SIR Death

বেঙ্গালুরুতে মৃত্যু বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকের! পরিবারের দাবি, এসআইআর সংক্রান্ত ভিডিয়ো দেখে আতঙ্কিত ছিলেন

মুর্শিদাবাদের নওদা ব্লকের বালি-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের শ্যামনগর গ্রামের বাসিন্দা শেরফুল শেখ। যদিও কর্মসূত্রে থাকতেন বেঙ্গালুরুতে। বুধবার সকালে সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০২৫ ১৯:১৪
West Bengal migrant worker dies in Bengaluru, family claims he fell ill due to fear of SIR

এসআইআর আতঙ্কে আবার মৃত্যুর অভিযোগ। ছবি: এআই সহায়তায় প্রণীত।

‘এসআইআর আতঙ্কে’ আবার এ রাজ্যের এক বাসিন্দার মৃত্যু! পরিবারের দাবি, গত কয়েক দিন ইউটিউবে ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) সংক্রান্ত নানা ধরনের ভিডিয়ো দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন মুর্শিদাবাদের ওই বাসিন্দা। সেই আতঙ্ক থেকেই হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি মৃতের পরিবারের।

Advertisement

মুর্শিদাবাদের নওদা ব্লকের বালি-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের শ্যামনগর গ্রামের বাসিন্দা শেরফুল শেখ। যদিও কর্মসূত্রে থাকতেন বেঙ্গালুরুতে। সেখানে পরিযায়ী শ্রমিক হিসাবে কাজ করতেন। পরিবারের দাবি, এসআইআর প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর থেকেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন শেরফুল। কী ভাবে ফর্মপূরণ করবেন— তা নিয়ে নিজের মনেই দ্বন্দ্ব ছিল তাঁর। তাই এসআইআর সংক্রান্ত বিভিন্ন ভিডিয়ো দেখতেন তিনি।

২০০২ সালের এসআইআর তালিকায় নাম ছিল শেরফুলের। কিন্তু তাতেও তাঁর আতঙ্ক কাটছিল না বলে দাবি পরিবারের। স্থানীয় বুথ লেভেল অফিসার (বিএলও)-কেও ফোন করে এসআইআর সংক্রান্ত খবরাখবর নিতেন প্রায়ই। ওই বিএলও জানিয়েছেন, আতঙ্কিত শেরফুল বার বার বলতেন, তাঁকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। যদিও ওই বিএলও বার বার তাঁকে আশ্বস্ত করেছিলেন, কোনও অসুবিধা হবে না। তার পরেও আতঙ্ক কাটেনি শেরফুলের।

বুধবার সকালে হঠাৎই বুকে ব্যথা অনুভব করেন শেরফুল। দ্রুত তাঁকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে তাঁকে পরীক্ষা করে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। তাঁরা আরও জানান, হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়েই মৃত্যু হয়েছে শেরফুলের। তাঁর মৃত্যুর খবর নওদায় তাঁর গ্রামের বাড়ি পৌঁছোতেই শোকের ছায়া নেমে আসে পরিবারে। তারা বার বার দাবি করছে, এসআইআর আতঙ্কই প্রাণ কাড়ল শেরফুলের।

দিন কয়েক আগে এই নওদা থানার অন্তর্গত ছাতুমারা অঞ্চলের বাসিন্দা ইসরাইল মোল্লার নামে আরও এক পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। পরিবারের দাবি, ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম ছিল না তাঁর। সেই কারণে আতঙ্কে ভুগছিলেন। গত ২৭ অক্টোবর রাজ্যে এসআইআর ঘোষণা হওয়ার পর থেকে ‘আতঙ্কে’ অনেকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। কেউ আত্মহত্যা করেছেন, কোথাও আবার ‘আতঙ্কে’ অসুস্থ হয়ে মৃত্যুর অভিযোগ। বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতরও শুরু হয়েছে। বিজেপির দাবি, রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল এসআইআর নিয়ে মানুষকে ভুল বুঝিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে। পাল্টা তৃণমূলের দাবি, সরকারি নির্দেশে কেউ নাগরিকত্ব হারাচ্ছেন না। কিন্তু সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করছে বিজেপিই। শুধু সাধারণ মানুষ নন, এখনও পর্যন্ত দুই বিএলও-রও মৃত্যু হয়েছে। অভিযোগ, এসআইআরের কাজের চাপই মৃত্যুর কারণ!

Advertisement
আরও পড়ুন