Sari and Sarna Religion

সারি-সরনাকে ধর্মের স্বীকৃতি দিচ্ছে না কেন্দ্র, সংসদে অভিযোগ তৃণমূল সাংসদের

সারি ও সারনা ধর্মকে মর্যাদা দিতে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় প্রস্তাব পাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল দিল্লিতে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে। ২০২৪ সালে লোকসভা ভোটে এমন কৌশলের সুফল পেয়েছিল তৃণমূল।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৮:১২
Tmc MP Samirul Islam demands official recognition of Sari-Sarna religion in Rajya Sabha

তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সামিরুল ইসলাম। —ফাইল চিত্র।

আদিবাসী ভোটের বড় অংশে শান দিতে শুরু করল বাংলার শাসকদল তৃণমূল। সংসদে আদিবাসীদের ধর্ম সংক্রান্ত প্রশ্ন তুলে নরেন্দ্র মোদীর সরকারকে নিশানা করল বাংলার শাসকদল। বৃহস্পতিবার রাজ্যসভায় সারি ও সরনা ধর্মকে সরকারি স্বীকৃতি দেওয়ার জোরালো দাবি তুললেন তৃণমূল সাংসদ সামিরুল ইসলাম। বৃহস্পতিবার রাজ্যসভায় তিনি বলেন , ‘‘এই আদি ধর্ম প্রকৃতিপূজাকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা আদিবাসী সমাজের গভীর সাংস্কৃতিক পরিচয়। সাঁওতাল, ভূমিজ, মুন্ডা, কোড়া, লোধা, শবর, ওরাঁও, বিড়হোর, মেচা, রাভা, লোহারা, মহালি ও চিক বরাইক-সহ একাধিক জনজাতি সম্প্রদায়ের মানুষ প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে এই ধর্মীয় আচার-অনুশীলন, পালন করে আসছেন। পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গের কুর্মি জনসংখ্যারও একটি বড় অংশ সারি-সরনা ধর্মে বিশ্বাসী। লক্ষ লক্ষ মানুষের দৃঢ় আস্থা সত্ত্বেও এখনও পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সরকার এই ধর্মকে সরকারি স্বীকৃতি দেয়নি বলেই অভিযোগ সাংসদের।

Advertisement

সামিরুল স্মরণ করিয়ে দেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা ২০২৩ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি সারি-সরনা ধর্মকে স্বীকৃতি দিয়ে একটি প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে পাশ করেছিল। তা ২৭ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পাঠানোও হয়। কিন্তু প্রায় তিন বছর পেরিয়ে গেলেও কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। সাংসদের বক্তব্য, “দিল্লির সরকারকে মনে করিয়ে দিতে চাই— ভারতের সংবিধান প্রত্যেক নাগরিককে নিজের ধর্ম পালন করার মৌলিক অধিকার দিয়েছে। সেই অধিকার রক্ষা করাই সরকারের দায়িত্ব।”

প্রসঙ্গত, সারি ও সারনা ধর্মকে মর্যাদা দিতে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় প্রস্তাব পাশ করিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল দিল্লিতে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে। ২০২৪ সালে লোকসভা ভোটে তৃণমূলের এমন কৌশলের সুফল পেয়েছিল দল। আদিবাসী ভোটের বড় অংশে থাবা বসাতে সক্ষম হয়েছিল তারা। কিন্তু পুজোর পর উত্তরবঙ্গের দুর্যোগে ত্রাণ দিতে গিয়ে আক্রান্ত হন মালদহ উত্তরের বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু। তাঁকে মেরে নাক, মুখ ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগে ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। খগেন যেহেতু আদিবাসী সম্প্রদায়ের নেতা, তাই তাঁর আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টিকে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে আদিবাসী সম্প্রদায়ের কাছে তুলে ধরবে বিজেপি। পদ্মশিবিরের সেই কৌশলের জবাব দিতে পাল্টা কৌশল তৈরি করেছে তৃণমূল। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, আদিবাসীদের বহু দিনের দাবি সারি ও সারনা ধর্মকে মর্যাদা দেওয়ার। রাজ্য সরকার এ বিষয়ে পদক্ষেপ করলেও, কেন্দ্রীয় সরকার যে বিষয়টি ঝুলিয়ে রেখেছে, সেই বিষয়টি আগামী বিধানসভা নির্বাচনে আদিবাসী সম্প্রদায়ের কাছে তুলে ধরতেই এই কৌশল নিয়েছে বাংলার শাসকদল।

Advertisement
আরও পড়ুন