High Court

বীরভূমে মা-মেয়েকে খুনের মামলায় ‘সাধুবাবার’ মৃত্যুদণ্ড রদ হাই কোর্টে, যাবজ্জীবন দিয়ে আদালত বলল, ‘বিরলের মধ্যে বিরলতম ঘটনা নয়’

২০২০ সালের ১৭ মে মল্লারপুরের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় খাদ্য দফতরের মহিলা কর্মী এবং তাঁর ১৭ বছরের মেয়ের দেহ। মেয়ের শরীরে পুরনো পোড়া দাগ সারানোর নাম করে অভিযুক্ত সুনীল দাস প্রায় ১.৬১ লক্ষ টাকা নেন বলে অভিযোগ। যজ্ঞ করার নাম করে কাজুবাদাম বাটায় ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে মা-মেয়েকে খাইয়ে অচেতন করে দেন ‘সাধুবাবা’। এরপর প্রথমে মেয়েকে ধর্ষণের চেষ্টা এবং পরে মা-মেয়েকে খুন করার অভিযোগ ওঠে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২১:৩২
Trial court gave death sentence to accused in Birbhum murder of mother and daughter, high court rejected and gave life imprisonment

—প্রতীকী চিত্র।

বীরভূমের মল্লারপুরে মা ও মেয়েকে খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত সুনীল দাস ওরফে হরিচরণ দাস ওরফে ‘সাধুবাবা’কে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল নিম্ন আদালত। বৃহস্পতি বার কলকাতা হাই কোর্ট সেই মৃত্যুদণ্ডের সাজা রদ করে ‘সাধুবাবা’কে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দিল। বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রশিদির ডিভিশন এই বেঞ্চ রায় ঘোষণা করেছে।

Advertisement

২০২০ সালের ১৭ মে মল্লারপুরের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় খাদ্য দফতরের মহিলা কর্মী এবং তাঁর ১৭ বছরের মেয়ের দেহ। মেয়ের শরীরে পুরনো পোড়া দাগ সারানোর নাম করে অভিযুক্ত সুনীল দাস প্রায় ১.৬১ লক্ষ টাকা নেন বলে অভিযোগ। যজ্ঞ করার নাম করে কাজুবাদাম বাটায় ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে মা-মেয়েকে খাইয়ে অচেতন করে দেন ‘সাধুবাবা’। এরপর প্রথমে মেয়েকে ধর্ষণের চেষ্টা এবং পরে মা-মেয়েকে খুন করার অভিযোগ ওঠে।

প্রাথমিক ভাবে সন্দেহের তালিকায় ছিলেন স্বামী মিলন মণ্ডল। তাঁকে গ্রেফতারও করে পুলিশ। কিন্তু পরবর্তী তদন্তে মিলনের বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণ মেলেনি। পরে চার্জশিট দেওয়া হয় ‘সাধুবাবা’ ও তাঁর সঙ্গিনী কাকলি পাত্রের বিরুদ্ধে। কাকলিকে খালাস দিলেও ‘সাধুবাবা’কে দোষী সাব্যস্ত করা হয় পাঁচ বছর আগের ওই ঘটনায়।

আদালত তার পর্যবেক্ষণে বলেছে, ডাক্তারি রিপোর্টে প্রমাণিত, মা-মেয়ের মৃত্যু হয়েছে শ্বাসরোধ ও মুখ বেঁধে রাখার কারণে। তাই খুনের অভিযোগ প্রমাণিত। ঘটনার প্রমাণ নষ্ট করার চেষ্টাও ধরা পড়েছে তদন্তে। মা-মেয়ের ময়নাতদন্তের রিপোর্টে যৌন নির্যাতন বা ধর্ষণের কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। ফলে এই অভিযোগ খারিজ করে দেয় আদালত। হাই কোর্টের চূড়ান্ত রায়ে ধর্ষণের অভিযোগ খারিজ হলেও খুন ও প্রমাণ লোপাটের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। দুই বিচারপতির বেঞ্চ বলেছে, অপরাধ জঘন্য হলেও এটি বিরলের মধ্যে বিরলতম ঘটনা নয়। তাই মৃত্যুদণ্ড বাতিল করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

Advertisement
আরও পড়ুন