Special Intensive Revision

শুনানির আগে তিন মৃত্যু, চড়ল বিতর্ক

তৃণমূল কংগ্রেস এই পরিস্থিতির জন্য নির্বাচন কমিশন ও বিজেপির জবাবদিহি দাবি করছে। বিজেপির পাল্টা দাবি, যে কোনও মৃত্যুর সঙ্গে এসআইআর-কে জুড়ে দিয়ে ‘বিভ্রান্তি’ তৈরি করা হচ্ছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৭:৩৮

—প্রতীকী চিত্র।

শুনানি-পর্ব শুরুর মুখেও ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধনের (এসআইআর) জেরে ‘আতঙ্কে’ মৃত্যুর অভিযোগ ঘিরে বিতর্ক অব্যাহত। এক বুথ লেভল অফিসার (বিএলও) এবং দুই ভোটারের মৃত্যুতে ফের উঠল এসআইআর সংক্রান্ত কাজের চাপ ও আতঙ্কের অভিযোগ। তৃণমূল কংগ্রেস এই পরিস্থিতির জন্য নির্বাচন কমিশন ও বিজেপির জবাবদিহি দাবি করছে। বিজেপির পাল্টা দাবি, যে কোনও মৃত্যুর সঙ্গে এসআইআর-কে জুড়ে দিয়ে ‘বিভ্রান্তি’ তৈরি করা হচ্ছে।

উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ার দেবিঝোরায় শুক্রবার স্থানীয় বিএলও বিপিন টপ্পো (৪৫)-র গলায় ফাঁস দেওয়া দেহ মেলে। তিনি বালাবাড়ি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক ছিলেন। বাড়িতে তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী রয়েছেন। সন্ধ্যায় মৃতের বাড়িতে যান মন্ত্রী গোলাম রব্বানি, বিধায়ক হামিদুর রহমান-সহ তৃণমূলের একাধিক নেতা। মন্ত্রীর অভিযোগ, ‘‘কাজের চাপে এই ঘটনা। এ জন্য দায়ী নির্বাচন কমিশন।’’ পরিবার সূত্রেরও দাবি, সম্প্রতি কাজের চাপ বেড়েছিল বিএলও-র।

মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়ায় দিনমজুর নিমাই মাল (৪৪) হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন। পরিবারের দাবি, এসআইআর আতঙ্কে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। তাঁর বাবার নাম ২০০২ সালে ভোটার তালিকায় ছিল শ্যামল রায়। এখন ভোটার তালিকায় রয়েছে শ্যামল মাল। নোটিসে বলা হয়েছে, এই দুই ব্যক্তি যে একই, তা প্রমাণ করতে হবে। অভিযোগ, এতেই আতঙ্কিত হয়েছেন ওই ব্যক্তি। শুনানির চিঠি হাতে পাওয়ার পরে বৃহস্পতিবার রাতে পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনায় আলম শেখের (৬৫) মৃত্যুতেও আতঙ্কের অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল। তবে পরিবার সূত্রে খবর, হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন বৃদ্ধ। বাড়ি ফিরলেও অক্সিজেন দিতে হচ্ছিল। আলমের ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম ছিল না। তাই শুনানির চিঠি এসেছিল।

বিএলও-র মৃত্যু প্রসঙ্গে এ দিন আরামবাগে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, ‘‘বিএলও-র তো কাজই শেষ। তা হলে মৃত্যুর কারণ আবার কী হবে? ময়না-তদন্ত হবে। মৃত্যুর কারণ কী দেখবে পুলিশ।’’ তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের দাবি, ‘‘তুচ্ছ কারণে সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে কমিশন। বিজেপিকে সুবিধা করে দিতে কমিশন একের পর এক মৃত্যু ডেকে আনছে। এই রকম পরিকল্পনাহীন, হঠকারী কাজের জবাবদিহি করতে হবে তাদের।’’ বর্ষীয়ান বিজেপি নেতা তাপস রায়ের পাল্টা মত, ‘‘যে কোনও মৃত্যুই দুঃখজনক। কিন্তু তৃণমূল এই মৃত্যুগুলোর সঙ্গে এসআইআর-কে গুলিয়ে দিয়ে পুরো প্রক্রিয়াটা বন্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা করছে। ওরা চায় না মৃত ভোটার, অনুপ্রবেশকারী, ভুয়ো ভোটার বাদ যাক। প্রতি বছর বড় পরীক্ষার ফলাফল বেরোনোর পরে কিছু অসফল পরীক্ষার্থী অথবা প্রত্যাশিত ফলাফল হয়নি এমন পরীক্ষার্থী আত্মহত্যা করে, তা হলে তো এখন পরীক্ষা ব্যবস্থাটাই তুলে দিতে হয়!’’ আর বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, “মুখ্যমন্ত্রী এসআইআর নিয়ে ভীত, আতঙ্কিত। তাই শীতকালীন অধিবেশনও হয়নি বিধানসভায়।”

আরও পড়ুন