক্রান্ত মামলার শুনানি হয়নি সুপ্রিম কোর্টে। তবে শীর্ষ আদালত সূত্রে খবর, চলতি সপ্তাহেই এই মামলার শুনানি হতে পারে।

গত ২৮ জুলাই ওবিসি শংসাপত্রের বিজ্ঞপ্তি সংক্রান্ত মামলায় কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশের উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। হাই কোর্টের ওই রায় নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল শীর্ষ আদালতে। সোমবার সুপ্রিম কোর্টে সেই মামলারই শুনানি হওয়ার কথা ছিল। প্রসঙ্গত, গত বছর এপ্রিল মাসে ২০১০ সালের পরের সমস্ত ওবিসি শংসাপত্র বাতিল করে দেয় কলকাতা হাই কোর্ট। বলা হয়, সামাজিক, আর্থিক এবং পেশাগত ভাবে সব জনগোষ্ঠীর মধ্যে সমীক্ষা করতে হবে। তার পর নতুন করে ওবিসি তালিকা প্রস্তুত করতে হবে। উল্লেখ্য, ২০১০-এর আগে পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে মোট ৬৬টি জনগোষ্ঠীকে ওবিসি বলে ধরা হত। ২০১০ সালে তৎকালীন বাম সরকারের আমলে ৪২টি এবং ২০১২ সালে তৃণমূল সরকারের আমলে আরও ৩৫টি জনগোষ্ঠীকে ওবিসি বলে চিহ্নিত করা হয়। তাদেরকেই বাতিল করে দেয় উচ্চ আদালত। হাই কোর্ট আরও জানায়, ২০১০ সালের আগে পর্যন্ত যে ৬৬টি জনগোষ্ঠী অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির অংশ ছিল কেবলমাত্র তাদেরই শংসাপত্র গ্রাহ্য হবে চাকরির নিয়োগ কিংবা কলেজে ভর্তিতে। ইতিমধ্যে রাজ্য একটি সমীক্ষা করে ওবিসি নিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করে। তার বিরুদ্ধেই হাই কোর্টে মামলা হয় এবং সেটির উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দেয় হাই কোর্ট। পরবর্তীতে হাই কোর্টের ওই নির্দেশ নিয়ে প্রশ্ন তোলে সুপ্রিম কোর্ট। হাই কোর্টের নির্দেশের উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়।

এর মাঝে আবার গত বৃহস্পতিবার রাজ্য জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডের ফলপ্রকাশ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ওবিসি সংক্রান্ত জটিলতার জেরে সেই ফলপ্রকাশও আপাতত বিশ বাঁও জলে। যার জেরে অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে লক্ষ লক্ষ ছাত্রছাত্রীর ভবিষ্যৎ। গত বৃহস্পতিবার হাই কোর্টের বিচারপতি কৌশিক চন্দের বেঞ্চ জয়েন্টের মেধাতালিকা বাতিল করার নির্দেশ দেন। নতুন করে মেধাতালিকা প্রকাশ করার জন্য বলা হয় জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডকে। আদালতের নির্দেশ, অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি (ওবিসি)-র পড়ুয়াদের জন্য পূর্বের মতো ৭ শতাংশ সংরক্ষণই বরাদ্দ থাকবে। তা ছাড়া, নতুন ওবিসি তালিকা মেনে মেধাতালিকা প্রকাশ করা যাবে না। তালিকা প্রকাশ করলে তা করতে হবে পুরনো বিধি মেনে। অর্থাৎ, ২০১০ সালের আগের ৬৬টি ওবিসি সম্প্রদায়ের তালিকার ভিত্তিতেই নতুন মেধাতালিকা তৈরি করতে হবে। হাই কোর্টের এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। ফলে এর পরের শুনানিতে সেই প্রসঙ্গও উঠতে পারে শীর্ষ আদালতে।

Advertisement
আরও পড়ুন