Kolkata Accident

রেলিংয়ে ধাক্কা খেয়ে গাড়িতে বিস্ফোরণ, মাঝে আটকে ঝলসে মৃত্যু ডেলিভারি বয়ের! পুলিশ- জনতা সংঘর্ষে রণক্ষেত্র সল্টলেক

কেষ্টপুর এবং সল্টলেকের মাঝে ৮ নম্বর ব্রিজের কাছে নিয়ন্ত্রণ হারায় একটি গাড়ি। রেলিংয়ে ধাক্কা খেয়ে তাতে আগুন ধরে যায়। মাঝে আটকে পড়েন বাইক আরোহী ডেলিভারি বয়।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০২৫ ১৮:৫২
সল্টলেকে দুর্ঘটনা, গাড়ির আগুনে ঝলসে গেলেন ডেলিভারি বয়।

সল্টলেকে দুর্ঘটনা, গাড়ির আগুনে ঝলসে গেলেন ডেলিভারি বয়। —নিজস্ব চিত্র।

সল্টলেকে পথদুর্ঘটনার বলি ডেলিভারি বয়। রাস্তার ধারের রেলিংয়ে ধাক্কা খেয়ে একটি চারচাকার গাড়িতে বিস্ফোরণ ঘটে। মাঝে কোনও ভাবে আটকে পড়েছিলেন বাইক আরোহী ওই যুবক। গাড়ির আগুনে ঝলসে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। মৃতের নাম সৌমেন মণ্ডল। ঘটনার পর স্থানীয়েরা পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। এলাকায় চাঞ্চল্য রয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে নামানো হয় র‌্যাফও। পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়েরা। ইটবৃষ্টি হয়।

Advertisement

পুলিশের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাতে প্রচুর মানুষ ঘটনাস্থলে জড়ো হয়েছিলেন। সন্ধ্যার পর জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পদক্ষেপ করা হয়। পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। বিক্ষুব্ধ জনতাও পাল্টা পাথর ছুড়তে শুরু করে পুলিশের দিকে। সেতুর দু’দিক থেকেই পাথর ছোড়া হয়। বেশ কিছু ক্ষণ সংঘর্ষ চলেছে। পরিস্থিতি রণক্ষেত্রের আকার নেয়।

কেষ্টপুর এবং সল্টলেকের মাঝে ৮ নম্বর ব্রিজের কাছে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। সূত্রের খবর, বুধবার বিকেলে চারচাকার একটি গাড়ির সঙ্গে কুরিয়ার সার্ভিসের গাড়ির সংঘর্ষ হয়। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার ধারের রেলিংয়ে ধাক্কা মারে চারচাকা। মুহূর্তের মধ্যে গাড়িটিতে বিস্ফোরণ হয় এবং দাউদাউ করে জ্বলে ওঠে আগুন। ঘটনাস্থলেই বাইক নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন ডেলিভারি বয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, কোনও ভাবে ওই রেলিংয়ের মাঝে তিনি আটকে পড়েছিলেন। গাড়িতে যাঁরা ছিলেন, তাঁদের বার করা সম্ভব হলেও ওই যুবককে উদ্ধার করা যায়নি। গাড়ির আগুনে দগ্ধ হয়ে যান তিনি। দু’টি গাড়ি থেকেই জখমদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাঁদের মধ্যে এক জনের আঘাত গুরুতর। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁর চিকিৎসা চলছে।

দমকল সূত্রে জানা গিয়েছে, বিকেল ৫টা ৪০ মিনিট নাগাদ তাদের কাছে এই দুর্ঘটনার খবর যায়। দমকলের দু’টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে গিয়েছিল। আগুন নিয়ন্ত্রণে এনে ওই ডেলিভারি বয়কে উদ্ধার করা হয়েছে। গোটা ঘটনায় পুলিশের গাফিলতির দিকে আঙুল তুলেছেন স্থানীয়েরা। অভিযোগ, সময় থাকতেও পুলিশ নীরব দর্শক হয়ে ছিল। যুবককে উদ্ধারের চেষ্টা করা হয়নি। পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন স্থানীয়েরা। এক প্রত্যক্ষদর্শীর কথায়, ‘‘পুলিশের সামনেই যা হওয়ার হয়েছে। পুলিশ কিছু না করে ভিডিয়ো বানাচ্ছিল। আমরা ছুটে গিয়ে গাড়ি থেকে লোকজনকে উদ্ধার করি। চালক নেশাগ্রস্ত ছিলেন। পুলিশ ঠিকমতো কাজ করলে এটা হত না।’’ আর এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘‘আমরা অনেক চেষ্টা করেছিলাম। বালতি দিয়ে জল ঢেলেছি। এত আগুন, আমরা ধারেকাছেই যেতে পারিনি। ছেলেটা পুড়ে গেল।’’

ঠিক কী কারণে এই দুর্ঘটনা, গাড়িটি কেন নিয়ন্ত্রণ হারাল, কী ভাবে কোন পরিস্থিতিতে সেখানে আটকে গেলেন ডেলিভারি বয়, তা এখনও স্পষ্ট নয়। সল্টলেক পূর্ব থানা বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।

পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘আমরা এসে দেখি, একটা গাড়িতে আগুন ধরে গিয়েছে এবং এক জন মারা গিয়েছেন। সেই দেহ আমরা উদ্ধার করি। গাড়িতেও কয়েক জন আটকে পড়েছিলেন। তাঁদের এখান থেকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। দমকল আসার সময়েও কয়েক জন ঢিল ছুড়েছিলেন। এখানে অনেকে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন। আমরা প্রথমে কিছু বলিনি। কিন্তু তাঁরা রাস্তা আটকানোর চেষ্টা করেন। আমাদের তখন কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করতে হয়েছে।’’

Advertisement
আরও পড়ুন