Kasba Rape Incident

কসবায় ধর্ষণে মূল অভিযুক্তের নাম আইনজীবীদের তালিকা থেকে বাদ দিয়ে দিল রাজ্য বার কাউন্সিল, পাঠানো হবে কেন্দ্রেও

কসবায় গণধর্ষণকাণ্ডে মূল অভিযুক্তের নাম আইনজীবীদের তালিকা থেকে বাদ দিয়ে দিল রাজ্য বার কাউন্সিল। এর ফলে রাজ্যের আর কোনও আদালতে মামলা লড়তে পারবেন না তিনি।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৫ ১৮:২০
বার কাউন্সিল থেকে নাম বাদ পড়ল কসবাকাণ্ডের অভিযুক্তের।

বার কাউন্সিল থেকে নাম বাদ পড়ল কসবাকাণ্ডের অভিযুক্তের। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

কসবায় গণধর্ষণকাণ্ডে মূল অভিযুক্তের নাম আইনজীবীদের তালিকা থেকে বাদ দিয়ে দিল রাজ্য বার কাউন্সিল। কেন্দ্রীয় বার কাউন্সিলেও এই সিদ্ধান্ত পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন রাজ্য বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অশোককুমার দেব। কসবায় ধর্ষণের ঘটনায় যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে, তার প্রেক্ষিতেই এই সিদ্ধান্ত। মূল অভিযুক্ত-সহ চার জনকে এই ঘটনায় গ্রেফতার করেছে পুলিশ। কলকাতা পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) তদন্ত চালাচ্ছে। সঙ্গে তদন্তের ভার দেওয়া হয়েছে গোয়েন্দা বিভাগকেও।

Advertisement

কসবার সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজের ক্যাম্পাসের ভিতরে ধর্ষণের অভিযোগ তুলেছেন ওই কলেজের এক ছাত্রী। মূল অভিযোগ যাঁর বিরুদ্ধে, তিনি কলেজের প্রাক্তনী এবং অস্থায়ী কর্মী। অভিযোগ, তৃণমূলের ছাত্র পরিষদ টিএমসিপি-র গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন এই অভিযুক্ত। আলিপুর আদালতে আইনজীবী হিসাবে প্র্যাকটিস করতেন তিনি। বার কাউন্সিলের এই সিদ্ধান্তের ফলে রাজ্যের আর কোনও আদালতে তিনি আইনজীবী হিসাবে মামলা লড়তে পারবেন না।

বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান কসবাকাণ্ডের মূল অভিযুক্তের ‘এনরোলমেন্ট’ বাতিলের সিদ্ধান্ত জানাতে গিয়ে বলেন, ‘‘বার কাউন্সিলের সকলে মিলে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ওঁর নাম আমরা তালিকা থেকে সরিয়ে দিলাম। আমরা যথাস্থানে চিঠি পাঠিয়ে দেব। ওঁর সঙ্গে আইনজীবী সংগঠন এবং বার কাউন্সিলের আর কোনও সম্পর্ক নেই। কে কেমন, আমাদের পক্ষে আগে থেকে তা জানা সম্ভব নয়। তবে আমরা ওঁর কঠোর শাস্তির জন্য বদ্ধপরিকর। তদন্তে সহযোগিতা করব। ওঁর যেন যথাযথ শাস্তি হয়, সেই দাবি জানাচ্ছি। নির্যাতিতার পরিবার আমাদের কাছে কোনও সাহায্য চাইলে আমরা সাহায্য করব।’’

রাজ্য বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান প্রসূন দত্ত বলেন, ‘‘আমরা কসবার ঘটনার তীব্র নিন্দা করি। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে রাজ্য বার কাউন্সিল পদক্ষেপ করেছে। তাঁর নাম এনরোলমেন্ট থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। তবে যে ভাবে আন্দোলন করা হচ্ছে, তার নিন্দা করি। অনেকে অভিযুক্তের সঙ্গে অশোককুমার দেবের ছবি দেখিয়ে আন্দোলন করছেন। এটা ঠিক নয়। সঠিক পদ্ধতিতে আন্দোলন হওয়া উচিত।’’

কসবার নির্যাতিতা ছাত্রী জানিয়েছেন, প্রথমে কলেজের ইউনিয়ন রুমে তাঁকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়। তার পর নিরাপত্তারক্ষীর ঘরে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করা হয়। এক জনই তাঁকে ধর্ষণ করেছেন বলে অভিযোগ ছাত্রীর। তবে অভিযোগপত্রে তিনি কলেজের আরও দুই ছাত্রের নাম করেছেন। অভিযোগ, তাঁরা ধর্ষণের সময়ে রক্ষীর ঘরের বাইরে পাহারায় ছিলেন। এই কাজে মূল অভিযুক্তকে তাঁরা সহায়তা করেছেন। ওই দু’জনও টিএমসিপি-র সঙ্গে যুক্ত বলে দাবি। ছাত্রী জানিয়েছেন, ধর্ষণে বাধা দিতে গেলে তাঁকে হকি স্টিক দিয়ে মারধরের চেষ্টা করা হয়। ধস্তাধস্তির সময় তাঁর প্যানিক অ্যাটাক হয়েছিল। তিনি ইনহেলার চেয়েছিলেন। দোকান থেকে তা এনে দিয়েছিলেন অভিযুক্তেরা। তার পর আবার তাঁকে ধর্ষণ করা হয়। এই ঘটনা কাউকে বললে তাঁর প্রেমিককে খুন করা এবং বাবা-মাকে গ্রেফতার করিয়ে দেওয়ার হুমকিও দেন অভিযুক্তেরা। গোটা ঘটনার সময়ে উপস্থিত ছিলেন কলেজের নিরাপত্তারক্ষীও। তাঁকে ঘরের বাইরে বসিয়ে রাখা হয়েছিল। নির্যাতিতা জানিয়েছেন, রক্ষী অসহায় ছিলেন। তিন অভিযুক্ত এবং এই রক্ষীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

(ধর্ষণ বা শ্লীলতাহানির ঘটনায় যত ক্ষণ না অভিযুক্তকে আদালতে দোষী সাব্যস্ত করা হচ্ছে, তত ক্ষণ তাঁর নাম-পরিচয় প্রকাশে আইনি বাধা থাকে। সেই কারণে আনন্দবাজার ডট কম কসবার ধর্ষণকাণ্ডে তিন অভিযুক্তের নাম এবং ছবি প্রকাশে বিরত থাকছে)


Advertisement
আরও পড়ুন