—প্রতীকী চিত্র।
সবুজ শহর নিউ টাউনে বিকল্প শক্তি ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রকল্প শুরু হয়েছে। নিউ টাউন কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (এনকেডিএ) জানাচ্ছে, বলাকা আবাসনের কাছে রাস্তায় প্রায় ৯০টিআলো জ্বালানো হচ্ছে মিথেন গ্যাস ব্যবহার করে। যার সিংহভাগই আসছে নিউ টাউনের বিভিন্ন হোটেলের আর্দ্র আবর্জনা থেকে। প্রতিদিন বিভিন্ন হোটেল থেকে পাঁচ টন করে ওই বর্জ্য সংগ্রহ করে তা দিয়ে বিকল্প বিদ্যুৎ তৈরি হচ্ছে।
উল্লেখ্য, নিউ টাউনে অনেক দিন ধরেই সাধারণ বর্জ্যকে আর্দ্র এবং শুষ্ক—এই দু’ভাগে ভাগ করে সংগ্রহের প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আবাসিক বাড়িগুলি থেকে ওই ভাবে আবর্জনা ভাগ করে নেওয়া সম্ভব হয় না। যে কারণে আবর্জনা থেকে দূষণহীন পদ্ধতিতে বিকল্প শক্তি উৎপাদনের প্রচেষ্টা মাঝপথে ব্যাহত হচ্ছিল। এমতাবস্থায় নিউ টাউনের হোটেলগুলি ভিজে আবর্জনা সরবরাহ করায় সেখানকার বলাকা আবাসনের কাছে ওই প্রকল্প বাস্তবায়িত করা সম্ভব হচ্ছে বলে আধিকারিকেরা জানান।
এনকেডিএ সূত্রের খবর, স্মার্ট সিটি প্রকল্পের আওতায় এই ভাবেবিকল্প উপায়ে বিদ্যুৎ তৈরির কথা বলা হয়েছে। বলাকা আবাসন ও তার উল্টো দিকে রাতে এ ভাবেই মিথেন গ্যাস থেকে বিদ্যুৎ তৈরিকরে আলো জ্বালানো হচ্ছে। হোটেলগুলি তাদের বাণিজ্যিক নির্দেশিকা অনুযায়ী ভেজা ও শুকনো আবর্জনা আলাদা ভাবে সংগ্রহ করে। বর্তমানে নিউ টাউনের চার-পাঁচটি বড় হোটেল থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় আবর্জনাসংগ্রহ করা সম্ভব হচ্ছে।
কিন্তু আবাসিক এলাকায় প্রতি বাড়িতে দু’ধরনের আবর্জনা সংগ্রহের পাত্র দেওয়া সত্ত্বেও ভেজা আবর্জনার ততটা জোগান হচ্ছে না।
উল্লেখ্য, ধাপায় আবর্জনা উপচে পড়া নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই কলকাতা পুরসভা সরব। তারা আশপাশের বিভিন্ন পুরসভাকে অনুরোধ করছে আবর্জনা ফেলার বিকল্প জায়গা খুঁজতে।
এনকেডিএ মনে করছে, পরিকল্পিত উপায়ে আবর্জনা সংগ্রহ করে কাজে লাগাতে পারলে আগামী দিনে ধাপার উপরে নির্ভরতা কমতে পারে। সংস্থার এক পদস্থ আধিকারিক বলেন, ‘‘প্রতিটি বাড়ি থেকে ভেজা আবর্জনার জোগান বাড়াতে প্রচার আরও বাড়ানো হবে। যাতে নাগরিকেরা উপলব্ধি করতে পারেন সমস্যাসমাধানের জায়গাটি। এ ভাবে ভেজা আবর্জনা থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিমাণ বাড়ানো গেলে দূষণবিহীন শহর তৈরি করা যেতে পারে। একই সঙ্গে, আবর্জনা ফেলার জায়গার সমস্যাও মিটতে পারে। আমাদের প্রকল্পটি মাঝেমধ্যে আটকে যায় আবর্জনার জোগান না থাকায়। এ ক্ষেত্রে নাগরিকেরা সচেতন হলে আগামী দিনে এমন প্রকল্প আরও প্রসারিত করা যেতে পারে।’’
এনকেডিএ জানাচ্ছে, আপাতত বলাকা আবাসনের কাছে এক কিলোমিটার রাস্তা বিকল্প বিদ্যুৎ থেকে আলোকিত হচ্ছে।পঁয়তাল্লিশটি বাতিস্তম্ভের প্রতিটিতে দু’টি করে আলো লাগানো হয়েছে। ভবিষ্যতে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্প মেনে এমন ভাবে আরও বেশি পরিমাণে বিদ্যুৎ উৎপাদন তৈরির সুযোগ রয়েছে।