গামবুট কেনার প্রক্রিয়া শুরু করেছিল ‘বঙ্গশ্রী’ বা ‘দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট হ্যান্ডিক্রাফটস কোঅপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড’। —প্রতীকী চিত্র।
দরপত্র না ডেকেই দমকলের কর্মী, আধিকারিকদের জন্য প্রায় আড়াই কোটি টাকার জুতো কেনার প্রক্রিয়ার পুরোটাই বাতিল করল দমকল দফতর। দফতর সূত্রের খবর, বিশেষ একটি সংস্থাকে সুবিধা পাইয়ে দিতেই কর্মী ও আধিকারিকদের জন্য সাড়ে ছ’হাজার জুতো ও ছ’হাজার গামবুট কেনার প্রক্রিয়া শুরু করেছিল ‘বঙ্গশ্রী’ বা ‘দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট হ্যান্ডিক্রাফটস কোঅপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড’। সেই খবর সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হতেই শোরগোল পড়ে যায়।
বৃহস্পতিবার দমকলের সচিবালয়ের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘‘বিশেষ একটি সংস্থাকে সুবিধা পাইয়ে দিতে যে প্রক্রিয়ায় ‘বঙ্গশ্রী’ জুতো কিনতে উদ্যোগী হয়েছিল, তা সম্পূর্ণ বেআইনি। এ বার দরপত্র ডেকে বিধি মাফিক জুতো কিনতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই প্রক্রিয়ায় একাধিক সংস্থা অংশ নেওয়ার সুযোগ পাবে। অর্থ দফতরে এই সংক্রান্ত ফাইল পাঠানো হচ্ছে।’’ ওই কর্তার সাফ কথা, ‘‘আমরা ভাল মানের সামগ্রী চাই। বঙ্গশ্রীকে তা পরিষ্কার জানানো হয়েছে।’’
প্রশ্ন উঠেছে, ‘বঙ্গশ্রী’ দরপত্র ছাড়াই জুতো কেনার জন্য সমস্ত নিয়মকানুন অগ্রাহ্য করে কেবল একটি সংস্থাকে সুযোগ দিল কেন? এত বড় বেআইনি কাজে যাঁরা যুক্ত ছিলেন, ‘বঙ্গশ্রী’র সেই দায়িত্বপ্রাপ্তকর্মী-আধিকারিকদের বিরুদ্ধে কেন কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হল না? এই প্রসঙ্গে রাজ্যের ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প দফতরের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহবলেন, ‘‘পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
নিয়ম অনুযায়ী, কোনও সরকারি দফতরের জন্য সামগ্রী কিনতে হলে গেজ়েট বিজ্ঞপ্তি জারি করে দরপত্র প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হয়। যে সংস্থা সর্বনিম্ন দামে ভাল মানের সামগ্রী সরবরাহ করবে, সরকারি তরফে সেই সংস্থাকেই বরাত দেওয়া হয়। কিন্তু ‘বঙ্গশ্রী’র বিরুদ্ধেঅভিযোগ, তারা কোনও নিয়মই মানেনি। একটি সংস্থা জুতো সরবরাহের জন্য বার বার ‘বঙ্গশ্রী’র কাছে দরবার করলেও তাদের সুযোগ দেওয়া হয়নি। তখন ওই সংস্থা বাধ্য হয়ে তথ্য জানার অধিকার আইনে দমকলে চিঠি দেয়। তার পরেই দমকলের অন্দরে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। দমকলের আধিকারিকদের একাংশের অভিযোগ, ‘‘এর আগে দমকলের কর্মীদের পোশাক বিতরণের ক্ষেত্রেও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছিল। তার পরে বছরে কর্মী-পিছু নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা বরাদ্দ করা হয়। ওই টাকাতেই তাঁরা পোশাক তৈরি করিয়ে নেন। একই ভাবে জুতোর ক্ষেত্রেও কর্মী-পিছু টাকা বরাদ্দ করলে স্বচ্ছতা ফিরবে।’’