(বাঁ দিকে) হুমায়ুন কবীর। সিভিক ভলান্টিয়ার তথা হুমায়ুনের দলের প্রার্থী মুস্তারা বিবি (ডান দিকে)। —নিজস্ব ছবি।
হুমায়ুন কবীরের দলের প্রার্থী হওয়ায় এক সিভিক ভলান্টিয়ারকে কাজ থেকে বসিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল মালদহে। তবে কাজ হারিয়ে আফসোস করছেন না সেই সিভিক ভলান্টিয়ার। তাঁর দাবি, জানতেন এমনই পরিণতি হবে। তিনি প্রস্তুত হয়ে রাজনীতির ময়দানে নেমেছেন। ভোটে তাঁকে জিততেই হবে।
গত সোমবার মুর্শিদাবাদের বেলডাঙা থেকে নতুন দল ঘোষণা করেন তৃণমূল থেকে সাসপেন্ড হওয়া ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন। শুধু ‘জনতা উন্নয়ন পার্টি’র ঘোষণাই নয়, ২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটের জন্য দশটি কেন্দ্রের প্রার্থীর নামও ঘোষণা করে দেন হুমায়ুন। তাঁদের মধ্যে বালিগঞ্জের প্রার্থী নিশা চট্টোপাধ্যায়ের নাম অবশ্য রাতারাতি প্রত্যাহারও করে নেন। এর মধ্যে মালদহের বৈষ্ণবনগর কেন্দ্রের জন্য যে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেন, সেই মুস্তারা বিবির অভিযোগ, তাঁকে রাতারাতি কাজ থেকে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। কার্যকারণ ব্যাখ্যা করেননি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ।
মালদহের বৈষ্ণবনগরের বিননগর-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা মুস্তারার বাপের বাড়ি বীরভূমের কালেশ্বরে। বছর কয়েক আগে কালেশ্বর থানায় সিভিক ভলান্টিয়ার হিসাবে কাজ পান তিনি। বিয়ের পরে বদলি হন বৈষ্ণবনগর থানায়। মুস্তারার স্বামী কুরবান আনসারি একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্ণধার। তা ছাড়া শাসকদলের সঙ্গে দীর্ঘ দিন যুক্ত ছিলেন বলে তাঁর দাবি। এখন রাজনীতি থেকে দূরে থাকা কুরবানের অভিযোগ, স্ত্রী একটি রাজনৈতিক দলের প্রার্থী হচ্ছেন বলে তাঁর চাকরি কেড়ে নেওয়া হয়েছে। পুরোটাই শাসকদলের অঙ্গুলিহেলনে হয়েছে। মুস্তারাও বলছেন, ‘‘প্রার্থী হতেই আমার কাজ কেড়ে নিয়েছে। সাসপেন্ড করে দিল!’’ পরক্ষণেই হুমায়ুনের দলের ওই প্রার্থী বলেন, ‘‘অবশ্য ভালই হয়েছে। সিভিকের (ভলান্টিয়ার) কাজ আর করবও না।’’
মুস্তারার অভিযোগের প্রেক্ষিতে জেলা পুলিশের তরফে প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তৃণমূল বিষয়টিতে পাত্তা দিতে নারাজ। মালদহ জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র আশিস কুন্ডু বলেন, ‘‘হুমায়ুন কবীর একটা বদ্ধ উন্মাদ। তিনি সকালে একটা কথা বলছেন, বিকেলে আর একটা কথা বলছেন। তাঁর দলের আবার প্রার্থী। তাঁকে নিয়ে আর কী বলব! এঁরা নোটার চেয়েও কম ভোট পাবেন।’’
বিজেপির বক্তব্য, হুমায়ুনের দল তৃণমূলেরই ‘বি টিম।’ দক্ষিণ মালদহ বিজেপির সহ-সভাপতি তারক ঘোষের মন্তব্য, ‘‘আমাদের লক্ষ্য এই সরকারকে উৎখাত করা। তাদের ‘বি টিম’ নিয়ে আমাদের কোনও উৎসাহ নেই।’’
এত দিন সিভিক ভলান্টিয়ার হিসাবে বিভিন্ন সভার ভিড় সামলানোর দায়িত্ব পেয়েছেন মুস্তারা। এখন নিজেই তিনি প্রার্থী। আপাতত রাজনীতিতে মন দিতে চান ওই মহিলা। তিনি বলেন, ‘‘রাজনীতিতে আমি নতুন। হুমায়ুন কবীর আমার গুরু। উনি যা বলবেন, সেই ভাবেই চলব। ভোটে জেতার ব্যাপারে আমি একশো শতাংশ আশাবাদী।’’ তিনি নিশানা করেছেন, বৈষ্ণবনগরের তৃণমূল বিধায়ক চন্দনা সরকারকে। মুস্তারা বলেন, ‘‘বৈষ্ণবনগর বিধানসভায় ৫ বছরে ওরা কী কাজ করেছে, তার জবাব মানুষই দেবে। তৃণমূল সংখ্যালঘুদের ভোট নিয়ে চলে গিয়েছে। কোনও কাজ করেনি।’’