ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউটের প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানে প্রণব বর্ধন। — নিজস্ব চিত্র।
আইএসআই বিল, ২০২৫-এর বিরুদ্ধে বিক্ষোভের আবহেই পালিতহল ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউটের প্রতিষ্ঠা দিবস। অনুষ্ঠান-মঞ্চের বাইরে কর্মীদের নীরববিক্ষোভ চলল। আর ভিতরে কার্যনির্বাহী নির্দেশক সঙ্ঘমিত্রা বন্দ্যোপাধ্যায় মনে করিয়ে দিলেন, শতবর্ষের দোরগোড়ায় উপনীত প্রতিষ্ঠানটির গুরুত্বের কথা। এই মঞ্চেই অর্থনীতিবিদ প্রণব বর্ধন পেলেন ইন্ডিয়ান ইকনোমেট্রিক সোসাইটি প্রদত্ত সি আর রাও শতবার্ষিকী স্বর্ণপদক।
অধ্যাপক বর্ধন তাঁর বক্তৃতায় বলেন, দুনিয়া জুড়ে ক্রমবর্ধমান অসাম্যের মধ্যে আরও খারাপ অবস্থায় আছেন শ্রমিকেরা। দেখা যাচ্ছে,মোট আয়ে শ্রমের ভাগ ক্রমেই নিম্নমুখী, অর্থাৎ শ্রমের মূল্য কমছে। তার কারণ কী? অধ্যাপক বর্ধনের মতে, এর অন্যতম কারণ, দুনিয়া জুড়েই আর্থিক পুঁজি কুক্ষিগতহচ্ছে মাত্র কয়েকটি সংস্থারহাতে। ফলে শ্রমিকদের বঞ্চনার পরিমাণও বাড়ছে। রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের ভূতপূর্ব ডেপুটি গভর্নর বিরলআচার্যের এক গবেষণাপত্রের উল্লেখ করে অধ্যাপক বর্ধন বলেন, ২০১৬ থেকে ২০২১-এর মধ্যে ভারতে মাত্র পাঁচটি সংস্থার হাতে বাজারের ক্ষমতা আগেরতুলনায় অনেক বেশি কুক্ষিগতহয়েছে। পাশাপাশি, বৈশ্বিক অর্থব্যবস্থা এমন প্রযুক্তি বেছে নিচ্ছে, যাতে শ্রমিকের প্রয়োজন কম, যন্ত্রই কাজ করছে।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কথা উল্লেখকরে প্রণববাবু বলেন, এই প্রযুক্তিকে আরও বেশি মানুষেরকর্মসংস্থান হওয়ার মতো কাজে ব্যবহার করা যায় কিনা, বৈশ্বিকপুঁজি সে কথা না ভেবে তাকে ব্যবহার করছে শ্রমিকের সংখ্যা কমিয়ে আনার কাজে। গত কয়েক দশকে দুর্বল হয়েছে শ্রমিকসংগঠনগুলিও। তাতে যেমন কর্মীদের দর কষাকষির ক্ষমতা কমেছে, অন্য দিকে ক্ষতি হচ্ছে বাণিজ্যিক সংস্থাগুলিরও। কারণ, শ্রমিকদের কণ্ঠস্বর শোনা না গেলে ক্ষুণ্ণহতে পারে কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তা। অবশ্য, ভারতের ক্ষেত্রে সমস্যাযে অন্য রকম, সে কথাও মনেকরিয়ে দিলেন তিনি। এ দেশের প্রতি দশ জন শ্রমিকের মধ্যে ন’জনইকাজ করেন অসংগঠিত ক্ষেত্রে, ফলে কোনও শ্রম আইন বা সামাজিক সুরক্ষাই তাঁদের জন্য প্রযোজ্যহয় না। গিগ অর্থনীতির বাড়বাড়ন্তএই শ্রমিকদের ঠেলে দিচ্ছে আরও বিপদের মধ্যে।