— প্রতীকী চিত্র।
বাংলা শিক্ষা এসএমএস (স্টুডেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম) পোর্টালে পড়ুয়াদের তৃতীয় পর্য়াক্রমিক মূল্যায়নে প্রাপ্ত নম্বর তুলতে গিয়ে রীতিমতো নাজেহাল অবস্থা শিক্ষকদের। তাঁদের একাংশের অভিযোগ, বেশিরভাগ সময় পোর্টাল কাজ করছে না। তাই নম্বর আপলোড করা যাচ্ছে না।
প্রসঙ্গত, তৃতীয় পর্যাক্রমিক মূল্যায়ন শেষ হয়েছে। খাতা দেখাও শেষ। শিক্ষকদের পড়ুয়াদের সারা বছরের মূল্যায়ন করে নম্বর তুলতে শুরু করার কথা। তার পরে পোর্টালে রিপোর্ট কার্ড বা মার্কশিট তৈরি করে তা ডাউনলোড করে প্রিন্ট করে পড়ুয়াদের দেওয়ার কথা। কিন্তু তিন-চার দিন ধরে সে কাজ কার্যত শিকেয় উঠেছে। এ দিকে হাতে মাত্র আর কয়েক দিন।
বস্তুত, মার্কশিট দেওয়ার পরেই পড়ুয়ারা নতুন ক্লাসে উঠবে। তার পরে ২ ডিসেম্বর তাদের নতুন ক্লাসে বই দেওয়ার কথা। পোর্টাল অকেজো হয়ে থাকলে এই কাজ কী ভাবে হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষকেরা। যদিও এই সমস্যা নিয়ে স্পষ্ট উত্তর শিক্ষা দফতরের কাছে মেলেনি। তারা শুধু ‘খতিয়ে দেখার’ আশ্বাস দিয়েছে।
শিক্ষকেরা জানান, এ বার শুধু পড়ুয়াদের পর্যায়ক্রমিক নম্বর পোর্টালে আপলোড করেই কাজ শেষ হচ্ছে না। ডোমজুড়ের কেশবপুর হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক দীপঙ্কর দাস বলেন, ‘‘এ বার পড়ুয়াদের রিপোর্ট কার্ড বেশ বড় হবে। কারণ, পর্যাক্রমিক নম্বর তোলা বাদেও পড়ুয়াদের হলিস্টিক রিপোর্ট কার্ডের কিছু তথ্য আপলোড করতে হচ্ছে। পোর্টাল কাজ না-করায় সেই সব তথ্যও আপলোড করা যাচ্ছে না।’’ শিক্ষকদের বক্তব্য, পোর্টালে নম্বর আপলোড করা চালু হওয়ার পর হাতে লেখা মার্কশিট দেওয়া নিষিদ্ধ হয়েছে। তাই হাতে লিখে মার্কশিটও পড়ুয়াদের দেওয়া যাবে না।
মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির পুরুলিয়া জেলা সম্পাদক ললিতকিশোর মাহাতোর দাবি, ‘‘দিনের দিকে এসএমএস পোর্টাল খুলছেই না। খুব সকাল বা রাতে হয় তো এক বার খুলছে। তবে তা খুব ঢিমেতালে চলছে। এ ভাবে কি কাজ হয়?’’ ঝাড়গ্রামের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক বলেন, ‘‘রামকৃষ্ণ মিশন পরিচালিত একলব্য আদর্শ আবাসিক বিদ্যালয়ে ২২ ডিসেম্বর থেকে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হবে। তার আগে পোর্টালে হলিস্টিক রিপোর্ট তুলে পড়ুয়াদের পরবর্তী ক্লাসে উন্নীত করতে হবে। কী ভাবে যে হবে!’’ ঝাড়গ্রামের দহিজুড়ি মহাত্মা বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক মৃন্ময় হোতার কথায়, ‘‘সময়ে মার্কশিট দিতে না পারলে সেই দায় স্কুলকেই নিতে হয়। শিক্ষাদফতর নীরব!’’
বাংলার শিক্ষা পোর্টালে সার্ভার ডাউন থাকায় উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় পরীক্ষার নম্বর আপলোড করতে শিক্ষক-শিক্ষিকারা বিপাকে পড়ছেন বলে অভিযোগ। এবিটিএ-র রাজ্য কমিটির সহকারী সম্পাদক সুজিত দাস বলেন, “এ বার সমস্যা অন্য বারের তুলনায় বেশি। কয়েক দিন ধরে পোর্টাল খুলছে না। সব জেলাতেই এক সমস্যা।” শিক্ষকদের অভিযোগ, কয়েক বছর ধরে তাঁরা এই পোর্টালের সার্ভার আপডেট করার আবেদন জানিয়েছেন। কিন্তু তা কানে তোলেনি শিক্ষা দফতর।
শিক্ষা দফতর সূত্রে দাবি করা হয়েছে যে, একসঙ্গে সবাই নম্বর তোলার চেষ্টা করায় সার্ভারে সমস্যা হচ্ছে বলে তাদের অনুমান। শিক্ষা দফতরের এক আধিকারিক দাবি করেছেন, নম্বর আপলোডে জেলাভিত্তিক ‘স্লট’ ভাগ করে দেওয়ার চিন্তাভাবনাও হচ্ছে। তাতে সার্ভারে চাপ এড়ানো যাবে।