Chaos in Bishnupur Fair

জিৎকে দেখার উন্মাদনায় ভাঙচুর, লুট দোকানে! বিষ্ণুপুর মেলায় ভিড় সামলাতে ব্যর্থ পুলিশ, পদপিষ্ট হয়ে আহত অনেকে

রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ মঞ্চে আসেন জিৎ এবং সহ-শিল্পীরা। কিছু ক্ষণের মধ্যে মঞ্চের সামনে ভিড় উপচে পড়ে। জিৎকে দেখতে বাঁকুড়া জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কাতারে কাতারে মানুষ জড়ো হয়েছিলেন মেলায়।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫ ১২:৪০
Jeet

(বাঁ দিকে) বিষ্ণুপুর মেলায় অতিথি জিৎ। অনুষ্ঠানে তাণ্ডবের পর পড়ে ভাঙা চেয়ার (ডান দিকে)। —নিজস্ব ছবি।

চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলার সাক্ষী হল বিষ্ণুপুর মেলা। শনিবার রাতে অভিনেতা জিতের অনুষ্ঠানে কার্যত জনজোয়ার হয়েছিল। মানুষের ভিড় সামাল দিতে পারেনি পুলিশ। অভিনেতাকে দেখতে না পেয়ে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ শুরু হয়। চলে ভাঙচুর। ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় অনুষ্ঠানস্থলে থাকা চেয়ার। ভাঙচুর চালানো হয়েছে মেলায় বসা অস্থায়ী দোকানেও।

Advertisement

রাঢ় বাংলার কুটিরশিল্প, পর্যটন এবং সংস্কৃতিকে তুলে ধরার উদ্দেশে প্রতি বছর বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরে মেলা বসে। এ বছর গত ২৩ ডিসেম্বর থেকে মেলা শুরু হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত আনন্দ মুখর ছিল পরিবেশ। তাল কাটে তার পরে। রাতে মেলার যদুভট্ট মঞ্চে একটি বিচিত্রা অনুষ্ঠান হয়েছিল। তাতে উপস্থিত হন টলিউড নায়ক জিৎ।

রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ মঞ্চে আসেন জিৎ এবং সহ-শিল্পীরা। কিছু ক্ষণের মধ্যে মঞ্চের সামনে ভিড় উপচে পড়ে। জিৎকে দেখতে বাঁকুড়া জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কাতারে কাতারে মানুষ জড়ো হয়েছিলেন মেলায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, ভিড় এতটাই বেড়ে যায় যে সামাল দিতে ব্যর্থ হয় পুলিশ। উৎসাহী দর্শকদের ধাক্কাধাক্কিকে কিছু ক্ষণের মধ্যেই রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় অনুষ্ঠানস্থল। উত্তেজিত দর্শকদের একাংশ মঞ্চের সামনে থাকা একাধিক ব্যারিকেড ভেঙে ফেলেন। ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় মঞ্চের সামনে থাকা কয়েকশো চেয়ার।

এমনকি, প্রবীণ নাগরিক এবং মহিলাদের বসার জায়গা করা হয়েছিল যেখানে, সেখানেও ভাঙচুর চলে। এর পর তাণ্ডব চলে আশপাশের দোকানগুলিতে। পরিস্থিতি সামলানোর জন্য লাঠিচার্জ করে পুলিশ। হুড়োহুড়িতে অনেকে আহত হন। তবে বিশৃঙ্খলা সত্ত্বেও অনুষ্ঠান শেষ হয় নির্বিঘ্নে। নির্দিষ্ট সময়ে মঞ্চ থেকে নেমে যান জিৎ এবং অন্যান্য কলাকুশলী।

মেলায় বিশৃঙ্খলার জেরে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের মধ্যে একজন তরুণ মজুমদার। তাঁর কথায়, ‘‘ব্যবসা করব বলে সেই দক্ষিণ ২৪ পরগনা থেকে এসে বিষ্ণুপুর মেলায় এসেছিলাম। জিলিপি, গজার দোকান দিয়েছিলাম। দোকানে ৫০-৬০ হাজার টাকার জিনিস ছিল। অনুষ্ঠান শুরুর কিছু ক্ষণের মধ্যে মিষ্টি থেকে নগদ টাকা, সব লুট হয়ে গিয়েছে।’’ তাঁর অভিযোগ, প্রথম থেকে পুলিশ তৎপর থাকলে এমনটা হত না। শনিবার রাতে অনুষ্ঠান দেখতে গিয়েছিলেন প্রসেনজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নামে এক স্থানীয় যুবক। তিনি বলেন, ‘‘বাড়ির শিশু ও মহিলাদের নিয়ে জিতের অনুষ্ঠান দেখতে এসেছিলাম। সেখানে এমন ধাক্কাধাক্কি শুরু হয় যে আমরা পড়ে যাই। ভেবেছিলাম পদপিষ্ট হয়ে মরে যাব। কোনও ক্রমে প্রাণে বেঁচেছি। যা হয়েছে, তাতে অনেকের মৃত্যু হতে পারত।’’

পুলিশের তরফে এ নিয়ে এখনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।

Advertisement
আরও পড়ুন