PM Narendra Modi

মোদী রাজ্যে পা রাখার ৪ ঘণ্টা আগেই গোলাবর্ষণ শুরু করল তৃণমূল, প্রধানমন্ত্রীর দিকে ৫ প্রশ্ন ছুড়ে জবাব চাইল বাংলার শাসকদল

দমদম কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার সংলগ্ন মাঠের সভা থেকে মোদী তৃণমূলের প্রশ্নের জবাব দেবেন কি না, তা কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই স্পষ্ট হবে। তবে, মোদী যে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সুর আরও চড়া করবেন তার ইঙ্গিত তিনি দিয়ে রেখেছেন বৃহস্পতিবারই।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০২৫ ১৪:৪৪
TMC raises 5 questions for PM Narendra Modi 4 hours before he arrives in West Bengal

(বাঁ দিকে) নরেন্দ্র মোদী, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

সম্প্রসারিত কলকাতা মেট্রোর নতুন তিন রুটের উদ্বোধন এবং রাজনৈতিক সভা করতে শুক্রবার বিকেল ৪টে নাগাদ দমদম বিমানবন্দরে পৌঁছোনোর কথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। পশ্চিমবঙ্গে পা রাখার চার ঘণ্টা আগেই মোদীর উদ্দেশে প্রশ্নের গোলাবর্ষণ শুরু করল তৃণমূল।

Advertisement

বঙ্গের শাসকদল পাঁচটি প্রশ্নের জবাব চেয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কাছে। মোদীর উদ্দেশে তৃণমূলের প্রথম প্রশ্ন, কোন নৈতিকতার ভিত্তিতে ১৩০তম সংবিধান সংশোধন বিল আনা হয়েছে? এই প্রসঙ্গেই তৃণমূল মনে করিয়ে দিতে চেয়েছে, শেষ ১০ বছরে প্রায় ৬ হাজার মামলার তদন্ত করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি। কিন্তু তার মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি করে দোষী সাব্যস্ত করতে পেরেছে মাত্র ৮টি ক্ষেত্রে। এ-ও মনে করিয়েছে, বিজেপি-র ২৪০ জন সাংসদের মধ্যে ৯৪ জনের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা রয়েছে। তার মধ্যে ৬৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গুরুতর। উল্লেখ্য, ১৩০তম সংবিধান সংশোধন বিলে প্রস্তাব রাখা হয়েছে, কোনও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, মন্ত্রী বা কোনও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী যদি কোনও মামলায় ৩০ দিনের বেশি হেফাজতে থাকেন, তা হলে তাঁর মন্ত্রিত্ব খোয়া যাবে। যা নিয়ে জাতীয় রাজনীতি গত কয়েক দিন ধরেই উত্তাল। বিরোধীদের বক্তব্য, ইডি, সিবিআই-কে ব্যবহার করে পিছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতা দখলের লক্ষ্যেই এই বিল এনেছে বিজেপি।

মোদীর উদ্দেশে তৃণমূলের দ্বিতীয় প্রশ্ন, ভুয়ো ভোটারে ভর্তি থাকা তালিকায় যদি ২০২৪ সালের লোকসভা ভোট হয়ে থাকে, তা হলে তাঁর প্রধানমন্ত্রী থাকার অধিকার আছে কি না। কেন লোকসভা ভেঙে দেওয়া হবে না? কেন গোটা কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা ইস্তফা দেবে না?

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তৃণমূলের তৃতীয় প্রশ্নবাণে লেখা হয়েছে, ‘দিল্লি পুলিশ বাংলা ভাষাকে বলেছে বাংলাদেশি ভাষা। আপনার দলের নেতা বলছেন, বাংলা কোনও ভাষাই নয়। আপনার কি মনে হয় না যে, এর ফলে জাতীয় সঙ্গীত এবং জাতীয় গানের অবমাননা হয়েছে?’

চতুর্থত, কেন বিজেপিশাসিত রাজ্যে বাঙালিদের হেনস্থা হতে হচ্ছে, সেই প্রশ্নও তুলেছে তৃণমূল। শেষ তথা পঞ্চম প্রশ্নে প্রত্যাশিত ভাবেই রয়েছে ‘কেন্দ্রের বঞ্চনা’র প্রসঙ্গ। আবাস যোজনা, সড়ক যোজনা, ১০০ দিনের কাজের মতো কেন্দ্রীয় প্রকল্পে বাংলার যে ১.৯৩ লক্ষ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে, তা কবে দেওয়া হবে, সেই প্রশ্ন ফের তোলা হয়েছে তৃণমূলের তরফে।

শুক্রবার বেলা ১২টা বাজার আগেই সমাজমাধ্যমে এই পাঁচ প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল। মোদীকে ফের ‘ভোটের পরিযায়ী পাখি’ বলে কটাক্ষ করেছে বাংলার শাসকদল। সেই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে লেখা হয়েছে, ‘দুঃখিত মোদী, বাংলা আপনার নাটকের মঞ্চ নয়। সাহস থাকলে এই প্রশ্নগুলির জবাব দিয়ে যান। যা প্রত্যেক বাঙালির প্রশ্ন।’

দমদম কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার সংলগ্ন মাঠের সভা থেকে মোদী তৃণমূলের প্রশ্নের জবাব দেবেন কি না, তা কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই স্পষ্ট হবে। তবে, মোদী যে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সুর আরও চড়া করবেন তার ইঙ্গিত তিনি দিয়ে রেখেছেন বৃহস্পতিবারই। রাজ্যে আসার আগের দিন মোদী তাঁর এক্স হ্যান্ডলে লিখেছিলেন, ‘কলকাতার জনসভায় পশ্চিমবঙ্গের বিজেপির কর্মীদের মধ্যে উপস্থিত হতে আমি উদ্‌গ্রীব। প্রতি দিন তৃণমূলের বিরুদ্ধে জনতার আক্রোশ বাড়ছে। বিজেপির উন্নয়ন নীতির কারণে পশ্চিমবঙ্গ এখন বিজেপির দিকে আশা নিয়ে তাকিয়ে আছে।’ দমদমের সভা থেকে মোদী যা যা বলবেন, তার পাল্টা বক্তব্য নিয়ে ফের ময়দানে নামারও প্রস্তুতি রাখছে তৃণমূল।

Advertisement
আরও পড়ুন