—প্রতীকী চিত্র।
বছর দেড়েক আগে দেশ জুড়ে চালু হয়েছিল ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা (বিএনএসএস)। নতুন আইনে অপরাধমূলক কোনও ঘটনার তদন্তে তল্লাশি চালানোর কিংবা জিনিসপত্র বাজেয়াপ্ত করার সময়ে গোটা প্রক্রিয়ার ভিডিয়ো করে দু’দিনের মধ্যে আদালতে জমা দেওয়ার নিয়ম চালু হয়েছে। সূত্রের দাবি, কলকাতা পুলিশের তদন্তকারীরা মোবাইলে ওই ভিডিয়ো করে তা আদালতে পেনড্রাইভের মাধ্যমে পেশ করছিলেন। কিন্তু এ বার থেকে এই ধরনের ভিডিয়ো মোবাইলে তুলে আদালতে পেনড্রাইভের মাধ্যমে পেশ করা যাবে না। তার বদলে ই-সাক্ষ্য অ্যাপের মাধ্যমে ভিডিয়ো তুলতে হবে ঘটনাস্থল থেকে। যা সরাসরি চলে যাবে আদালতে।
ইতিমধ্যেই লালবাজারের তরফে তদন্তকারীদের ই-সাক্ষ্য অ্যাপের ব্যবহার শুরু করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যার ভিত্তিতে পরীক্ষামূলক ভাবে তদন্তকারীরা ওই অ্যাপের ব্যবহার শুরু করেছেন। উল্লেখ্য, রাজ্য পুলিশের তদন্তকারীরা কয়েক মাস আগে থেকেই ওই অ্যাপ ব্যবহার করছেন তদন্তের কাজে।
লালবাজার সূত্রের খবর, তদন্তকারী অফিসার ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিজের মোবাইলে থাকা ওই নতুন অ্যাপের মাধ্যমে তল্লাশি এবং জিনিসপত্র বাজেয়াপ্ত করার গোটা প্রক্রিয়ার ভিডিয়ো রেকর্ডিং করবেন। ওই রেকর্ডিং প্রক্রিয়া শেষ হলে সেই ভিডিয়ো স্বয়ংক্রিয় ভাবেই চলে যাবে আদালতের বিচারকের কাছে। এর ফলে আদালতে নতুন করে তল্লাশি বা বাজেয়াপ্ত প্রক্রিয়ার ভিডিয়ো জমা দিতে হবে না। এ ছাড়া, আদালত যখন খুশি ওই ফুটেজ দেখতে পারবে। ই-সাক্ষ্য অ্যাপে তোলা ভিডিয়ো তদন্তকারী অফিসারের পাশাপাশি আদালতের বিচারকও দেখতে পাবেন। যদিও ওই অ্যাপ ব্যবহারের আগে থানার ওসি-র অনুমতি নিতে হবে তদন্তকারীকে। তিনি অনুমতি দিলে তবেই তদন্তকারী অফিসার তা ব্যবহার করতে পারবেন। ই-সাক্ষ্য অ্যাপ ব্যবহার করতে হলে তদন্তকারীকে সংশ্লিষ্ট মামলার ও নিজের সম্পর্কে তথ্য আপলোড করতে হবে। ওই অ্যাপের মাধ্যমে দশ মিনিটের বেশি দীর্ঘ ভিডিয়ো তোলা যাবে না। তবে দশ মিনিট করে একাধিক ভিডিয়ো তোলা যাবে।
এক পুলিশকর্তা জানান, সব ঘটনায় আগে থেকে এফআইআর হয় না। তাই মামলার নম্বর না থাকলে জিডি (জেনারেল ডায়েরি) নম্বর দিতে হবে তদন্তকারী অফিসারকে। আদালতের সঙ্গে ওই ভিডিয়ো ফুটেজ পুলিশের ডেটা সেন্টারে জমা থাকবে।
কেন পুলিশকর্তারা ওই অ্যাপের ব্যবহারে জোর দিচ্ছেন? সূত্রের দাবি, ঘটনাস্থল থেকে সরাসরি ভিডিয়ো তুলে তা আদালতে জমা দেওয়া যাবে বলে পুরো বিষয়টিতে স্বচ্ছতা থাকবে। কোনও ভাবেই কেউ ভিডিয়ো বিকৃত করতে পারবেন না। আবার অ্যাপে ঘটনাস্থল থেকে ভিডিয়ো আপলোড করার ফলে ঘটনাস্থল কোথায় এবং কোথা থেকে তা আপলোড করা হচ্ছে, তা নিশ্চিত ভাবে সেখানে চিহ্নিত হয়ে যাবে। এর ফলে, অন্য জায়গার ভিডিয়ো ফুটেজ ওই অ্যাপে আপলোড করা যাবে না বলে পুলিশ আধিকারিকদের বিশ্বাস।