Glenary's Bar and Restaurant

দার্জিলিঙের ‘গ্লেনারিজ়’ রেস্তরাঁর পানশালা তিন মাসের জন্য বন্ধ করল আবগারি দফতর, নেপথ্যে কি গোর্খাল‍্যান্ড সেতু বিতর্ক!

দিন দুয়েক আগে একটি নবনির্মিত সেতুর সামনে ‘গোর্খাল্যান্ড’ লিখে তা উদ্বোধন করে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন ‘ইন্ডিয়ান গোর্খা জনশক্তি ফ্রন্ট’ প্রধান অজয়। সে ক্ষেত্রেও উঠেছিল বেনিয়ম ও অবৈধ নির্মাণের অভিযোগ।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০২৫ ০০:২৭
পানশালা ও মিউজ়িকের অনুমতি না থাকার অভিযোগে বন্ধ পানশালা।

পানশালা ও মিউজ়িকের অনুমতি না থাকার অভিযোগে বন্ধ পানশালা। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

দার্জিলিঙের ঐতিহ‍্যবাহী রেস্তরাঁ ‘গ্লেনারিজ়’। তার নীচের তলার পানশালা এবং লাইভ মিউজ়িক মঙ্গলবার থেকে তিন মাসের জন‍্য বন্ধ করে দিল আবগারি দফতর। ওই পানশালার বিরুদ্ধে অনিয়মের একাধিক অভিযোগ উঠেছে বলে জানা গিয়েছে। প্রয়োজনীয় নথি ছাড়াই ওই পানশালা চালানোর অভিযোগ উঠেছে অজয় এডওয়ার্ডের বিরুদ্ধে। দিন দুয়েক আগে একটি নবনির্মিত সেতুর সামনে ‘গোর্খাল্যান্ড’ লিখে তা উদ্বোধন করে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন ‘ইন্ডিয়ান গোর্খা জনশক্তি ফ্রন্ট’ প্রধান অজয়। সে ক্ষেত্রেও উঠেছিল বেনিয়ম ও অবৈধ নির্মাণের অভিযোগ।

Advertisement

আবগারি দফতর সূত্রে খবর, নির্দিষ্ট নথি ও নিয়ম বহির্ভূত কর্মকাণ্ডের অভিযোগে আগামী তিন মাসের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ওই রেস্তরাঁর পানশালা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আবগারি দফতরের এক আধিকারিক বলেন, “বেনিয়ম হয়েছে এমন অভিযোগের উপর ভিত্তি করে অভিযান চালানো হয়। কাগজপত্রের ত্রুটি আছে৷ তাই আগামী তিন মাসের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে লাইসেন্স। তবে তিন মাসের মধ্যে কর্তৃপক্ষ আপিল করতে পারেন। তবে অনিয়মের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থাই নেওয়া হবে।”

সম্প্রতি বিজনবাড়ি ব্লকের জোড়বাংলোয় টুংসুং চা-বাগানের কাছে টুংসুং খোলা (নদী)-র উপরে একটি সেতু তৈরি হয়। রবিবার সেই সেতুর উদ্বোধন করেন অজয়। তার সামনে লেখা ‘গোর্খাল্যান্ড’। পাহাড়ের রাজনৈতিক শিবিরের একাংশের অভিযোগ, পাহাড়বাসী ও পাহাড়ের আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলগুলির দীর্ঘ বছরের ‘পৃথক রাজ্য গোর্খাল্যান্ড’-এর দাবি মেটেনি। সেই দাবিকে জিইয়ে রাখতেই সেতুতে ‘গোর্খাল্যান্ড’ লেখা হয়েছে। এ ভাবেই রাজনৈতিক ফায়দা তোলা হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে ‘গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ (জিটিএ)। তবে অজয়ের দাবি, বার বার দরবার করলেও সরকার তা শোনেনি। এই সেতু সরকারি নয়। পাহাড়বাসীর চাঁদায় তৈরি। এই সেতু নিয়ে বিতর্ক থাকার কথা নয়। তিনি বলেন, ‘‘‘পৃথক রাজ্য গোর্খাল্যান্ড আমাদের স্বপ্ন, আমাদের আবেগ। কিন্তু ২০১৭ সালের পর থেকে সেই দাবি অনেকটাই স্তিমিত হয়ে গিয়েছে। তাই সেই দাবিকে আবার মানুষের মনে জাগিয়ে তুলতে এই নামকরণ করা হয়েছে।’’

স্থানীয় সূত্রে দাবি করা হয়েছে, ১৪০ ফুট দীর্ঘ সেতু তৈরিতে সরকার, জিটিএ বা স্থানীয় প্রশাসন কোনও টাকা খরচ করেনি। এমনকি অনুমতিও নেওয়া হয়নি প্রশাসনের। সেতুটি স্থানীয় মানুষ, ১৬ টি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ও অজয়ের আর্থিক সাহায্যে তৈরি হয়েছে। টুংসুং চা-বাগানের সঙ্গে ধোতরে ভ্যালির মধ্যে যোগাযোগের সুবিধার জন্য এই সেতুর দাবি ছিল অনেক দিনের। সেই দাবি মেনেই সেতু। শুধু নামকরণ নিয়েই বিতর্ক নয়। ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার অভিযোগ, এই সেতু বেআইনি ভাবে তৈরি।

সেতু নিয়ে বিতর্ক চলাকালীনই আবগারি অভিযানে বন্ধ হল অজয়ের রেস্তরাঁর পানশালা। এখানেও অভিযোগ সেই অনিয়মের। দু’টি ঘটনা ভিন্ন হলেও পাহাড়ের রাজনৈতিক মহলের একাংশ এর মধ‍্যে ‘যোগসূত্র’ খুঁজে পেয়েছেন।

জিটিএর মুখপাত্র শক্তি শর্মা বলেন, ‘‘পানশালা ও মিউজ়িকের অনুমতি ছিল না বলেই ৯০ দিনের জন্য তা বন্ধ করে দিয়েছে আবগারি দফতর।’’

Advertisement
আরও পড়ুন