Illegal Bangladeshi Immigrants Case

বাংলাদেশি সন্দেহে হেনস্থার অভিযোগের মামলায় অন্তর্বর্তী নির্দেশ দিল না সুপ্রিম কোর্ট, কেন্দ্র ও রাজ্যের থেকে হলফনামা তলব

সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন রাজ্যে অবৈধ অভিবাসীদের চিহ্নিত করা শুরু হয়েছে। দিল্লি, গুজরাত, মহারাষ্ট্র-সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কয়েক মাস আগে থেকেই সন্দেহভাজন অবৈধ অভিবাসীদের ধরপাকড় শুরু হয়েছে। তার বিরুদ্ধেই সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০২৫ ১৩:২২
Supreme Court refuses ban on Illegal Bangladeshi immigrants

বাংলাদেশি সন্দেহে হেনস্থার অভিযোগের মামলা সুপ্রিম কোর্টে। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

বাংলাদেশি সন্দেহে দেশ জুড়ে বহু সন্দেহভাজনকে আটক করা হচ্ছে। অভিযোগ, বাংলায় কথা বললেই বাংলাদেশি সন্দেহে আটক করছে পুলিশ। পুলিশের বিরুদ্ধে ‘অতিসক্রিয়তা’র অভিযোগ তুলে আটক করা বন্ধ রাখার আবেদন জানিয়ে জনস্বার্থ মামলা হয় সুপ্রিম কোর্টে। বৃহস্পতিবার এই আবেদনের ভিত্তিতে কোনও অন্তবর্তিকালীন নির্দেশ দিতে অস্বীকার করেছে বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর বেঞ্চ। তারা জানিয়েছে, যদি আদালত এ ক্ষেত্রে কোনও অন্তবর্তী নির্দেশ দেয়, তবে বাংলাদেশ থেকে বৈধ নথি-সহ এ দেশে এসেছেন যাঁরা, তাঁদের সমস্যা হতে পারে। অন্তবর্তী নির্দেশ না-দিলেও মামলার শুনানিতে কোনও আপত্তি জানায়নি সুপ্রিম কোর্ট। শুধু তা-ই নয়, কেন্দ্র এবং রাজ্যগুলিকে নিজেদের বক্তব্য জানাতে বলেছে সুপ্রিম কোর্ট।

Advertisement

সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন রাজ্যে অবৈধ অভিবাসীদের চিহ্নিত করা শুরু হয়েছে। দিল্লি, গুজরাত, মহারাষ্ট্র-সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কয়েক মাস আগে থেকেই সন্দেহভাজন অবৈধ অভিবাসীদের ধরপাকড় শুরু হয়েছে। অনেক সন্দেহভাজন বাংলাদেশিও ধরা পড়েছেন। অভিযোগ, অনেক ক্ষেত্রেই পুলিশ অতিসক্রিয়। বাংলা ভাষায় কথা বললেই তাঁদের আটক করা হচ্ছে। অনেকে গ্রেফতারও হচ্ছেন। পুলিশের ভূমিকায় বিপদে পড়ছেন অনেক ভারতীয়। এই সব বিষয় নিয়েই শীর্ষ আদালতে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়।

বৃহস্পতিবার সেই মামলার শুনানিতে সব পক্ষের আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন না। শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ, ‘‘যে সব রাজ্যে এই পরিযায়ী শ্রমিকেরা কাজ করছেন, তাঁদের সম্পর্কে জানতে চাওয়ার অধিকার রয়েছে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের।’’

পশ্চিমবঙ্গ পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ বোর্ডের তরফে শীর্ষ আদালতে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। শুনানিতে মামলাকারীর পক্ষের আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ অভিযোগ করেন, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের জারি করা এক বিজ্ঞপ্তির ভিত্তিতে শুধুমাত্র বাংলায় কথা বলা এবং সেই ভাষায় থাকা নথির কারণে অনেককে হেনস্থার শিকার হতে হচ্ছে। প্রশান্তের কথায়, ‘‘ওই ব্যক্তিদের প্রকৃত পরিচয় সম্পর্কে তদন্ত চলার মাঝেই তাঁদের আটক করা হচ্ছে। এমনকি, কিছু ক্ষেত্রে তাঁদের উপর নির্যাতনও করছে পুলিশ।’’ তার পরেই মামলাকারীর পক্ষে আবেদন করা হয়, ধরপাকড় বন্ধ রাখার জন্য অন্তবর্তী নির্দেশ দিক আদালত। প্রশান্তের কথায়, ‘‘তদন্তে আমাদের কোনও আপত্তি নেই, কিন্তু তাঁদের এ ভাবে আটকে রাখা ঠিক নয়।’’ তবে আদালত বৃহস্পতিবার কোনও অন্তর্বতী নির্দেশ দেয়নি। আগামী ২৫ অগস্ট এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে। সেই দিনই কেন্দ্র এবং রাজ্যগুলির থেকে হলফনামা দিয়ে নিজেদের বক্তব্য জানাতে বলেছে শীর্ষ আদালত।

এই মামলা প্রসঙ্গে পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ বোর্ডের চেয়ারম্যান তথা রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ সামিরুল ইসলাম বলেন, ‘‘আমরা বাংলা ভাষাভাষী মানুষের ন্যায়বিচারের জন্য শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত আইনি লড়াই চালিয়ে যাব। মুখ্যমন্ত্রীর (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) নেতৃত্বে আমরা বাংলাবিরোধীদের বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে যাব এবং তাঁদের পরাজিত করব। এই দেশ সবার, আমাদেরও সমান অধিকার।’’

Advertisement
আরও পড়ুন