Mamata Banerjee on West Bengal State Budget 2025

রাজ্য বাজেটে তাঁর ‘ভিশন’ জানালেন মমতা, কোথায় কত কর্মসংস্থান, ক্ষেত্র ধরে ধরে তথ্য দিলেন মুখ্যমন্ত্রী

গ্রামীণ এলাকা এবং শহরের অর্থনীতির মেলবন্ধনের কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘গ্রামীণ মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি হবে। পাশাপাশিই শহরের অর্থনীতিও পুষ্ট হবে। আমরা মেলবন্ধন করতে চাই।’’

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২১:১৪
How many jobs will be created in which sector, CM Mamata Banerjee gave statistics

—ফাইল ছবি।

তৃতীয় মেয়াদে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন, অতঃপর তাঁর কাজের অভিমুখ হবে শিল্পায়ন এবং কর্মসংস্থান। গত সপ্তাহে বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের মঞ্চ থেকে বিনিয়োগ, শিল্পায়ন এবং কর্মসংস্থানের বার্তা দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বুধবার রাজ্য বাজেট পেশের পরে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী ক্ষেত্র ধরে জানিয়ে দিলেন, কোথায় কত কর্মসংস্থান হবে। মমতা বলেন, ‘‘এই বাজেটে আমার একটা ‘ভিশন’ রয়েছে। সেটা হল কর্মসংস্থান।’’

Advertisement

উল্লেখ্য, ২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটের আগে এটাই ছিল মমতার সরকারের শেষ পূর্ণাঙ্গ বাজেট। বিধানসভা ভোটের প্রাক্কালে ‘ভোট অন অ্যাকাউন্ট’ পেশ হতে পারে। নতুন সরকার এসে পূর্ণাঙ্গ বাজেট পেশ করবে। সেটাই রীতি। ফলে বুধবারের বাজেট মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আগামী বিধানসভা ভোটে যাওয়ার মঞ্চও বটে। এবং মমতা জানিয়েছেন, সেই মঞ্চের প্রথম ধাপেই লেখা রয়েছে ‘কর্মসংস্থান’।

How many jobs will be created in which sector, CM Mamata Banerjee gave statistics

গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

মমতা জানান, বীরভূমের মহম্মদবাজার ব্লকে ডেউচা-পাঁচামি কয়লাখনিতে যে খননকাজ শুরু হয়েছে, ধীরে ধীরে সেখানে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে এক লক্ষ কর্মসংস্থান তৈরি হবে। মুখ্যমন্ত্রী এ-ও বলেন, ‘‘ডেউচা-পাঁচামিতে যে পরিমাণ কয়লা মিলবে, তাতে আগামী ১০০ বছর বিদ্যুৎ উৎপাদনে আমাদের কোনও চিন্তা থাকবে না।’’ এর পরেই মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজারহাটে সিলিকন ভ্যালির আদলে যে তথ্যপ্রযুক্তি প্রকল্প গড়ে উঠছে, সেখানে প্রাথমিক ভাবে স্থির করা হয়েছিল ১০০ একর জমি লাগবে। কিন্তু এখন তা ২০০ একরে পৌঁছে গিয়েছে। ওই তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে সরাসরি ৭৫ হাজার কর্মসংস্থান হবে বলে দাবি মমতার।

বানতলা চর্মনগরীতে ইতিমধ্যেই পাঁচ লক্ষ মানুষ কাজ করছেন বলে জানিয়েছেন মমতা। পাশাপাশিই, যে পরিমাণ বিনিয়োগ সেখানে আসছে, তাতে অচিরেই আরও আড়াই লক্ষ কর্মসংস্থান হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যে ছ’টি রাস্তা হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। যে রাস্তাগুলির দু’ধারে গড়ে উঠবে শিল্প। রঘুনাথপুর-তা়জপুর, ডানকুনি-ঝাড়গ্রাম, ডানকুনি-কল্যাণী, ডানকুনি-কোচবিহার, খড়্গপুর-মোড়গ্রাম এবং পুরুলিয়া-জোকা-কলকাতা— এই ছ’টি করিডর তৈরির প্রস্তাব রাখা হয়েছে বাজেটে। ২০২৫-’২৬ অর্থবর্ষে এই ছ’টি রাস্তারই নির্মাণ কাজ শুরু হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। যে খাতে বরাদ্দ করা হয়েছে ৪,৪০০ কোটি টাকা। মমতার কথায়, ‘‘রাস্তার কাজ হতে হতে যাবে। পাশাপাশিই চাকরিও হতে হতে যাবে।’’

গ্রামীণ এলাকা এবং শহরের অর্থনীতির মেলবন্ধনের কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘গ্রামীণ মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি হবে। পাশাপাশিই শহরের অর্থনীতিও পুষ্ট হবে। আমরা মেলবন্ধন করতে চাই।’’ বাংলার ছেলেমেয়েরা যাতে রাজ্যেই কাজ পান, তাঁদের যাতে অন্যত্র যেতে না হয়, সে ব্যাপারেও গুরুত্ব আরোপ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের ছেলেমেয়েরা বাইরে গেলে তাঁদের তাড়িয়ে দেওয়া হয়। বাংলার যোগ্যতাকে সম্মান দেওয়া হয় না।’’

যদিও বিরোধী দলগুলি সমস্ত দাবিকেই ‘ভুয়ো’ বলে কটাক্ষ করেছে। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্য, ‘‘এই বাজেট দিশাহীন। ২০২৬ সালের ভোটের পরে বিজেপির সরকার ক্ষমতায় এসে পূর্ণাঙ্গ বাজেট করে প্রতি পরিবারের এক জনের চাকরি নিশ্চিত করবে।’’ সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের কথায়, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী এ রকম আগেও বলেছেন। উনিই আবার ভোটের প্রচারে গিয়ে বলবেন, চপ-মুড়ি বিক্রি করে তিনতলা বাড়ি করতে!’’

Advertisement
আরও পড়ুন